তাবলীগকে আপন ভুবন থেকে সরাতে মাওলানা সাদের গোপন মিশন

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

ডিসেম্বর ১৫ ২০১৮, ০৫:৩৪

সৈয়দ শামছুল হুদাঃ দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনতকে ইলিয়াস রহ. এর প্রতিষ্ঠিত ধারা ও পদ্ধতি থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য বড় ধরণের বিনিয়োগ হয়েছে বলেই ধারণা করা হয়। সাদ কান্ধলভিকেই নির্বাচন করা হয় এ কাজের রূপকার হিসেবে।

তিনি যে সব পরিবর্তন, পরিবর্ধন শুরু করেছেন তাতে এটা খুব পরিস্কার যে, এই দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনতকে যারা প্রচন্ড রকম ভয় পায়, তাদের কুপ্রভাব পড়েছে জনাব সাদ সাহেবের ওপর।

জনাব সাদ সাহেব যে সকল নতুন নতুন পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছেন, তাতে করে এই মেহনত খুব অচিরেই তার চিরাচরিত চেতনা হারাবে। তিনি এমনসব সিদ্ধান্ত এককভাবে উম্মাহর ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন যার ফলে তাবলীগ আর পুরনো মেজাজে থাকবে না। অনেকেই এটাকে অসম্ভব হলে দূরে সরে যাবে।

কিছু উদাহরন তুলে ধরা হলো :
ক. কুরআন বুঝে পড়া ওয়াজিব। না বুঝে পড়লে ওয়াজিব তরকের গোনাহ হবে। ফলে অনেক সাধারণ মানুষ কুরআন তেলাওয়াত আস্তে আস্তে কমিয়ে দিবে।

খ. তিনি বলেন দাওয়াত হবে মসজিদে। দাওয়াত তালীমের মুল মারকাজ হলো মসজিদ। সুতরাং বাইরে কোন দাওয়াত নয়। এই কাজকে তিনি নাম দিয়েছেন “ দাওয়াত, তালীম এস্তেকবাল” এর ফলে ইউরোপ আমেরিকায় সাধারণ তাবলীগি ভাইদের মেহনতের যে প্রভাব বাহিরে পড়ে তা আর পড়বে না। ওরা মুসলমানদের অঘোষিত প্রভাব থেকে মুক্তি পাবে। বিনিময়ে ইসলাম ঝিমিয়ে পড়বে।

গ. জনাব সাদ সাহেব কোন মুরুব্বির সাথে পরামর্শ ছাড়াই দাওয়াত ও তাবলীগের সাথীদের জন্য বছরে ৬মাস, মাসে ১০দিন, রোযানা আট ঘন্টা মেহনতের নতুন নির্দেশ জারি করেছেন। এর ফলে মানুষের স্বাভাবিক ব্যস্ততার কারণেই অনেকে তাবলীগে সময় দিতে পারবে না। ফলে কিছু মানুষ এ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে। ইলিয়াস রহ, থেকে যে আমল চলে আসছিল, সেটা হলো, বছরে এক চিল্লা, মাসে তিনদিন, দৈনিক আড়াইঘন্টা ফিকির।

ঘ. প্রতিদিন ঘরে তাশকীল। প্রতিদিন ঘরে তাশকীলের কিছুই নাই। ছেলে-মেয়ে, বউ-বাচ্চাদের সাথে প্রতিদিন তাশকীল করার মানেই হয় না। ঘরে প্রতিদিন তালীম হতো।

ঙ. প্রতিদিন বাদ ফজর ফাজায়েলে আমলের তালীম বন্ধ করে দিয়ে সেখানে মুনতাখাবুল হাদীস এর তালীম চালূ। এর ফলে ইলিয়াস রহ, এর স্মৃতি বিজড়িত কিতাব থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার গোপন মিশন কাজ করছে।

চ. শুরায়ী নেজামকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে একক সিদ্ধান্তে সবকিছু ফায়সালা করার নতুন রেওয়াজ চালু করা।

ছ. বড়দের মতামত না নিয়েই নিজে নিজে অটো আমীর হয়ে যাওয়ার ধারা চালু করা।

জ. তাবলীগে পরিবারতন্ত্র চালু করে আলমী তাবলীগকে একজন ব্যক্তির ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল করে ফেলা। জনাব সাদ সাহেবের রাজকীয় সংবর্ধনা গ্রহন, একগুঁয়েমি চাল -চলন দাওয়াত ও তাবলীগকে হাস্যকর পর্যায়ে নিয়ে যাবে।

ইজতেমা ময়দানকে রক্তাক্ত করতে সাদ সাহেবের অনুসারীদের মধ্যে জিঘাংসা জেগে উঠোছে তার কারণ সাদ সাহেব নিজেই। গত বছর তিনি ইজতেমা ময়দানে না এসে কাকরাইলে বসেই ইজতেমার তারিখ ঘোষণা, জোড়ের তারিখ ঘোষণা, তাবলীগের হযরতজি হয়েও থাইল্যান্ড হয়ে বিজনেস ভিসায় বাংলাদেশে আসার মধ্যেও তার প্রচন্ড জিদ, একগুঁয়েমি প্রকাশ পায়। এটা পরিস্কার বুঝা যায়, তিনি বিভ্রান্তিতে নিপতিত হয়েছেন। তাকে দিয়ে কেউ এই ফিকিরকে ধ্বংস করার দায়িত্ব আদায় করে নিচ্ছে।

এভাবে এমন সব মাসআলা তিনি তাবলীগের মেহনতের সাথে জুড়িয়ে দিতে লাগলেন, যেগুলো মানুষকে দ্বীনি মাদরাসা থেকে দূরে সরাবে, কুরআন তেলাওয়াত থেকে দূরে সরাবে, আম গাশত ও দাওয়াত থেকে মানুষকে দূরে সরিয়ে দিবে। এরফলে তাবলীগ যে সারা বিশ্বে অঘোষিত রাজত্ব করে বেড়াচ্ছে তা দিন দিন সংকুচিত হয়ে আসবে।