২৮ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে ইশা ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের বিশাল শোডাউন

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

আগস্ট ৩০ ২০১৯, ২০:৪৪

অদ্য ৩০ আগস্ট ২০১৯ ইংরেজি রোজ শুক্রবার ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের ২৮ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে চট্টগ্রাম মহানগর-এর উদ্যোগে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন শাখা সভাপতি রিদওয়ানুল হক শামসী।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এবং চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আলহাজ্ব জান্নাতুল ইসলাম আর প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুজ জাহের আরেফী।

সবাইকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানিয়ে সভাপতির উদ্ভোধনী বক্তব্যে রিদওয়ানুল হক শামসী বলেন, “গত শতকের ৯০ এর দশকের প্রথমভাগে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন -এর জন্ম। স্বাধীনতার দুই দশকে তৈরী হওয়া ধ্বংসোম্মুখ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক পরিস্থিতি বদলাতে এবং ছাত্র রাজনীতির চূড়ান্ত অবক্ষয় রোধে আশির্বাদস্বরূপ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো ইশা ছাত্র আন্দোলন।”

কাশ্মীর ইস্যুতে সরকারের অবস্থানের কঠোর সমালোচনা করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আলহাজ্ব জান্নাতুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ গণহত্যার wkকার কাশ্মীরি মুসলমানদের পক্ষে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্ব মোড়লরা যে ভূমিকা পালন করছে তা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুইনয়। অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে হবে।’

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “ছাত্র আন্দোলন কে সবসময় সাম্রাজ্যবাদী কালোশক্তির বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে। দেশে দূর্নীতি আর বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি চলছে তা কোন সভ্য দেশে কল্পনাই করা যায় না। ক্ষমতাসীনদের দৌরাত্ম্য দেশের শান্তিকামী মানুষকে ভীতসন্ত্রস্ত করে তুলছে। সরকার যদি অবিলম্বে এর কোন বিহীত ব্যবস্থা না করে তাহলে সাধারণ মানুষদের নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ গণআন্দোলন গড়ে তুলবে।’

গত ২৮ বছর ধরে জাতীর ক্রান্তিলগ্নে ইশা ছাত্র আন্দোলন ত্রাণকর্তার ভূমিকা পালন করেছে উল্লেখ করে প্রধান বক্তা আব্দুজ জাহের আরেফী বলেন, “ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন সৎ, যোগ্য ও আল্লাহভীরু নেতৃত্ব তৈরির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ‘উন্নয়ন, সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলাম-ই একমাত্র সমাধান’ এই প্রতিপাদ্যকে বুকে ধারণ করে সংগঠনটি দেশের ত্রি-ধারার শিক্ষার্থীদের মাঝে জনপ্রিয়তার সাথে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। মুক্তিকামী সচেতন শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা এমন একটি কাফেলা গড়ে তুলতে চাই, যারা নৈতিকতার প্রশ্নে ঘুমন্ত ছাত্রসমাজের বিবেক জাগ্রত করার মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য কাজ করবে।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মুফতি দেলোয়ার হোসাইন সাকী বলেন, বাংলাদেশ আজ খুবই ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে জনগণ যে আশা নিয়ে অংশ নিয়েছিল তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। স্বাধীনতার পর যারাই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গিয়েছে, তারাই জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছে। প্রশাসনের সর্বস্তরে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অনৈতিকতা চরম পর্যায়ে পৌছেছে। সরকার রাষ্ট্রের মালিক জনগণের পরিবর্তে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের উপর নির্ভর করছে। জনগণের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার আজ চূড়ান্তভাবে অবহেলিত। দেশের এরূপ পরিস্থিতিতে ছাত্র আন্দোলনকে এগিয়ে এসে জাতির এই ক্রান্তিকাল থেকে মুক্ত করতে হবে।

এতে আরো বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরের জয়েন্ট সেক্রেটারি ডা. রেজাউল করিম রেজা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরের ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা কামাল উদ্দীন সাকী, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি মাও. দিদারুল মাওলা, ইসলামী যুব আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি তাজুল ইসলাম শাহীন, সাবেক সভাপতি ও ইসলামী লবণ চাষী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান।

আরও উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের সহ-সভাপতি মুহাম্মদ আসহাব উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ নাজিম উদ্দীন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মুহাম্মদ তানভীর হোসাইন, অর্থ সম্পাদক মনির হোসাইন, দপ্তর সম্পাদক মুহাম্মদ ওয়াহিদুর রহমান সহ মহানগর ও থানা শাখার বিভিন্ন স্থরের সাবেক ও বর্তমান দায়িত্বশীলবৃন্দ।

আলোচনা পর্ব শেষে বিশাল র‍্যালী শহীদ মিনার চত্বর থেকে নিউমার্কেট-কোতোয়ালি মোড়-আন্দরকিল্লা হয়ে প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হয়।

অন্যদিকে বাইসাইকেল র‍্যালী নগরীর আগ্রাবাদ হতে দেওয়ানহাট-বহদ্দারহাট- ফ্লাইওভার হয়ে শহীদ মিনারে সমাবেশস্থলে মিলিত হয়।