ভিডিও বার্তায় তরুণদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল: দেখিয়ে দিন, আপনারাই বাংলাদেশ

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

ডিসেম্বর ২৩ ২০১৮, ০৪:৪৯

মির্জা ফখরুল বলেন, “আপনার বিবেচনায় যাকে বলে তাকেই ভোট দিন। আমি সেই সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু ভোট আপনারা অবশ্যই দেবেন।”

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের উদ্দেশে এক ভিডিও বার্তা দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার দিবাগত রাতে (২২ ডিসেম্বর) ভিডিওটি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ফেসবুক পেজ থেকে প্রকাশিত হয়।

‘আপনারাই বাংলাদেশ’ শিরোনামে ৩ মিনিট ১০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটিতে মির্জা ফখরুল মুক্তিযুদ্ধে তার অংশগ্রহণের স্মৃতি উল্লেখ করে তরুণদেরকে স্বপ্ন দেখার আহ্বান জানান। নির্বাচনে যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তরুণদের অবশ্যই ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির এই প্রবীণ রাজনীতিবিদ।

ভিডিওর শুরুতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আপনারা যারা এবারই প্রথম ভোট দেবেন, তাদেরকে আমি কিছু বলতে চাই। আমার বয়স যখন আপনাদের মতো, তখন আমরা একটা  যুদ্ধে গিয়েছিলাম দেশটাকে মুক্ত করবো বলে। তখন আমাদের চারপাশে অনেক মানুষ ছিল, যারা বলতো যে,পাঞ্জাবীদের সাথে যুদ্ধে আমরা কোনো দিনও পারব না। মেরে-কেটে ওরা শেষ করে দেবে। ওদের ট্রেইনড মিলিটারির বিপরীতে আমরা হলাম বাচ্চা ছেলেপেলে। তারা আসলে, ভয় পেতো। যুদ্ধে পার্টিসিপেট না করার অনুতাপে কাতর ছিল তারা। আমরা তখন সেদিন তাদের কথা শুনিনি। বড় বড়, পাকা পাকা বিশ্লেষণে কান দেইনি। আমরা শুধু আমাদের মনের কথাটা শুনেছিলাম। শুধু একটা স্বপ্নকে তাড়া করেছিলাম। দেশটা মুক্ত হবে। একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হবে বাংলাদেশ।”

তিনি বলেন, “ওদের ট্রেইনড মিলিটারিদের বিপরীতে আমরা হলাম বাচ্চা ছেলেপেলে। তারা আসলে ভয় পেত। যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করার অনুতাপে কাতর ছিল তারা। আমরা সেদিন তাদের কথা শুনিনি। বড় বড় পাকা পাকা বিশ্লেষণে কান দেইনি। আমরা শুধু আমাদের মনের কথাটা শুনেছিলাম। শুধু একটা স্বপ্নকে তাড়া করেছিলাম। দেশটা মুক্ত হবে। একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হবে বাংলাদেশ।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমার বয়স এখন সত্তর। আমি এই বয়সেও সেই একই স্বপ্ন তাড়া করছি। আমি তো আশায় ভরপুর! আপনারা কী স্বপ্ন দেখতে ভুলে গেছেন? আমাকে বহু মানুষ বলে, ভোটে তো স্যার আপনারাই জিতবেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ আপনাদের রেজাল্ট খেয়ে ফেলবে। তার কারণ হলো, আওয়ামী লীগের সমীকরণে আপনারা (তরুণরা) নেই। তারা আপনাদের (তরুণদের) তাচ্ছিল্য করে। টু দেম ইউ ডোন্ট ম্যাটার। তাদের পরিকল্পনা, এমন সন্ত্রাস করো ২৯ তারিখ পর্যন্ত, যেন আপনারা (তরুণরা) পোলিং সেন্টারে যাওয়ার আগ্রহটাই হারিয়ে ফেলেন।”

তিনি আরও বলেন, “এমন এক ন্যারেটিভ তারা বাংলাদেশে দাঁড় করিয়েছে যে, আপনি যাকেই ভোট দেন, আপনার রাজনৈতিক জাজমেন্ট যাই হোক না কেন, সেই ভোটকে, আপনার বিশ্বাসকে, তারা চুরি করে পাল্টে দেবে। আমি বলি কী,আপনারা ওদের দেখিয়ে দিন যে, আপনারাই বাংলাদেশ। দেখিয়ে দিন যে, ইউ ম্যাটার। আপনারা এই দেশের মালিক এবং আপনার ভোটেই ঠিক হবে এদেশের ভবিষ্যৎ।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “আপনার বিবেচনায় যাকে বলে তাকেই ভোট দিন। আমি সেই সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু ভোট আপনারা অবশ্যই দেবেন। সকাল সকাল দেবেন। দেখিয়ে দিন যে, আপনারাই বাংলাদেশ।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “যৌবনে আমরা এই দেশটার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম। বার্ধক্যে এসে আপনাদের কাছে আমি শুধু একটা দিন চাইছি। ৩০ ডিসেম্বর, শুধু একটা দিন বাংলাদেশের জন্য। ৩০ ডিসেম্বর সকাল সকাল ভোট দিন। দেখিয়ে দিন যে, আপনারা শুধু ভোট দিতেও জানেন না, ভোট ডাকাতিও আটকাতে পারেন। গণতন্ত্রটা বাঁচাতে হবে।”

ভিডিও বার্তার সবশেষে মির্জা ফখরুল বলেন, “একটা আলো আমরা খুঁজে পেয়েছিলাম আমাদের যৌবনে। যেটা আমরা আপনাদেরকে দিতে চাই। এই আলোটা আপনারা শুধু আপনাদের সন্তানদের কাছে পৌঁছে দেবেন, তাহলেই হবে। আলোটাকে নিভতে দেবেন না।”