ভারত, মায়ানমার, ইসরাইল ও আমেরিকার চতুর্মুখী জোট; একটি সতর্কবার্তা

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

এপ্রিল ০২ ২০১৯, ১৯:৩০

হুসাইন আহমেদ

বালাকোটে ভারত যে বিমান হামলা করে তাতে তারা ইসরায়েলের দেয়া ‘স্মার্ট বোম্ব’ ব্যাবহার করেছিল। সেটা ভারতীয় প্রেস জোরেশোরে প্রচার করেছে।

সম্প্রতি ভারত-ইসরাইল সামরিক মিত্রতা অনেক গভীর হয়েছে। ২০১৭ সালে ভারত ছিল ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় অস্ত্র ক্রেতা। ফিলিস্তিন ও সিরিয়ার মুসলিমদের উপর ইসরাইলের পরিক্ষিত এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, রাডার সিস্টেম ও এমুনিশন এবং এয়ার টু গ্রাউন্ড মিসাইল সহ অনেক কিছুই ভারত কিনে এনেছে।

ইসরায়েলের অস্ত্র বিক্রি গুরুত্বপূর্ণ আরেক ভোক্তা মায়ানমার। ট্যাংক, বিভিন্ন ভাড়ি অস্ত্র ও সামরিক জলযান তারা মায়ানমারকে সাপ্লাই দেয়।

রোহিঙ্গা নির্যাতনের কারনে মায়ানমারের ও কাশ্মির, আসামসহ অন্যান্য এলাকার মুসলিমদের নির্যাতনের কারনে ভারতের সমালোচনা হলেও তারা এতে পরওয়া করে না। তিনদেশই তাদের এই সামরিক মৈত্রিতার কথা সগর্বে প্রচার করে থাকে। ভারতের হিন্দু জনগোষ্ঠী প্রকাশ্যে ফিলিস্তিনের মুসলিমদের অরতি ইসরাইলের আচরনের তারিফ করে থাকে।

সম্প্রতি আরেকটি ঘটনা ঘটেছে, সেটা হল, আমেরিকার ইসরাইলকে পূর্ণ আকাশ নিরাপত্তা প্রদান।

উপমহাদেশ ও মধ্য এশিয়া সবসময়ই বিশ্ব ইতিহাসের রাজনৈতিক পরিবর্তনে ভালো প্রভাব রেখেছে। এর স্ট্রাটেজিক গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি। এছাড়া হযরত মোহাম্মদ সা. এর ভবিষ্যতবাণী অনুযায়ী এই এলাকা সামরিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করছে। রাসূল সা. এর ভবিষ্যতবাণী অনুযায়ী খোরাসান অর্থাৎ আফগানিস্তান ও এর আশেপাশের এলাকা থেকেই খিলাফার জন্য সাহায্য আসবে। আর ভারতে অনুষ্ঠিত হবে গাজওয়ায়ে হিন্দ। এই দুই বিষয়টা যারা জানেন না তারা হেসে উড়িয়ে দিতে পারেন। তবে ভারত সহ তার তিন মৈত্রী শক্তি এ ব্যাপারে পূর্ণ ওয়াকিবহাল। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে সি আইএর বক্তব্যও রয়েছে।

উপমহাদেশে যে একটি যুদ্ধ আসন্ন সেটা দ্রুততার সাথে পরস্কার হচ্ছে। এই যুদ্ধের জন্য ভারত পূর্ণ প্রস্তুতি নিচ্ছে। বলতে গেলে সেটা তারা শুরুও করে দিয়েছে। সম্প্রতি পাকিস্তানের তালেবানঘেষা প্রভাবশালী আলেম মাওলানা সামিউল হক্বকে হত্যায় ভারতের র’এর হাত থাকা খুবই সম্ভব। এছাড়া গতদিন আরেক আলেম মুফতি তাক্বি উসমানির উপর হামলাতেও প্রথমেই র’ এর দিকে সন্দেহ যাচ্ছে। প্রশ্ন আসতে পারে র’ কেন এসব আলেমদের হত্যা করতে যাবে?

চার দেশের যে এলায়েন্সের কথা আমি বললাম ভাবুন তাদের কমন শত্রু কে? আমেরিকা ওয়ার অন টেরর এ কাছে। সেই টেররিষ্টরা কারা। মুসলিম। আমেরিকার মটিভেশন ধর্ম অর্থাৎ ক্রুসেড। ইসরাইলের যুদ্ধ কার সাথে। মুসলিম। মটিভেশন ধর্ম। মায়ানমারের যুদ্ধ কার সাথে। মুসলিম। মটিভেশন ধর্ম। সেকুলাররা হয়তো আমার এই কথা মেনে নেবেন না। কিন্তু তাদের মানা না মানায় তো বাস্তবতা অস্বীকার করা যায় না।

উপমহাদেশের মুসলিমদের উপর দেওবন্দী মাদ্রাসার প্রভাব প্রবল। ভারতের আল কায়েদা বা পাকিস্তানের তালেবানের নেতৃত্বে এই স্কুলের ছাত্ররাই রয়েছে। দেওবন্দ প্রতিষ্ঠার ইতিহাসও কারো অজানা নয়। আগত যুদ্ধের মোটিভ যখন ধর্ম বা এর অবজেক্ট যখন ধর্মীয় গোষ্ঠী তাই স্বাভাবিকভাবেই ভারত এখন থেকেই তার লক্ষ্যবস্তু তাক করা শুরু করে দিয়েছে। আর এতে তার সংগী যখন ইসরায়েল তখন এসাসিনেশন একটা কমন প্রাকটিস। এরকম গুপ্তহত্যা সামনে আমরা আরো দেখবো। ছোটবড় গুম শুরু হয়ে গেছে এবং চলতেই থাকবে৷

আমি আবারো বলছি, লিবারেলরা হয়তো চোখ-কান বন্ধ করে বলবে এসবে ধর্ম নেই। কিন্তু বর্তমান ও অতীত ইতিহাস প্রমান করে ধর্মই আসল ফ্যাক্টর। ভারতীয় হিন্দুদের আরেক দাবি হল মুসলিমরা তাদের জ্ঞান বিজ্ঞান লুট করে নিজেদের নামে চালিয়ে দিয়েছে। যেমন আলজেব্রা ইত্যাদি। দুনিয়ার সকল জ্ঞান তাদের আবিস্কার। কিন্তু মসলমানদের কারনে এটা এখন আর কেউ জানে না। তাদের এই দাবির ব্যাপারে জানতে অন্যতম বড় হিন্দু গবেষক রাজিব মালহোত্রার কিছু ভিডিও দেখতে পারেন।

আসলে আমি যে সতর্কবার্তা দিতে চাচ্ছি সেটা হল উপমাহাদেশের আগত ভয়াবহ যুদ্ধ ও তার প্রস্তুতিতে আমেরিকা, ইসরায়েল, ভারত ও মিয়ানমারের মৈত্রিতা। এটা অপরিহার্য এক যুদ্ধ। এশিয়ায় জ্বলে উঠা ঘৃণার আগুন এরকম ভয়াবহ যুদ্ধ ছাড়া শেষ হওয়ার আলামতও দেখা যাচ্ছে না। বিরুদ্ধ শক্তির মধ্যকার ঘৃণা পরতে পরতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামনের দিনগুলো মসলমানদের জন্য হবে – বাচতে হলে যুদ্ধ করো অন্যথায় মার খেয়ে মরে যাও।- তৃতীয় কোন সমাধান দেখা যাচ্ছে না।

লেখক: সম্পাদক,মাসিক আল আহরার।