পিযূস বন্দোপাধ্যায়ের বক্তব্যের সাথে আমি একমত নই– আল্লামা মাসউদ

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

মে ১৩ ২০১৯, ১৯:১৫

১২ মে’তে রাখা পিযূস বন্দোপাধ্যায়ের বক্তৃতার (জাতীয় ‌‌দৈনিকগুলোতে প্রকাশিত সন্দেহভাজন জঙ্গি সদস্য সনাক্তকরণের ২৩টি উপায় জানিয়ে বিজ্ঞাপন) সঙ্গে গুলিয়ে আল্লামা মাসঊদ সেখানে উপস্থিত ছিলেন এমন খবর প্রচার করেছে একশ্রেণির যুবক। এ বিষয়ে বাস্তবতা কী? এর উপর আল্লামা মাসঊদ সম্পাদিত পাথেয় টোয়েন্টিফোরে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। যেখানে বলা হয়-


সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুাইটারসহ সবখানে আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদকে নিয়ে চলছে ট্রল এবং মিথ্যাচার। অথচ বাস্তবতার সঙ্গে কোনো মিলই নেই। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে বিদেশি গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্যের প্রতিবাদে ৩ মে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে বক্তব্য রেখেছিলেন আল্লামা মাসঊদ।

সোমবার সকালে মাসিক পাথেয়’র ফেসবুক আইডিতে বলা হয়, মিথ্যাযাত্রায় এখনও বড় ভূমিকা রাখছেন দেশের তরুণসমাজ। আপনাদের হেদায়াত তো একমাত্র আল্লাহই দেবেন। নিচের ছবির অনুষ্ঠানটিতে কি আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ দামাত বারাকাতুহুম আছেন? সেমিনারের বক্তব্য চালিয়ে দিচ্ছেন সংবাদ সম্মেলনের ছবি দিয়ে। মাথায় টুপি, গায়ে পাঞ্জাবী আর পাজামা পরে আপনি এবং আপনারাও তো মিথ্যাটা দারুণ চর্চা করে যাচ্ছেন। ভালোই তো… তাঁর বসা অবস্থায় পিযূস বন্দোপাধ্যায় এসব বলেছেন। অথচ ৩ মের ছবি দিয়ে ১২ মের বক্তব্য চালিয়ে দিলেন। ফাফিররু ইলাল্লাহ।

বিজ্ঞাপনের বিষয়ে জানতে চাইলে শোলাকিয়া ঈদগাহের খতিব মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ পরিবর্তন ডটকমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, সোজা কথা এই বিজ্ঞাপন দিয়ে ভুল করেছে। এভাবে তাদের মন্তব্য করা উচিত নয়।

তিনি বলেন, যারা ধর্ম পালন করে তাদের মধ্যে কেউ হয়তো উগ্রবাদের দিকে চলে গেছে। তবে এ কারণে ধর্মীয় পালনীয় বিষয়গুলোকে ইন্ডিকেটর বলা ঠিক না।

এই বিজ্ঞাপনের একটা পয়েন্টে বলা হয়েছে- প্রচলিত মাযহাবকে ভুল প্রমাণের প্রবণতা এবং নিজেকে লা মাযহাব দাবি করাকে জঙ্গিবাদের ইন্ডিকেটর চিহ্নিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, তারা (সম্প্রীতি বাংলাদেশ) মাযহাবের ব্যাপারে কি বুঝে? তবে কিছু আছে লা মাযহাব দাবি করে। তাদের থেকে হয়েতো কিছু মানুষ উগ্রবাদের দিকে ঝুকেছে ঠিক। কিন্তু এটাকে ইন্ডিকেটর বলার সুযোগ নেই।

নিচে বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান ও ঐতিহাসিক শোলাকিয়ার গ্র্যান্ড ইমাম শাইখুল হাদিস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ দামাত বারাকাতুহুম ৩ মে ২০১৯ শুক্রবার যে বক্তব্য দিয়েছেন তা তুলে ধরা হলো-

মানুষ মানুষের জন্য। মানুষ শব্দ’টাকে আরবীতে ইনসান বলা হয়। আর ‘উনস’ শব্দ থেকে ইনসান। আর ‘ইউনস’ এর অর্থ হলো ভালোবাসা। মানুষ যেহেতু একজন আরেকজন কে ভালোবাসত জানে, একজনের আরেকজনকে ভালোলাগে, সহমর্মি তাই সে মানুষ। আর যারা হিংস্র তারা তো মানুষ হতে পারে না, বরং কুরআনে কারীমে তাদেরকে ‘পশুর চাইতেও অধম’ এ কথা বলা হয়েছে।

সুতরাং যারা আজকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, অশান্তি, বিশৃঙ্খল সৃষ্টি করছে তাদেরকে আমরা পশু বলেও সম্মান দিতে চাই না, এরা পশুর চেয়েও অধম। ইসলাম এত উদার ছিল, এত উদার, এখনো আছে যে। একবার রাসূল সা. সামনে দিয়ে একটা লাশ (জানাযা) চাচ্ছিল। রাসূল সা. তার সম্মানের জন্য ওঠে দাঁড়িয়ে গেলেন, বসা ছিলেন। এ সময় আরেক বললো, হে নবী, এটা তো একজন ইহুদীর লাশ। রাসূল সা. বললেন সে কি মানুষ নয়। সে কি মানুষ নয়।

সুতরাং আমরা আমাদের মানুষের পরিচয় ধরে রাখার চেষ্টা করি, তাহলে আমাদের সমস্ত বিবাদ বিষমবাদ কেটে যাবে। এবং আমরা মনে করি এই দেশে ঘটনাচক্রে আমরা মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। আর ধর্মীয় দায়িত্ব মুসলমানদের এই, যারা নাকি, আমি সংখ্যালঘু বলবো না কাউকে।যারা তাদের প্রতিবেশি ভাইরা আছেন, এই প্রতিবেশিদের রক্ষা করা, তাদেরকে নিরাপত্তা দেওয়া, তাদের আশ্বস্ত করা, এটা আমাদের ধর্মীয় দায়িত্ব। আমি সকলকে এর প্রতি আহ্বান জানিয়ে এবং আপনাদের সকলের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আমি আমার বক্তব্য এখানে শেষ করছি।