শহিদদের সম্মানে ৪৮কিলোমিটার পদযাত্রা

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

ডিসেম্বর ১৫ ২০১৮, ০৭:১৪

মুক্তিযুদ্ধের শহীদ এবং শরনার্থীদের সম্মানে শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবসে সিলেটের একদল সাইক্লিস্ট পদব্রজে শ্রদ্ধা নিবেদনের এক অনন্য উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছে।সিলেটের অন্যতম সাইক্লিং গ্রুপ ” সাইকেল ট্রাভেলারস অব সিলেট” এর আয়োজনে ”মুক্তিযুদ্ধের জন্য একদিন” শিরোনামে আয়োজিত এই পদব্রজ যাত্রায় মোট ১৭ জন সাইক্লিস্ট ৪৮ কিলোমিটার পথ হেটে অতিক্রম করেছেন।

বিজয়ের ৪৮ বছর পূর্তী উদযাপন সাথে লাখো লাখো শরনার্থীদের সম্মান প্রদর্শনের এই পদযাত্রার পথিমধ্যে তারা সিলেটের বুদ্ধিজীবি সমাধিস্থল, খাদিমনগর চা বাগানের গনহত্যাস্থল সহ পাঁচটি যায়গায় মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করেন।

১৭ জনের এই দলটিতে স্কুলগামী বালক থেকে শুরু করে ষাটোর্ধ্ব বয়সী সাইক্লিস্টও ছিলেন। দলটি ভোর ৫.৩০ মিনিটে যাত্রা শুরু করে প্রথমে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে বুদ্ধিজীবী সমাধিস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পন করে একে একে পদব্রজে খাদিম চা বাগানে গণহত্যার স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনার সহ সিলেট তামাবীল রোডের সর্বমোট ৫টি সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং জৈন্তাপুর বাজার শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয় ।ফুল দিয়ে শ্রদ্ধানিবেদনের পাশাপাশি তারা সমাধিস্থল ও স্মৃতিস্তম্ভের আশপাশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করেন।অবহেলায় পড়ে থাকা স্মৃতি স্তম্ভ এবং গণহত্যার স্থানগুলোর মর্যাদা রক্ষা করতে সংগঠনটির এ প্রয়াস এলাকার মানুষকে উদ্বুদ্ধ করবে বলেই প্রত্যাশা করছেন তারা।সাইকেল ট্রাভেলারস অব সিলেট এর এই পদযাত্রার অন্যতম আয়োজক সুকান্ত দেব জানান,সংগঠনটি দিবসকেন্দ্রিক আয়োজনে বিশ্বাসী নয়।আমরা পর্যায়ক্রমে সিলেট বিভাগের অন্যান্য গনহত্যাস্থলের অজানা ইতিহাস, অযত্ম-অবহেলায় পড়ে থাকা সমাধিগুলোর খোঁজ সবাইকে জানাতে চাই যাতে সবাই শহীদদের আত্মত্যাগের কথা অনুভব করে দেশকে ভালোবাসতে পারে। আর কোন প্রজন্ম যাতে মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাঁথা ছাড়া বেড়ে না উঠে।

এই বিশাল পদযাত্রায় অংশগ্রহন ও সুষ্ঠ সুন্দরভাবে শেষ করতে পেরে সবাই খুব আনন্দিত। তাদেরই একজন সাইক্লিস্ট কাজি সাহি জানান, ফেসবুকে ‘মুক্তিযুদ্ধের জন্য একদিন’ এই শিরোনাম ইভেন্ট দেখার পর এই আয়োজনের অংশ নেবার জন্য মুখিয়ে ছিলাম। দীর্ঘ নয় মাসব্যাপী এই স্বাধীনতা সংগ্রামের কতটুকুইবা জানি? স্বাধীনতা সংগ্রামের অংশ হতে না পারি, বিজয়ের অংশতো তো হয়েছি। বিজয়ের জন্য এই ত্যাগের গল্পগুলো তো আমাদেরকেই খুজে বের করতে হবে, আমাদেরকেই তা ছড়িয়ে দিতে হবে সারা দেশে, সারা বিশ্বে। বিজয়ের গল্প ছড়িয়ে দেয়ার এই গল্পের শুরুটা আবার না হয় নতুন করে শুরু করলাম।