জেনে নেই রামাদ্বানে যে আমলগুলো বেশি বেশি করতে উৎসাহিত করা হয়েছে

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

মে ০১ ২০২০, ২২:১৮

হাফিয মাওলানা আবদুল কাদির আল মাহদি:

প্রিয় পাঠক! কঠিন সময়ের ভিতর দিয়ে রামাদ্বান চলে যাচ্ছে।এই রামাদ্বান হচ্ছে আমলের মৌসুম। শরীরিক পুষ্টি যোগাতে যেমন মৌসুমি ফল দরকার তেমনি আধ্যাত্মিক পুষ্টি হচ্ছে নেক আমল। মৌসুমি ফল খেলে আমাদের শরীর তরতাজা থাকে, শরীরে শক্তি অনুভূত হয়। রামাদ্বানে এক মাস এবাদত করলে বাকি এগারো মাস স্প্রিচুয়ালি সতেজ থাকা সম্ভব হয়। কাজেই আসুন! জেনে নেই কোন কোন আমলগুলো বেশি করে করা যায়।

এক. কোরআন তেলাওয়াত। রামাদ্বানের পরিচয় দেয়া হয়েছে কোরআনের মাস হিসেবে। আল্লাহ তা’আলা বলেন

“রামাদ্বান মাসই হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী”। (আল কোরআন ২/১৮৫)

এ মাসে অধিক পরিমান কোরআন তেলাওয়াত করা একজন মুসলমানের জন্য জরুরী। কেনা রাসুল (সা) স্বয়ং এ মাসে কোরআন তেলাওয়াত করতেন। এমনকি জিব্রাঈল (আ) এর সাথে কোরআনের হালক্বা করতেন।

আবু হুরায়রা (রা) বলেন, প্রতি বছর জিব্রাঈল (আঃ) নবী (সা)- এর সঙ্গে একবার কুরআন মাজীদ শোনাতেন ও শুনতেন। কিন্তু যে বছর তাঁর ওফাত হয় সে বছর তিনি রসুল (সা)- কে দু’বার শুনিয়েছেন। প্রতি বছর নবী (সা) রমাযানে দশ দিন ই’তিকাফ করতেন। কিন্তু যে বছর তাঁর ওফাত হয় সে বছর তিনি বিশ দিন ই’তিকাফ করেন।(সহিহ বুখারী)

দুই. বেশি বেশি দান সদকা করা। এ মাসে বেশি বেশি দান সদকা করতে বলা হয়েছে। এ মাসে সদকাকে উত্তম সদকা হিসেবে গণ্য করা হয়। রাসুল (সা) ঝড়ের মতো দান সদকা করতেন ।

ইবনু আব্বাস (রা) বলেন, নবী (সা) কল্যাণের কাজে ছিলেন সর্বাধিক দানশীল, বিশেষভাবে রমাযান মাসে। (তাঁর দানশীলতার কোন সীমা ছিল না) তিনি কল্যাণের জন্য প্রবাহমান বায়ুর চেয়েও বেশি দানশীল হতেন।(সহিহ বুখারী)

তিন. বিশেষ বিশেষ সময় দু’আর আমল করা। এ মাসে বেশি বেশি দু’আর আমল করতে ভিবিন্ন হাদিসে বালা হয়েছে। বিশেষত সেহরির ও ইফতারের সময়। এ দু’সময়ে দু’আ কবুল হয়।

চার. মাসে আরও চারটি কাজ বেশি বেশি করে করতে একটি হাদিসে রাসুলেপাক (সা) এর নির্দেশ এসেছে।

“রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন, ‘এই রামাদ্বান মাসে তোমরা ৪টি কাজ বেশি বেশি কর-দুটি কাজ তোমাদের প্রতিপালকের জন্য করবে। এ দুই কাজে তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হবে। আরও দুটি কাজ নিজেদের জন্য করবে। এ দুই কাজ এমন যা না করে তোমাদের কোনো উপায় নেই।”

প্রতিপালকের জন্য দুটি কাজ হচ্ছে

– বেশি বেশি কালেমা শাহাদাত ‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পড়া। আর্থাৎ (لا اله الا الله) লাইলাহা ইল্লালাহর জিকির বেশি বেশি করা

– আল্লাহর কাছে বেশি বেশি ইস্তেগফার করা। ইস্তেগফারের বাক্য হচ্ছে যেমন

‎استغفر الله ان الله غفور الرحيم

অথবা استغفر الله و اتوب اليه

আর নিজেদের জন্য যে দুই কাজ করতে বলা হয়েছে। তা হচ্ছে

– আল্লাহর কাছে জান্নাত প্রার্থনা করা। যেমন

‎اللهم أني أسالك الجنة

– জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি চাওয়া।যেমন

‎الهم أجرني من النار

অথবা

اللهم اني اعوذ بك من النار

এ সহজ চারটি কাজ চাইলে আমরা হাঁটতে, বসতে যে কোন অবস্থায় করতে পারি।

পাঁচ. বেশি বেশি নফল নামাজ পড়া। এ মাসের বিশেষ আমল হচ্ছে তারাবিহ তাহাজুদ সহ আরও এক্সটা নফল নামাজ পড়া। হাদিসে আছে রাসুল (সা) এ মাসে দীর্ঘক্ষণ নামাজে দাডিয়ে থাকতেন। লম্বা লম্বা ক্বেরাত দিয়ে নামাজ পড়তেন। যার দরুন তার পা সমূহ ফুলে যেতো।

আসুন মুসলমান ভাইরা! এবারের রামাদ্বান আমল দিয়ে সুন্দর করি। আল্লাহপাক আমাদের টাইমকে বেশি বেশি কাজে লাগানোর তৌফিক দিন। আমিন