মেননের সংসদ সদস্য পদ বাতিল করে গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুন -আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

মার্চ ০৬ ২০১৯, ১৭:৩১

জার্নাল ডেস্ক: হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ও দারুল উলুম হাটহাজারীর মুঈনে মুহতামিম আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী আজ সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে সম্প্রতি জাতীয় সংসদে কওমী মাদরাসাকে বিষবৃক্ষের সাথে তুলনা, ইসলামী অনুশাসনকে “মোল্লাতন্ত্র”, খতমে নবুওয়ত অস্বীকারকারী অমুসলিম কাদিয়ানীদের পক্ষে দালালী, হেফাজতে ইসলাম ও দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় শীর্ষ আলেম শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীসহ আলেম সমাজ ও জাতীয় কবিকে কটাক্ষ করে পতিত বামনেতা রাশেদ খান মেননের দেয়া অশালীন, আক্রমণাত্মক ও উস্কানিমূলক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, সাবেকমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন সংসদে দাড়িয়ে ইসলামের মৌলিক আকীদা খতমে নবুওয়ত অস্বীকারকারী কাফের কাদিয়ানীদের পক্ষে উদ্দেশ্যপ্রনোদিত বক্তব্য রেখেছেন। কুরআন হাদীস ও শরীয়তের বিধান হলো যারা আকীদায়ে খতমে নবুওয়ত স্বীকার করেনা তারা কাফের ও অমুসলিম। আর যারা কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে অমুসলিম মনে করেনা তারাও কাফের। সারা বিশ্ব ও বাংলাদেশের ওলামায়ে কেরাম ও তাওহিদী জনতার ঐক্যমতের ভিত্তিতে তারা অমুসলিম। মেনন সাহেব কাদিয়ানীদের পক্ষে ওকালতি করে প্রমাণ করেছেন তিনিও এই কুফরী আকীদায় বিশ্বাসী। সুতরাং খতমে নবুয়ত অস্বীকারকারী মেনন মুসলমান হতে পারে না।
আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী বলেন, পৃথিবীর অধিকাংশ মুসলিম রাষ্ট্র কাদিয়ানীদেরকে অমুসলিম সংখ্যালঘু ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশে কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করা হলে তারা অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মতো নাগরিক অধিকার নিয়ে এ দেশে বসবাস করতে পারবে, তাতে কোন আপত্তি থাকবে না।

আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী বলেন, উপমহাদেশর ঐতিহ্যবাহী দ্বীনিধারা হলো কওমি মাদরাসার শিক্ষা। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনসহ ইসলাম ও দেশের সার্বভৌমত্ত্ব রক্ষা, মুসলমানদের ঈমান আকীদা সংরক্ষণ, জনগণের মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কওমী মাদরাসা ও আলেমসমাজের ত্যাগ ও অবদান ইতিহাসে চিরস্মরণীয়। কওমী শিক্ষার সাথে এদেশের আপামর জনসাধারণের গভীর সম্পর্ক। সরকারী সহযোগিতা ছাড়া দেশের লাখ লাখ ছাত্র-ছাত্রীদের ইসলামী শিক্ষা, নীতি নৈতিকথাসম্পন্ন আদর্শ নাগরিক তৈরী, এতিম অনাথ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সন্তানদের থাকা খাওয়া, চিকিৎসা এবং মানবতার সেবায় কাজ করছে আলেমসমাজ। ঘুষ, সুদ, দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত শান্তিময় সমাজ বিনির্মাণ কওমী মাদরাসা অনন্য নজীর স্থাপন করেছে। রাশেদ খান মেনন কওমি মাদরাসাকে ‘বিষবৃক্ষ’ বলে আলেম-উলামা, ছাত্র শিক্ষক ও তৌহিদী জনতার অন্তরে আঘাত করেছে। কওমি মাদরাসাকে বিষবৃক্ষের সাথে তুলনা করে তিনি সংবিধান লংঘণ করেছেন। জাতীয় সংসদকে অপমানিত করেছেন। তার বক্তব্য ইসলামী শিক্ষা, নাগরিক অধিকার ও রাষ্ট্রবিরোধী। দেশের সর্বোচ্চ ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব আমীরে হেফাজত আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে নিয়ে যে অশালীন, কুরুচিপূর্ণ ও ঔদ্ধত্যমূলক বক্তব্য দিয়েছে, এজন্য তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় তার আলেম ওলামা ও ধর্মবিদ্বেষের বিরুদ্ধে কঠিন কর্মসূচী দিয়ে সমুচিত জবাব দেয়া হবে।

আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী বলেন, হেফাজতে ইসলাম মুসলমানদের ঈমান-আকিদা রক্ষায় সর্ববৃহৎ ধর্মীয় সংগঠন। মহান আল্লাহ, মহানবী সা., সাহাবায়ে কেরামের শান-মান মর্যাদা রক্ষা, নাস্তিক্যবাদী ইসলামবিদ্বেষী অপশক্তি এবং বিশ্বব্যাপী ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ইহুদি খ্রিস্টান সা¤্রাজ্যবাদী, রাম-বাম গোষ্ঠীর মুকাবেলায় সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া। দেশি-বিদেশি কোন অপশক্তি ইসলামকে ফুৎকারে উড়িয়ে দেয়ার স্পর্ধা দেখালে দেশের তৌহিদী জনতাকে সাথে নিয়ে তা প্রতিরোধ করা। অথচ সংসদে তিনি হেফাজতের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে আলেমসমাজ ও ধর্মপ্রাণ জনগণকে বিক্ষুব্ধ কওে তুলেছেন।

তিনি আরো বলেন, মূলত কমিউনিষ্টরা এখন গণধিকৃত। তাদের সাথে দেশের গণমানুষের সম্পর্ক নেই। মন্ত্রীত্ব হারিয়ে মেনন ইনুরা বেসামাল হয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে ফায়দা লুটতে চায়। আমরা মনে করি, এরা বিদেশী অপশক্তির ক্রীড়নক হয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করতেই অপতৎপরতা চালাচ্ছে। এসব বক্তব্য দিয়ে ইসলামবিদ্বেষী গোষ্ঠীর কৃপা পেতে চায়।

আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী আল্লাহ, রাসূল, কুরআনের শিক্ষা এবং ইসলামকে অবমাননা করায় মেননকে গ্রেফতারপূর্বক শাস্তি প্রদানের জন্য সরকারের নিকট দাবি জানিয়ে বলেন, ৯২% মুসলমানের দেশে নাস্তিক্যবাদের দোসর মেনন-ইনু গংদের আস্ফালন সহ্য করা যায় না। এধরনের ইসলামবিদ্বেষী বক্তব্য দিয়ে সে জাতীয় সংসদের সদস্য থাকতে পারে না। অবিলম্বে মেননের সংসদ সদস্য পদ বাতিল করে তার বিচার করুন। এ জাতীয় মুনাফেকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় দেশের আলমসমাজ ও তৌহিদী জনতা তার ইসলামবিদ্বেষের বিরুদ্ধে দুর্বার গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে। তখন তারা পালাবার পথও খুজে পাবেন না।