মৌলভীবাজারে বন্যায় অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত, লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুলাই ১৫ ২০১৯, ১৭:৩২

এহসান বিন মুজাহির : মৌলভীবাজার জেলার কুশিয়ারা নদী, মনু ও ধলাই নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মৌলভীবাজার জেলার তিনটি উপজেলার আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার অর্ধশতাধিক গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। এতে লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা ধরণের সম্পদ, আসবাবপত্র এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

সোমবার মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সুত্রে জানা যায়-মনুর পানি বিপদসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারা ৫২ সেন্টিমিটার ও ধলাই ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মনুমুখ, খলিলপুর ও আখাইলকুড়া ইউনিয়নের ২১টি গ্রাম; রাজনগর উপজেলার ফতেহপুর ও উত্তরভাগ ইউনিয়নের ১৮টি গ্রাম; কমলগঞ্জ উপজেলার পৌরসভা, আদমপুর, ইসলামপুর ও রহিমপুর ইউনিয়নের প্রায় ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানি দ্রুতই বৃদ্ধি পাচ্ছে, আর এততে করে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন গ্রাম। এদিকে টানা ভারি বর্ষণে মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা, জুড়ি, কুলাউড়া এবং শ্রীমঙ্গলের নিম্নাঞ্চলে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন বিভিন্ন গ্রামের মানুষ।

ভারি বর্ষণ এবং বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় করে বন্যাদুর্গতের সেবার জন্য জেলাজুড়ে খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। এর মধ্যে মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় ছয়টি, কমলঞ্জে তিনটি ও রাজনগরে চারটি আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। তবে এর বাইরেও বন্যাদুর্গত মানুষ সংঘবদ্ধভাবে উঁচু স্থান ও বিভিন্ন স্কুল-মাদ্রাসায় আশ্রয় নিয়েছেন। ইতোমধ্যে বন্যাদুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের জন্য চার মেট্রিক টন চাল ও ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কমলগঞ্জ উপজেলার জন্য বরাদ্দ হয়েছে সাত মেট্রিক টন চাল ও ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং কুলাউড়া ও রাজনগরের জন্য আগাম ১০ হাজার মেট্রিক টন চাল ও ২০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ রয়েছে। তবে এসব ত্রাণ পর্যাপ্ত নয় বলে বানভাসীদের অভিযোগ। জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান বলেন-বন্যাকবলিত প্রত্যেক উপজেলায় ত্রাণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বন্যার্তদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন। বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে বাড়ানো হবে বরাদ্দ। ত্রাণ বরাদ্দ এবং পৌছানো বিষয়ে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিরুজ্জামান জানান, বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। যেসব এলাকায় ত্রাণ পৌঁছায়নি, সেসব এলাকায় দ্রুত ত্রাণ পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।