সিলেটের বিশ্বনাথে ওরশের নামে অশ্লীলতা- আল্টিমেটাম তাওহিদী জনতার

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

ফেব্রুয়ারি ০২ ২০২০, ২৩:১৯

বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নের কালিগঞ্জ বাজারের দোপাখোলা গ্রামের চমক আলী, ওরফে (চমক শাহ) নামে বার্ষিক ওরশ মাহফিলের ঘোষণা দিয়েছে কিছু মাজার ব্যবসায়ীরা।

এর প্রতিবাদে গতকাল ১ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় কালিগঞ্জবাজারে মিছিল ও সমাবেশ করে কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল এলাকার মুসলিম জনতা। তাদের ১২ ঘন্টার আল্টিমেটামে উল্লেখ ছিল, ভণ্ড চমক আলী (তথাকথিত চমক শাহ) এর বাড়িতে ওরশ নামের অশ্লীলতা বন্ধ না করলে তার বাড়িঘরসহ তাকে এলাকা থেকে অবাঞ্চিত করাসহ বড় ধরনের পদক্ষেপ নিতে স্থানীয় মুসলিম জনতা সোচ্চার।

সমাবেশে এলাকার সকল ইসলামী প্রতিষ্ঠান এবং সর্বস্তরের মানুষ ভণ্ডপীরের ওরশ বন্ধের দাবী জানান। এজন্য রাতেই থানা পুলিশের সহযোগিতার পাশাপাশি তারা সমাজের অপকর্ম দূর করার লক্ষ্যে যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত আছেন বলেও ঘোষণা প্রদান করা হয় বিক্ষোভ সমাবেশে।

প্রতিবাদ সভা শেষে রাতেই বিশ্বনাথ থানার (ওসি) শামীম মূসা’র বরাবরে স্বারকলিপি দেওয়া হয় এবং ২ ফেব্রুয়ারি সকালে বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়া ও বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে এবং জেলা পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন বরাবরে স্বারকলিপি দেওয়া হয়।

জানা যায়, স্বারকলিপি দেওয়ার পর থেকে এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়দের মতে ওরশের নামে অশ্লীলতা বন্ধ না হলে রাতেই ঘটতে পারে বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।

পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী স্থানীয়রা মাইকিং করে স্থানীয় মুসলিম জনতা সবাইকে প্রতিবাদের জড়ো হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এ নিয়ে এলাকায় বিরাজ করছে থমথমে অবস্থা।

এ ব্যাপারে স্থানীয় কালীগঞ্জবাজার জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা ওবায়েদুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যদি ওরশ নামের অশ্লীল এবং বেহায়াপনা কাজ দোপাখোলা গ্রামে অনুষ্ঠিত হয় তাহলে যে কোন ধরনের সংঘর্ষের সৃষ্টি হতে পারে। কেননা মুসলিম জনতার স্রোত কারো পক্ষে থামানো সম্ভব নয়।

তিনি আরো বলেন, তার মতো কিছু ভণ্ড কিছু রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠছে এবং ওরশসহ নাচ-গানের অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছে। তার পাশেই দুটি মাদ্রাসা এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ মসজিদ রয়েছে। ঈমানী দায়িত্ব হিসাবে, ধর্মপ্রাণ তৌহিদী জনতা এ ধরনের ভণ্ডপীরের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে তার মাজার উচ্ছেদ করা হবে।

এ ব্যাপারে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামীম মূসা বলেন, ধোপাখোরা এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এখানে ওরশ হবে, তবে গান বাজনা হবে না বলে তিনি জানান।

এদিকে আজ বিকাল ৫টা থেকে কালিগঞ্জবাজারে প্রতিবাদ সভা ও মিছিল হয়েছে। প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন কালিগঞ্জবাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি হাজী আব্দুর রাজ্জাক। তরুণ সংগঠক রাসেল আহমদের পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল মুমিন, কালীগঞ্জ বাজার মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুর সত্তার, উপজেলা আল-ইসলাহ সাধারণ সম্পাদক আবদুল কুদ্দুস, আল ইরশাদ লতিফিয়া মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আব্দুল মুমিন, কালিগঞ্জ বাজার ইসলামী জনকল্যাণ সংস্থার সভাপতি ওবায়দুল হক, মাও. তোফায়েল আহমদ, মাও. হাবিবুর রহমান, হা. রাসেল শিকদার, মাও. হাসান বিন আব্দুল মুমিন, মাও. কাজী আব্দুল ওয়াদুদ, মাও. আব্দুল মতিন, মাও. ওয়ারিছ উদ্দীন, ফয়জুল ইসলাম, মাও. আকমল হোসাইন, আনহার আলী, আজাদুল ইসলাম, মাও. রাসেল শিকদার, মাও. তোফায়েল আহমদ হাফিজ প্রমুখ।