বাসন্তী চাকমার বক্তব্য প্রত্যহার ও ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে সচেতন পার্বত্যবাসীর সংবাদ সম্মেলন

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

মার্চ ০২ ২০১৯, ১৩:৩৬

ইমাম হোসাইন কুতুবী: খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা থেকে ৩৩৩নং আসনের সংরক্ষিত মহিলা এমপি বাসন্তী চাকমা গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ চলাকালীন বক্তব্য প্রদানের এক পর্যায়ে দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে ন্যাক্কারজনক বক্তব্য এবং পাশাপাশি পার্বত্য জেলায় বসবাসরত সকল বাঙ্গালীকে হেয় প্রতিপন্ন করায় পার্বত্যবাসীর মধ্যে যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে তা প্রশমিত করার জন্য অতিদ্রুত জাতীয় সংসদের কার্যবিবরণী থেকে মিথ্যাচার বক্তব্যটি মুছে ফেলার দাবি জানিয়েছে সচেতন পার্বত্যবাসী।

শনিবার (২ মার্চ) সকালে রাঙ্গামাটি শহরের একটি রেস্টুরেন্টে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি বাসন্তী চাকমা জাতীয় সংসদে উগ্র-সাম্প্রদায়িক ও রাষ্ট্র বিরোধী বক্তব্য দেওয়ার প্রতিবাদে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই দাবি করা হয়।

এসময় সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সচেতন পার্বত্যবাসী কমিটির আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম মুন্না, সচেতন পার্বত্যবাসীর নেতা জাহাঙ্গীর কামাল, রূপকুমার চাকমা, কাজী মো. জালোয়া, পল্লব দেওয়ান, জাহাঙ্গীর আলম, মো. হাবিবুর রহমান, নাজিম আল হাসান প্রমুখ।

সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করে অভিযোগ করা হয়েছে, সাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা বাংলাদেশের দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে ন্যাক্কারজনক যে বক্তব্য দিয়েছেন তা ১৬ কোটি মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিসহ মূল চেতনায় আঘাত করেছেন এবং রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান তিন পার্বত্য জেলায় বসবাসরত সকল বাঙ্গালীকে হেয় প্রতিপন্ন করায় পার্বত্যবাসীর মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে, সেনাবাহিনী বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন দুর্যোগ, অবকাঠামো উন্নয়নসহ বাংলাদেশের গণতন্ত্র রক্ষায় দৃঢ়তার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর থেকে তিন পার্বত্য জেলার স্থীতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে অদ্যাবধি কাজ করে যাচ্ছে। সেই সাথে সন্ত্রাস দমন, জনগণের নিরাপত্তাসহ অবকাঠামো উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করছেন। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও পার্বত্য এলাকার বসবাসরত বাঙ্গালীদের উপর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা না লাগানোর জন্য আহ্বানও জানানো হয়েছে সাংবাদিক সম্মেলনে।

সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরো অভিযোগ করা হয়েছে, এমন একজন প্রার্থী বাছাই করা হলো, যিনি পূর্বে আঞ্চলিক রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলো স্বল্প সময়ে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। সংরক্ষিত আসন ৩৩৩ নং আসনে নির্বাচিত হওয়ার পরও বর্তমান অসম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। তিনি সংসদে বক্তব্যে বলেছেন, আমি কাউকে ছোট করতে চাইনা, আবার বলেন, ১৯৯৬ সালে ১ মে শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও তৎকালীন বহিরাগতরা মিলে ‘আল্লাহ আকবর’ বলে খাগড়াছড়ি উপজেলার পানছড়ি ব্রীজের উপর একজন একজন করে পাহাড়িদের জবাই করেছিল। এই ন্যাক্কার জনক মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য পার্বত্য এলাকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে আঘাত করায় অবিলম্বে জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে এবং স্পীকারকে এই মিথ্যাচার বক্তব্য সংসদের কার্যবিবরণী হতে মুছে ফেলতে অনুরোধ করা হয়। তা না হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের দেশপ্রেমিক নাগরিকরা ঐক্যবদ্ধভাবে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি প্রদান করা হয় সাংবাদিক সম্মেলনে।

সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি বাসন্তী চাকমা জাতীয় সংসদে উগ্র-সাম্প্রদায়িক ও রাষ্ট্র বিরোধী বক্তব্য দেওয়ার প্রতিবাদে আগামীকাল মানববন্ধনেরও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।