ঢাকায় মগবাজার কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল রিসার্চ একাডেমী ফর মেডিকেল ফিক্বহ এন্ড ইসলামিক ট্রিটমেন্ট- র‍্যামফিট আয়োজিত সেমিনার, “রোযার আধুনিক বিধিবিধান”।আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল শিরাপথে গ্লুকোজ স্যালাইন বা রক্ত নিলে রোযা ভেংগে যায় কিনা। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, ডাঃ মুফতি ইসমাইল হোসেন, শারীয়া উপদেষ্টা, র‍্যামফিট; ডাঃ শরিফুল ইসলাম, প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, র‍্যামফিট। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাঃ আশরাফুল আলম, চীফ একাডেমিক কো- অর্ডিনেটর, র‍্যামফিট।

পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। তিলাওয়াত করেন হাফিজ এইচ এম মুতাসিম বিল্লাহ। এরপর সভায় বক্তব্য রাখেন

ডাঃ মুফতি ইসমাইল হোসেন, তিনি চিকিৎসা পেশা সংক্রান্ত ইসলামি বিধিবিধান প্রত্যেক ডাক্তারের জন্য জানার গুরুত্ব উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ইমাম ইবনে আবেদীন শামী (রা) বলেছেন, প্রত্যেক পেশাজীবীর জন্য তার পেশা সংক্রান্ত ইসলামি বিধান জানা ফরযে আইন যাতে করে সে হালাল হারাম থেকে অনায়াসে বেঁচে থাকতে পারে”। উমার (রা) বলেন, “তোমাদের মাঝে কেউ যেন ব্যাবসার ইসলামি বিধি বিধান না জেনে আমাদের বাজারে কেনা বেচা করতে না আসে। তা না হলে সে অভিশপ্ত রিবায় জড়িয়ে পড়তে পারে।”

ডাঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসা পেশা সংক্রান্ত ইসলামি বিধি বিধানের অনেক কিছুই পূর্বের যুগের বিধি বিধান থেকে ভিন্ন। ইসলামি আইনের পরিভাষায় এমন জ্ঞাণকে ফিকহুন নাওয়াযিল বলা হয়। অংগ দেওয়া নেওয়া, লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়া, ব্রেইন ডেড রোগি থেকে অংগ নেওয়া যাবে কিনা, সারোগেসি, লিংগ পরিবর্তন ইত্যাদি। এ সমস্ত বিষয় আজ থেকে এক হাজার বছর পূর্বে ছিল না। চিকিৎসা বিদ্যার উন্নতির সাথে সাথে এ সমস্ত নতুন নতুন বিষয় ইসলামি বিশেষজ্ঞ (মুফতিদের) কাছে আসছে। এ সমস্ত বিষয় নিয়ে কাজ করার জন্য সারা বিশ্বে বিভিন্ন ইসলামিক প্রতিষ্ঠান আছে। যেমন, ইসলামিক মেডিকেল এসোসিয়েশন ফর নর্থ আমেরিকা- ইমানা, ব্রিটিশ ইসলামিক মেডিকেল এসোসিয়েশন- বিমা, মুসলিম ডক্টরস নেটওয়ার্ক ফর ইন্দোনেশিয়া- মুকিসি, ফেডারেশন অফ ইসলামিক মেডিকেল এসোসিয়েশন- ফিমা। এছাড়া এ বিষয়গুলো নিয়ে গবেষণা এবং সারা বিশ্বব্যাপী সেই জ্ঞানকে ছড়িয়ে দিতে লন্ডনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আল বালাঘ একাডেমি যার পরিচালক একজন ডাক্তার, মুফতি এবং দেওবন্দি মাসলাকের অনুসারি।

আমাদের বাংলাদেশেও এমন একটা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা থেকেই র‍্যামফিট এর যাত্রা শুরু। মুফতি নজরুল ইসলাম বলেন, সমন্বিত ফাতোয়া বোর্ড হওয়া জরুরী।

সভায় বক্তারা চিকিৎসকদের এবং সাধারণ মানুষদের রোজা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে চিকিৎসক সম্পর্কিত বিধিবিধান গুলোর ব্যাপারে সবার সচেতন হবার আহবান জানিয়েছেন।