সিসিক নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ৪১ নেতাকে কেন্দ্রীয় বিএনপির শোকজ

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুন ০৪ ২০২৩, ০০:০২

দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় দলের সাবেক ও বর্তমান ৪১ জন নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিএনপি। এদের মধ্যে একজন মেয়র প্রার্থী এবং ৪০ জন কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন।

আজ শনিবার (৩ জুন) সন্ধ্যায় কারণ দর্শানোর নোটিশ কেন্দ্র থেকে পাঠানো হয়।

দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানো নোটিশে বলা হয়, ‘বিগত ১৫ বছর ধরে অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপিসহ দেশপ্রেমিক জনগণ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবীতে আন্দোলন করে আসছে। জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে এদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর যাবৎ কারাভোগ করছেন। নিপীড়ক সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা, নির্যাতন এবং প্রায় ৫০ (পঞ্চাশ) লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রতিনিয়ত হয়রানি করছে। ইতিমধ্যে আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে গুম করে রাখা হয়েছে। এ অবস্থায়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি এই অবৈধ সরকারের অধীনে কোন প্রকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। অথচ আপনি দলের একজন সদস্য হয়ে ব্যক্তিস্বার্থ চিন্তা করে এই সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করেছেন। সুতরাং কেন আপনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার কারণ দর্শিয়ে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে একটি লিখিত জবাব দলের কেন্দ্রীয় দফতরে জমা দেওয়ার জন্য আপনাকে নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

নোটিশপ্রাপ্তরা হলেন মেয়র পদ প্রার্থী ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সালাউদ্দিন রিমন। সিসিকের বর্তমান পরিষদের কাউন্সিলের দায়িত্ব পালনকারীদের মধ্যে নির্বাচনে অংশ নেওয়া সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ তৌফিকুল হাদি (১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর), সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ফরহাদ চৌধুরী শামীম (৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর), ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য নজরুল ইসলাম মুনিম (১৪নং কাউন্সিল ), বিএনপির সদস্য এবিএম জিল্লুর রহমান উজ্জল (১৮নং ওয়ার্ড), সিলেট মহানগর মহিলা দলের সভাপতি অ্যাডভোকেট রুকশানা বেগম শাহনাজ (সংরক্ষিত ৯নং ওয়ার্ড)।

সিসিক নির্বাচনে এবার প্রথম প্রার্থী হওয়া সিলেট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন, সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক উসমান হারুন পনির, সিলেট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা গোলাম মোস্তফা কামাল, গউছ উদ্দিন পাখি, সিলেট জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন নাদিম, ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মুফতি কমর উদ্দিন কামু, ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান মিঠু, ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক আহবায়ক মো. কামাল মিয়া, ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য খালেদ আকবর চৌধুরী, আমিনুর রহমান খোকন, শাহেদ সিরাজ, ১০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান জুবের, ১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য আব্দুর রহিম মতছির, ১৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মুজিবুর রহমান, সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সালমান চৌধুরী শাম্মী, ২৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি মামুনুর রহমান মামুন, এমসি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বদরুল আজাদ রানা, ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য হুমায়ুন কবির সুহিন, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি সেলিম আহমদ রনি, সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আব্বাস, বরইকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সহসাধারণ সম্পাদক জাবেদ আমিন সেলিম, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক রাজু মিয়া, বরইকান্দি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি সানর মিয়া, টুলটিকর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল মুকিত, সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সাবেক আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট হেদায়েত হোসেন তানবীর, সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য দুলাল আহমদ, সিলেট জেলা বিএনপি নেতা দেলওয়ার হোসেন জয়, সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সহসভাপতি আব্দুল হাছিব, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সহক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক সুমন আহমদ সিকদার, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপি নেতা সাহেদ খান স্বপন, বরইকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক নেতা নুরুল ইসলাম মাসুম।

এছাড়াও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে নোটিশপ্রাপ্তরা হয়েছেন- সিলেট জেলা মহিলা দলের সভাপতি সালেহা কবির শেপী, সিলেট মহানগর মহিলা দলের সহসভাপতি রুহেনা বেগম মুক্তা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, সিলেট ইউনিটের সদস্য অ্যাডভোকেট জহুরা জেসমিন, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি কামরুন নাহার তান্নি।

আজ রাত সাড়ে ১০টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘দলের নির্দেশ অমান্য করে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৪১ জনকে কেন্দ্র থেকে শোকজ করা হয়েছে। তাদের আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।’