দৈনিক সংগ্রাম বন্ধের পায়তারা বন্ধ করতে হবে: নিউইয়র্কে প্রতিবাদ সভায় বক্তারা

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

ডিসেম্বর ২১ ২০১৯, ১০:২৪

নিউইয়র্ক থেকে রশীদ আহমদ:

প্রখ্যাত লেখক ও দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদেও উপর চালানো বর্বোরোচিত হামলা বাংলাদেশের ইসলামী মূল্যবোধ ও জাতীয়তাবাদী দ্বারা কণ্ঠকে স্তব্ধ কওে দেবার গভীর ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন নিউ ইয়র্কেও লেখক ও সাংবাদিকরা। ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে অন্তত্য পরিকল্পিতভাবে দৈনিক সংগ্রাম অফিসে হামলা ও পত্রিকাটির সম্পাদককে নাজেহাল করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তারা। দৈনিক সংগ্রাম বন্ধ করে কার্যালয়টি দখলে নেবার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলেও মনে করেন প্রবাসী লেখক সাংবাদিকরা। এসময় বক্তারা অবিলম্বে সম্পাদক আবুল আসাদের মুক্তির জোর দাবী জানান লেখক ও সাংবাদিকরা।পাশাপাশি দৈনিক সংগ্রামে চলা তান্ডবের তীব্র নিন্দা জানান বক্তারা।

গত ১৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের বাংলাদেশ প্লাজা অডিটরিয়ামে রাইটার্স, জার্নালিস্ট সোসাইটি অফ নিউ ইয়র্ক আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন বক্তারা। নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত দৈনিক রানার পত্রিকার সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নুল আবদীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় শুরুতে কোরআন হাকীম থেকে তেলাওয়াত করেন কবীর আহমদ। বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শওকত আলী,বিশিষ্ট কলামিস্ট মিনা ফারাহ, এখন সময় পত্রিকার সম্পাদক কাজী শামসুল হক, সাউথ এশিয়ান সলিডারিটি ফাউন্ডেশন-এর নির্বাহী সম্পাদক ও বিশিষ্ট সাংবাদিক ইমরান আনসারী, নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাংলা পত্রিকার বার্তা সম্পাদক এবিএম সালাউদ্দিন আহম্মদ,সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি এমদাদ চৌধুরী দীপু, ইয়র্ক বাংলা সম্পাদক রশীদ আহমদ, রাইটার্স ফোরাম অফ আমেরিকার সহ সভাপতি নঈমুদ্দীন প্রমূখ।

ড.শওকত আলী বলেন,সম্পাদক আবুল আসাদের উপর সন্ত্রাসীদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় হামলা আমাদের গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করেছে। এ হামলার শেকড় অনেক গভীরে। তিনি আরো বলেন,পত্রিকা ভূল সংবাদ ছাপা হয়ে থাকলে আইনী পক্রিয়ায় পত্রিকার সম্পাদককে আদালতে দাঁড় করানো যেতো।আমরা দেখলাম কি এক নির্লজ্জভাবে বাংলাদেশের একটি পুরণো পত্রিকাকে হামলা চালানো হল। তিনি অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনার দাবী জানান। পত্রিকাটির যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা তদন্ত করে ক্ষতিপূরণ দেবার দাবীও জানান ড.শওকত আলী।

কলামিসট মিনা ফারাহ বলেন, হিন্দুত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা চালুর অংশ হিসেবেই দৈনিক সংগ্রাম অফিসে হামলা চালিয়ে পত্রিকাটির বয়োজ্যোষ্ঠ্য সম্পাদককে গ্রেফতার করা হয়েছে। একে একে জাতীয়তাবাদী ধারার সকল কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দেবার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে সরকার। মোদির হিন্দত্ববাদী শাসন ব্যবস্থাকে রুখতে বাংলাদেশসহ ভারত বর্ষের মুসলমানদের ৪৭ এর চেতনায় ফিরে যেতে হবে। মিনা ফারাহ আরো বলেন, সরকারী মদদে দেশের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের বিরুদ্ধে কুঠারাঘাত হানা হয়েছে। একজন বয়োজ্যাষ্ঠ মানুষের উপর হাত দিতে এখনকার প্রজন্মের চোখে লজ্জা লাগে না। তিনি আরো বলেন, ভারতে যে আইডেন্টির সংকট শুরু হয়েছে, তার প্রথম ধাক্কা লাগবে বাংলাদেশে।বাংলাদেশে সংখ্যালঘুর শাসন চালু হবার আশংকাও করেন প্রবাসের এই কলামিস্ট।

কাজী শামসুল হক বলেন, প্রকাশ্যে দিবালোকে একজন আজীবন সংবাদকর্মী আবুল আসাদের উপর হামলার বিষয়ে দেশে বিদেশে সাংবাদিকদের নির্লিপ্ততা অত্যন্ত নিন্দনীয় উদাহরণ হয়ে থাকবে।আবুল আসাদ সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি আরো বলেন,তাঁর মতের সাথে কারো মিল নাই থাকতে পারে। কিন্তু একজন নিরেট ও প্রবীণ সম্পাদকের উপর হামলার বিষয়ে সাংবাদিক সমাজের নির্লিপ্ততা বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতাকে আরো গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত করবে।

ইমরান আনসারী বলেন, জাতীয়তা বাদী ও ইসলামী মূল্যবোধের পক্ষের কণ্ঠকে চিরতরে স্তব্ধ করে দেবার ভারতীয় সম্প্রসারণবাদের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সংগ্রাম অফিসে হামলা ও পত্রিকাটির সম্পাদককে গ্রেফতার করা হয়েছে। যার শুরু হয়েছিল দৈনিক আমার দেশ, দিগন্ত টেলিভিশন, চ্যানেল ওয়ান ও ইসলামিক টিভি বন্ধের মাধ্যমে। সরকার এখন পায়তারা করছে দৈনিক সংগ্রাম বন্ধ করতে। তিনি আরো বলেন, জাতীয়তাবাদী ধারার কণ্ঠকে স্তব্ধ করার অংশ হিসেবে দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিক রেহমান ও কলামিষ্ট ফরহাদ মজহারকে গ্রেফতার, নাজেহাল ও গুমের চেষ্টা করেছে সরকার।

সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন বলেন,সরকার দৈনিক সংগ্রাম বন্ধ করে কার্যালয়টি দখল করা পায়তারা করছে। এটি ভারতীয় আরএসএসও এর একটি সুদূর প্রসারি পরিল্পনা।

প্রতিবাদ সমাবেশে প্রতিবাদী কবিতা আবৃত্তি করেন কবি আবুল বাসার।