লন্ডনে বসে নাটাই ঘোরাচ্ছে.তাকে ধরে এনে বাংলাদেশের মাটিতে বিচার করব -শেখ হাসিনা

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

ডিসেম্বর ২২ ২০১৮, ১২:০৬

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘তারেককে ধরে এনে বাংলাদেশের মাটিতে বিচার করব।’ শনিবার বিকাল ৪টায় সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে নির্বাচনী জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়েছে তারেক জিয়া। সে এখন বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। লন্ডনে বসে নাটাই ঘোরাচ্ছে। তাকে ধরে এনে বাংলাদেশের মাটিতে বিচার করব।’

আওয়ামী লীগ দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় এলে উন্নয়ন হয়, জনগণের কল্যাণ হয়, আওয়ামী লীগ জনগণের সেবা করে। এবার ক্ষমতায় গেলে আগামী ২০২১ সালের মধ্যে প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হবে’ ।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের ভোটে আবারও নির্বাচিত হয়ে এলে দেশ থেকে দারিদ্র পুরোপুরি বিমোচন করার ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘আগামীতে যদি ক্ষমতায় আসতে পারি, তাহলে দারিদ্র বলে কিছু থাকবে না। সারাদেশের মতো সিলেট বিভাগের চার জেলায়- সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের উন্নয়নের জন্য অনেকগুলো প্রকল্প নিয়েছি। তরুণ প্রজন্মের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছি। আমরা প্রত্যেকটা মানুষের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি ।’

বিএনপিকে দুর্নীতিবাজ ও জঙ্গিদের পৃষ্টপোষক বলে আখ্যায়িত করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, বিএনপি জামায়াত ২০১৪ তে নির্বাচন ঠেকানোর নামে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়েছিল। তারা দুর্নীতি সন্ত্রাসবাদ ছাড়া কিছু বোঝে না। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে সন্ত্রাস ও দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম করেছে।

‘বিএনপি-জামায়াত যখন ক্ষমতায় ছিল, আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। এবারও নমিনেশন দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিটি আসনে ৪-৫ জনকে নমিনেশন দিয়েছে। এরপর টাকা নিয়ে, যে বেশি টাকা দিয়েছে, তাকে মনোনয়ন দিয়েছে। এনাম আহমেদ চৌধুরী আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। তাকে ধন্যবাদ জানাই।

তিনি কী বলেছেন, তিনি বলেছেন- টাকা দিলে মনোনয়ন দেয়, নাহলে মনোনয়ন নাই। লন্ডনে বসে একজন এসব করছে। একে কী রাজনীতি বলে! এসব করতে দেওয়া হবে না।’

সিলেটের যোগাযোগ উন্নয়ন করতে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা। বলেন, ঢাকা-সিলেট যোগাযোগে চার লেনের প্রকল্প গ্রহণ করেছি। দ্রুতই সে কাজ শুরু হবে।’

জনসভায় কারাবন্দি খালদা জিয়া সম্পর্কে বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আমরা মামলা দিইনি। দিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। আর সেই মামলায় তিনি আজ সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন।’

জনসভায় প্রধানমন্ত্রী সিলেট বিভাগের আওয়ামী লীগ ও মহাজোট মনোনীত প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন। তাদের জন্য ভোট চান।

বলেন, ‘গত জানুয়ারি মাসে আমি সিলেটে হযরত শাহ জালাল (রহ.) ও শাহ পরাণ (রহ.) মাজার জিয়ারত করে নির্বাচনী প্রচার শুরু করতে এসেছিলাম। আবার এ বিজয়ের মাসে এসেছি, আসন্ন নির্বাচনে আমাদের প্রার্থীদের জন্য নৌকা মার্কায় ভোট চাইতে।

নির্বাচনী প্রচারণার উদ্দেশ্যে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে সিলেট আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিমান বন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রধানমন্ত্রী হযরত শাহজালাল (রহ.), হযরত শাহপরান (রহ.) ও সিলেটের প্রথম মুসলিম গাজী বুরহান উদ্দিনের মাজার জিয়ারত করেন। মাজার জিয়ারত শেষে জোহরের নামাজ ও মধ্যাহ্নভোজের জন্য নগরীর সার্কিট হাউজে অবস্থান করেন তিনি। যান। এরপর সেখানে বিশ্রাম শেষে জনসভায় যোগ দেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে সকাল থেকে সমাবেশ স্থলে আসতে শুরু করে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

জয় বাংলা’, ‘নৌকা নৌকাসহ বিভিন্ন স্লোগানে রঙিন ব্যানার-ফেস্টুন, টি-শার্ট আর বিভিন্ন আকারের নৌকা নিয়ে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মিলিত হন জনসভাস্থলে।