ভোলায় পুলিশের গুলিতে হত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশী মুসলিম ইউ’কের সমাবেশ অনুষ্ঠিত

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

অক্টোবর ২৭ ২০১৯, ০৫:৫৮

একুশে জার্নাল ডেস্ক: মহানবী (স:) কে ব্যঙ্গ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার মূল ব্যক্তি বিপ্লব চন্দ্র শুভকে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান এবং এই ঘটনার সূত্রধরে বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের গুলিতে ৪ জন শহীদ ও শতাধিক আহত হওয়ার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে লন্ডনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশী মুসলিম ইউ’কে। গত ২৫ অক্টোবর শুক্রবার বাদ জুম্মার পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে অনুষ্টিত সমাবেশে ব্রিটেনের শীর্ষ আলেম উলামা ও তাওহীদি জনতা অংশনেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, নবী (সা:) কে অবমাননাকর উক্তি দেশ বিদেশের ঈমানদার তাওহীদি জনতা কখনো সহ্য করবে না। তারা উগ্রবাদী হিন্দু সংগঠন “ইসকন” সহ বিভিন্ন ইসলাম বিরোধী এনজিও নিষিদ্ধ করার দাবী জানিয়ে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ আবহমান কাল থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, কিন্তু একশ্রেণীর উগ্রপন্থী ব্লগাররা মুসলমানদের মাঝে উস্কানী সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। দেশকে বিশৃংখল, অকার্যকর, অস্থিতিশীল বানিয়ে আধিপত্য বিস্তার করতে তারা তৎপর।

সংগঠনের সভাপতি মাওলানা এ কে এম সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী মাওলানা শাহ মিজানুল হকের পরিচালনায় এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের গুলিতে ৪ জন শহীদ ও শতাধিক আহত হওয়ার ঘটনার নিন্দা ও তাদের শাস্তি দাবী করে বক্তাগণ বলেন, নবী প্রেমিক মুসল্লীদের প্রতিবাদ মিছিলে গুলি করে হত্যার করার ঘটনা জাতির জন্য দূর্ভাগ্যজনক। অবিলম্বে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমের হত্যাকারীরদের বিচার ও নির্দেশ দাতাদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করেন। অবিলম্বে হাজার হাজার মুসল্লীদের বিরুদ্ধে পুলিশী মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান।

বক্তারা বলেন, সমাজে আজ গুম, খুন, ধর্ষণ, মদ, জুয়া, ক্যাসিনো, জুলুম নির্যাতনের লীলা ভূমিতে পরিণত হয়েছে। সরকার এগুলোকে দমন না করে পক্ষান্তরে মদদ যোগাচ্ছে। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ঈমান, আকীদা, তাহজীব, তামাদ্দুন, শিক্ষা-দীক্ষা ও সংস্কৃতি বিনষ্ট করার গভীর চক্রান্ত দেশে চলছে। যারা অপকর্মের মাধ্যমে দেশ ও জাতিকে ধ্বংস করতে চায় তারাই বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠী ইসলাম, কুরআন, মহানবী (সা:) এর কুটক্তি ও অবমাননা করে ইমানদারদের পরীক্ষা করতে চায়।
বক্তারা বলেন, ইসলাম ও মহানবীর ইজ্জত ও মর্যাদাহানী কখনো বরদাস্ত করা হবে না। যারা শহীদ হয়েছেন নবীর প্রেমে তাদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না। সম্প্রতি বুয়েটের মেধাবী ছাত্র “আবরার” হত্যায় জড়িতদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে করতে হবে। দেশের সকল শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানকে সন্ত্রাস ও দলীয় কার্যক্রম মুক্ত করতে হবে। নৈতিকতা ও ইসলাম বিবর্জিত শিক্ষা ব্যবস্থা শিক্ষার্থীদেরকে ভিন্ন পথে ঠেলে দিচ্ছে।
ব্যক্তাগণ অবিলম্বে ইসলাম ও মহানবী (সা:) এর মর্যাদা ক্ষুন্নকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি “মৃত্যুদন্ড” আইন বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। এটা বাংলাদেশের সর্বস্তরের উলামায়ে কেরাম ও আপামর তাওহীদি জনতার দাবী।

বক্তারা মুসলিম বিশ্বের নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়ে বলেন, ইসলামের পক্ষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া এ সমস্ত চক্রান্তের মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।
আলতাব আলী পার্কে ব্রিটেনে সর্বোচ্চ উলামা সংগঠন বাংলাদেশী মুসলিমস্ ইউকের বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শরিয়া কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হাফিজ মাওলানা শায়খ আবু সায়েদ, ইস্ট লন্ডন মসজিদের খতীব ও ইমাম শায়খ আব্দুল কাইয়ুম, কাউন্সিল অব মস্কের চেয়ারম্যান হাফিজ মাওলানা শামছুল হক, মাযাহিরুল উলুম মসজিদ ও মাদ্রাসারে চেয়ারম্যান মাওলানা জমশেদ আলী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউরোপের সভাপতিসমুফতি শাহ সদরুদ্দীন, ইস্ট লন্ডন মসজিদের ইমাম হাফিজ মাওলানা আবুল হোসাইন খান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের সভাপতি মাওলানা শুয়াইব আহমদ, খেলাফত মজলিস যুক্তরাজ্যের সভাপতি মাওলানা সাদিকুর রহমান, আল কোরআন রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান হাফিজ মাওলানা মুফতি হাসান নূরী চৌধুরী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের সহ সভাপতি মুফতি আব্দুল মুনতাকিম, খেলাফত মজলিস লন্ডন মহানগরীর সেক্রেটারী মাওলানা আনিসুর রহমান, সেইন্ট জোসেফ হসপিস চাপলেইন (ইমাম) মাওলানা রেজাউল করীম, দারুল উম্মাহ মসজিদের ইমাম মাওলানা আবুল হাসনাত চৌধুরী, বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিষ্টার লিয়াকত সরকার, মাওলানা শামীম আহমদ প্রমুখ। বিক্ষোভ সমাবেশে প্রস্তাবনা ও দাবী পেশ করেন বাংলাদেশী মুসলিমস ইউকের সাবেক সভাপতি মাওলানা একেএম মওদুদ হাসান। মাওলানা জমশেদ আলী সাহেবের হেদায়াতী বক্তব্য ও মোনাজাতের মাধ্যমে বিক্ষোভ সমাবেশ সমাপ্ত হয়।