ঢাকাদক্ষিনের যোবায়ের জাবেদের প্রশংসায় ড. কবির চৌধুরী

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জানুয়ারি ২৪ ২০১৯, ০৪:১২

 যোবা‌য়ের জাবেেদ এক আ‌মে‌রিকা প্রবাসী যুবক। বাড়ী সি‌লে‌টের গোলাপগ‌ঞ্জ উপজেলার ঢাকাদ‌ক্ষিণ ইউ‌নিয়‌নের রায়গড় গ্রা‌মে তাঁর পৈত্রিক নিবাস। ই‌ঞ্জি‌নিয়ার র‌ফিক উ‌দ্দিন আহম‌দের পুত্র তি‌নি। একসময় সি‌লে‌টে ফ‌টো সাংবা‌দিকতা কর‌তেন। প্রায় ১০ বছর ধ‌রে বসবাস কর‌ছেন আ‌মে‌রিকায়। কিন্তু মনটা যেন প‌ড়ে আ‌ছে প্রিয় মাতৃভূ‌মি‌তে। আর সে প্রিয় ম‌াতৃভূ‌মির জন্য ভা‌লো কিছু কর‌তে মন সব সময় উতলা থাক‌তো। কিন্তু সাধ থাক‌লেও সাধ্য ছি‌লো কম। স‌বে মাত্র সেখা‌নে গে‌ছেন। নি‌জেই  প্র‌তি প‌দে প‌দে হোঁচট খে‌তেন। সব‌চে‌য়ে বড় সমস্যা ছি‌লো ইং‌রেজী‌তে দূর্বলতা। ছাত্রজীব‌নেই  আ‌মে‌রিকা পাড়ি দেন বাবা মার স‌ঙ্গে। ১০ বছ‌রে দে‌শে এসেছেন বহুবার। সমা‌জের জন্য কিছু একটা করার চিন্তা ক‌রে‌ছেন। কিন্তু সে সু‌যোগ হ‌য়ে উ‌ঠে‌নি। সবাই যা ক‌রেন,তার চে‌য়ে ব্য‌তিক্রম কিছু করার চিন্তা তাঁর মাথায় ঘুরপাক খে‌তো। আর স‌ত্যি স‌ত্যিই এবার এক ব্য‌ত‌িক্রমী কর্মসূ‌চি হা‌তে নি‌য়ে দেশ সেবায় নাম‌লেন যোবা‌য়ের। যার মহ‌তি উ‌দ্যো‌গের  ভূয়সী প্রশংসা ক‌রে‌ছেন সি‌লে‌টের সর্বজন শ্র‌দ্ধেয় শিক্ষা‌বিদ প্র‌ফেসর ড, ক‌বির চৌধুরী। যি‌নি লন্ডন বাংলা‌দেশসহ ৬টি বিশ্ব‌বিদ্যাল‌য়ে অধ্যাপনা ক‌রে‌ছেন। মে‌ট্রোপ‌লিটন ইউ‌নিভা‌র্সি‌টির সা‌বেক ভি‌সি ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযু‌ক্তি বিশ্ব‌বিদ্যাল‌য়ে ভি‌জি‌টিং প্রফেসরের দায়িত্ব পালন ক‌রে‌ছেন তি‌নি। যি‌নি বর্তমা‌নে সি‌লে‌টের সেরা শিক্ষা প্র‌তিষ্টান‌দের অন্যতম প্রতিষ্টান স্কলার্স হোম এর একা‌ডে‌মিক কাউ‌ন্সি‌লের চেয়ারম্যান। সি‌লে‌টের শ‌িক্ষ‌ার উন্নয়‌নে যি‌নি নিরলসভা‌বে কাজ কর‌ছেন প্রায় ২০ বছর ধ‌রে। সেই‌ শিক্ষক অবাক হ‌লেন যোবা‌য়ে‌রের উ‌দ্যো‌গের কথা শু‌নে। যে না‌কি সি‌লে‌টের স্কুল শিক্ষার্থী‌দের মা‌ঝে নি‌জে‌কে বিশ্বায়‌নের উপ‌যো‌গী ক‌রে গ‌ড়ে তুল‌তে সাহায্য কর‌বে, প্রেরণা যোগা‌বে। সেজন্য নি‌জেই গ‌ড়ে  তুলে‌ছেন ‘এডু‌কেশন গাইড’ না‌মে এক‌টি সংস্থা। যার কার্যক্রম প্রাথ‌মিকভা‌বে সি‌লে‌টে শুরু হ‌য়ে‌ছে।
গত রোববার সি‌লেট নগরীর ঐ‌তিহ্যবাহী শিক্ষা প্র‌তিষ্ঠান রসময় হাইস্কু‌লে ছি‌লো এডু‌কেশন গাইড এর প্রথম কর্মসূ‌চি। সে‌দিন বিদ্যাল‌য়ের শ’ খানেক শিক্ষার্থী‌দের নি‌য়ে অনুষ্টিত হয় উদ্বুদ্ধকরণ সে‌মিনার। ‌কিভা‌বে শিক্ষার্থীরা ভ‌বিষ্যত চ্যা‌লেঞ্জ মোকা‌বেলায় নি‌জে‌কে প্রস্তুত কর‌বে। কিভা‌বে ইং‌রেজী ভাষা রপ্ত কর‌বে। কিভা‌বে ভা‌লো রেজাল্ট কর‌বে। সেসব নানা বিষ‌য়ে প্রায় দুই ঘন্টা ধারণা দেয়া হয় শিক্ষার্থী‌দের। অ‌ভিজ্ঞ রি‌সোর্স পার্সনরা সেসব খু‌টি না‌টি বিষ‌য়ে ‌বেশ চমৎকারভা‌বেই শিক্ষার্থী‌দেরকে প্রেরণা যোগান।
এ কর্মৃসূ‌চির উ‌দ্বোধনী অনুষ্ঠা‌নে প্রধান অতি‌থি ছি‌লেন প্রফেসর ড, ক‌বির চৌধুরী। তি‌নি ছাড়া আর কো‌নো অ‌তি‌থিও রাখা হয়‌নি কাউ‌কে। বিদ্যাল‌য়ের প্রধান শিক্ষক সে‌লিম উ‌দ্দিন আহমদ সভাপ‌তিত্ব ক‌রেন।উপ‌স্থিত ছি‌লেন বিদ্যাল‌য়ের সি‌নিয়র শিক্ষক মিজানুর রহমান। এ‌তে স্বাগত বক্তব্য রা‌খেন যোবা‌য়ের আহমদ।
‌তি‌নি তার সরল স্বীকা‌রো‌ক্তি‌তেই জানান কেন এই উ‌দ্যোগ,‌কেন প্র‌চেষ্টা। বল‌লেন একদশক আ‌গে যখন ছাত্রাবস্থায় পা‌রিবিা‌রিক সূ‌ত্রে আ‌মে‌রিকা যান। তখন প্র‌তি প‌দে প‌দে তি‌নি বাধাপ্রাপ্ত হন। নি‌জের কর্মদক্ষতা থাকা স‌ত্বেও শুধুমাত্র ভাষাগত দূর‌ত্বের কার‌ণে কাং‌খিত অ‌নেক সাফল্য থে‌কে ব‌ঞ্চিত হন। বেগ পে‌তে হয় দীর্ঘ‌দিন। যখন ইং‌রেজী আয়‌ত্বে আ‌সে তখন সব‌কিছু তাঁর আয়‌ত্বে আস‌তে থাকে। তি‌নি ব‌লেন এগু‌লো অ‌নে‌কে লু‌কি‌য়ে রা‌খেন। আ‌মি চাই জানা‌তে এবং জান‌তে। যা‌তে ভ‌বিষ্য‌তে কেউ সে ধর‌ণের বিব্রতকর প‌রি‌স্থি‌তির মু‌খোম‌ু‌খি না হন। আর সেই উপল‌ব্ধি থে‌কেই তার  এই  মহ‌তি উ‌দ্যোগ। যা‌তে তি‌নি আশা প্রকাশ ক‌রেন ভ‌বিষ্যত গড়ার মিশ‌নে শিক্ষার্থী‌দের পা‌শে থে‌কে সাধ্য ম‌তো প্রেরণা যোগা‌বেন, তা‌দের‌কে আত্মপ্রত্যয়ী ক‌রে গ‌ড়ে তুল‌তে কাজ কর‌বেন।
অনুষ্ঠা‌নে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযু‌ক্তি বিশ্ব বিদ্যাল‌য়ের ক্যা‌রিয়ার ক্লা‌বের তিনজন সদস্য যথাক্র‌মে;মানসুরা , অনন্ত এবং তন্দ্রা ছি‌লেন রি‌সোর্স পার্সন। যারা গোটা সময়টাই শিক্ষার্থী‌দের মাতি‌য়ে রা‌খেন নানা জ্ঞান চর্চায়। শিক্ষার্থীরাও তা‌দের ম‌নের কো‌নে জ‌মে থাকা নানা প্রশ্ন ক‌রে উত্তর খোঁ‌জে পায় সেখান থে‌কে।
শত শিক্ষার্থীর জমজমাট আস‌রে প্রধান অ‌তি‌থি বি‌শিষ্ট শিক্ষা‌বিদ ড, ক‌বির চৌধুরী ব‌লেন, ড. কবির চৌধুরী এডুকেশন গাইড কর্মসূচিকে সময়োপযোগী বাস্তবমুখি পদক্ষেপ আখ্যায়িত করে বলেন, বিশ্বেও বিভিন্ন দেশে শিক্ষার্থীদের নিয়ে এরকম কর্মসূচি পালিত হয়।

সিলেটের সন্তান যোবায়ের আহমদের এ  ব্যতিক্রমি-সেবাধর্মী উদ্যোগ বলে তিনি মন্তব্য করেন। ড. কবির চৌধুরী বলেন, অনেকে অনেক ধরণের সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। কিন্তু যোবায়েরের এ চিন্তা নতুন এবং বাস্তবমুখি। যা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত ভিতকে মজবুত করবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকলে শিক্ষার্থীদের মাঝে নিজেকে গড়ার আগ্রহ বাড়বে। শিক্ষাক্ষেত্রে আলোড়ন সৃষ্টি হবে। শিক্ষার্থীরা ভালো রেজাল্ট করবে। ঝরে পড়ার হার কমবে। তিনি এর সফলতা কামনা করেন।