মেননের বক্তব্যের সমালোচনা করায় প্রশংসায় ভাসছেন কাজী ফিরোজ রশীদ

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

মার্চ ১১ ২০১৯, ০৬:১২

 

হাবীব আনওয়ার

জাতীয় সংসদে আল্লামা আহমদ শফী, কওমী মাদরাসা নিয়ে মেননের দেয়া বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে মেননের বক্তব্য একপাঞ্জ করার দাবী জানালেন এমপি ফিরোজ রশীদ।

আলেমসমাজের পক্ষ নিয়ে জাতীয় সংসদে এমন সহাসী বক্তব্য দেওয়ায় সর্বমহলে কাজী ফিরোজ রশীদের প্রশংসা করা হচ্ছে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রায় সবাই তিনিকে নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়ে আনন্দ প্রকাশ করছেন।

আল্লামা শাহ আহমদ শফী পরিচালিত হাটহাজারী মাদরাসার ফেসবুক পেইজেও তার বক্তব্য শেয়ার করতে দেখা যায়।অনেকে লিখেছেন, কাজী ফিরোজ রশীদ, স্যার আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ। আপনি ১৬ কোটি জনতার হৃদয়ের কাজটি করছেন।আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।আশা করি আগামীতে কেউ সংসদে দাঁড়িয়ে ইসলাম নিয়ে বিরৃপ মন্তব্য করলে আপনি সাথে সাথে প্রতিবাদ জানাবেন।

ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘একজন সংসদ সদস্য, যিনি আগে মন্ত্রী ছিলেন, এই সংসদে ধান ভানতে শিবের গীত গেয়েছেন। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। কওমি মাদ্রাসা নিয়ে অনেক বেহুদা কথা বলেছেন। কওমি মাদ্রাসা নাকি বিষবৃক্ষ! অথচ এই সংসদে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা দাওরায়ে হাদিসের স্বীকৃতি দিতে সর্বসম্মতক্রমে আইন পাস করেছি। এটা তাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। এটা একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। এজন্য সব কওমি মাদ্রাসা থেকে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এখানে তো কোনও মোল্লাতন্ত্র বা দেশ দখলের ষড়যন্ত্র হয় না।’

আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে মেননের সমালোচনা করার প্রসঙ্গ টেনে জাপার এই এমপি বলেন, “হেফাজতের আমির, তিনি একজন বর্ষীয়ান নেতা। সারাজীবন মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেছেন। তাদের অনেক ছাত্র-ভক্ত রয়েছে। তাকে নিয়ে এই সংসদে কটাক্ষ করে কথা বলা হয়েছে। ‘তেঁতুল হুজুর’ বলে তাকে কটাক্ষ করা হয়েছে। তাকে বিদ্রুপ করা হয়েছে। এ ধরনের ধৃষ্টতা সংসদে উচিত নয়।”

ফিরোজ রশীদ আরও বলেন, ‘সংসদে নেই, সংসদে কথা বলতে পারেন না, সংসদে আসতে পারেন না। তাদের নিয়ে সংসদে আমরা এ ধরনের কথা কেন বলবো? দেশ তো শান্ত আছে, শান্তিতে আছে। এখন তো কোথাও অশান্তি দেখি না। আমরা কেন শান্তির মধ্যে একটি অশান্তির ঢিল ছুড়ে দেবো?’

তিনি বলেন, ‘কিছু বামপন্থী নেতা রয়েছেন তারা ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলাটাকে ফ্যাশন মনে করেন। ইসলামের মধ্যে কথা বললেই বোধ হয় আলট্রা মর্ডান হয়ে গেলাম! মানুষ মনে করবে, আমি সব থেকেই বড় বিপ্লবী বামপন্থী কমরেড হয়ে গেলাম!’

দেশের কওমি মাদ্রাসা শিক্ষার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘এখানে ২০ হাজার কওমি মাদ্রাসা আছে। ২০ লাখ ছাত্র এতে কোরআন-হাদিস নিয়ে পড়াশোনা করেন। কঠিন ইসলামিক ধর্মীয় অনুশাসনের মধ্যে তাদের চলতে হয়। তারা স্কুল-কলেজের ছাত্রদের মতো ঘি-মাখন-পরাটা খেতে পারে না। যা জোটে তা-ই খায়। কওমি মাদ্রাসায় মাদক, ইয়াবা, গাজা নিষিদ্ধ। ধূমপান এখানে চলে না। আমাদের স্কুল-কলেজ, ইউনিভার্সিটি ও বাড়িঘরে এই মাদক ঢুকে পড়েছে। কিন্তু কওমি মাদ্রাসায় ঢুকতে পারে না। আমরা রক্ত পরীক্ষা করলে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে শত ভাগ পিওর রক্ত পাবো। কিন্তু স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের রক্ত পরীক্ষা করলে ৫০ ভাগও পিওর রক্ত পাবো না।’

স্পিকারকে উদ্দেশ করে ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসার বিরুদ্ধে বলে আলেম সমাজের নেতা আল্লামা শফী সাহেবের বিরুদ্ধে কথা বলে উনাকে অপমান করা হয়েছে। এই সংসদে তাদের জন্য আমরা আইন পাস করেছি। এখানে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার দরকার ছিল না। এই কথাগুলো একপাঞ্জ করবেন। অশান্ত পরিবেশ থেকে আমরা মুক্তি পাবো।’

গতকাল রবিবার (১০ মার্চ) সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এ দাবি জানান।তবে তিনি মেননের নাম উল্লেখ্য করেননি।