রক্ত মাখা পোশাকেই নামাজ আদায় করলেন আহত মুসল্লিরা

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

মার্চ ১৫ ২০১৯, ০৯:০৪

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে অন্তত দুটি মসজিদে অজ্ঞাত বন্দুকধারী হামলা চালিয়েছে। এতে ৪৯ জন নিহত হয়েছেন বলে দেশটির পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এর আগে দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন জানান হামলায় ৪০ জন নিহত হয়েছেন।

নিহতদের মধ্যে ২ জন বাংলাদেশী রয়েছে বলে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে। এছাড়া হামলায় গুরুতর আহত হয়েছে ২০ জনের বেশি। আহতদের মধ্যেও ৫ বাংলাদেশী রয়েছে যাদের দুই জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে নারীসহ চারজনকে। এদিকে হামলার সময় আটকে পড়া দুজনকে পরে মসজিদের পাশের রাস্তায় নামাজ পড়তে দেখা গেছে।

নিউজিল্যান্ড ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম স্টাফ এক প্রতিবেদনে হামলার পরবর্তী মুহূর্তের একাধিক ছবি প্রকাশ করেছে। সেখানকার একটি ছবিতে দুই মুসলিম ব্যক্তিকে রক্তমাখা পোশাকে নামাজ পড়তে দেখে গেছে।

এদিকে হামলাকারীর কাছে একটি বড় বন্দুক ও কয়েকশ রাউন্ড গুলি ছিলো। তিনি গায়ে মিলিটারিদের মতো পোশাক পরে ছিলেন বলে জানিয়েছেন হামলার সময় আটকে পড়া এক ব্যক্তি।

প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘তিনি (বন্দুকধারী) ভিতরে ঢুকলেন এবং মসজিদের সবাইকে শ্যুট করা শুরু করলেন। তিনি আরও জানান, কমপক্ষে ৫০ বার গুলি ছুঁড়েছেন তিনি। তার সঙ্গে একাধিক ম্যাগজিন ছিলো। কয়েকশ রাউন্ড হতে পারে।

তিনি আরও জানান, হামলাকারী মাথায় হেলমেট থাকায় তার সম্পূর্ণ চেহারা দেখতে পারেননি তিনি।

হাতের রক্ত কাপড় দিয়ে আটকে তিনি আরও জানান, হামলার সময় মসজিদের একটি গ্লাস হাত দিয়ে ভেঙ্গে তিনি পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। এ সময় গ্লাসের সঙ্গে লেগে তার হাত কেটে যায়।

নিজের অভিজ্ঞতার কথা ব্যক্ত করতে গিয়ে ওই প্রত্যক্ষদর্শী আরও বলেন, ‘আমার জানালা ও দরজার গ্লাস ভেঙ্গে সবাইকে বের করতে হয়েছিলো। আমরা চেষ্টা করছিলাম, যেভাবেই হোক সবাইকে এই এলাকা থেকে দৌড়ে দূরে পাঠানোর। কিন্তু আমরা সবার জন্য দরজা খুলতে পারিনি।’

নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় সময় শুক্রবার দেড়টার দিকে মসজিদে হামলার ঘটনাটি ফেসবুকে লাইভও করেন অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা ২৮ বছর বয়সী ওই শ্বেতাঙ্গ হামলাকারী। ক্রাইস্টচার্চে ভিডিওটি অনলাইনে না ছড়াতে নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। ইতিমধ্যে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছে পুলিশ।

দেশটির পুলিশ কমিশনার মাইক পুশ বলেছেন, এই ঘটনায় চারজন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে। এরমধ্যে একজন নারী রয়েছে।

তবে আরো একজন বন্দুকধারী ‘সক্রিয়’ থাকতে পারে বলে সতর্ক করেছে পুলিশ।

আটক হামলাকারীদের একজন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক বলে নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন।

এছাড়া পরবর্তী নোটিশ না দেয়া পর্যন্ত সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে বের হতে এবং রাস্তায় নামতে নিষেধ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত স্কুলও বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।