জমে উঠেছে সিলেটের ফুটপাত

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জুন ০৯ ২০১৮, ২০:৫৮

রুহিন আহমেদঃ পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মার্কেট-শপিং মল আর বিপনীবিতানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নগরীর ফুটপাতগুলোতেও মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে কেনাবেচা। সিলেট নগরীর ক্রিনব্রিজ মোড় থেকে শুরু করে জিন্দাবাজার,বন্দর বাজার,চৌহাঠ্রা পয়েন্টসহ ফুটপাতগুলো এখন রীতিমতো মিনি মার্কেটে পরিণত হয়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের শেষ ভরসাও এই ফুটপাত। স্বল্প দামে ও সাধ্যের মধ্যে পছন্দের পোশাক পাওয়া যায় বলে ফুটপাতের দোকানে ছুটে আসেন স্বল্প আয়ের লোকজন।

ফুটপাতের দোকানগুলোর জন্য কোন ভাড়া দিতে হয় না। ক্রেতাদের দৃষ্টি আর্কষনের জন্য নেই কোন আলোর সৌন্দর্য, ঝলকানি ও কর্মচারী। ফলে স্বল্প লাভে ফুটপাতের বিক্রেতারা ক্রেতাদের দরদামে পোশাক দিয়ে থাকেন। ক্রেতারাও সাচ্ছন্দে নিয়ে থাকেন দুধের সাধ ঘোলে মেটানোর জন্য।

শপিংমলে দাম বেশি হওয়ায় নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষরা ছেলে মেয়েদের জন্য ঈদের পোশাকসহ প্রয়োজনীয়
পণ্য কিনতে ফুটপথকেই বেছে নিয়েছেন।

জাঁমজমকপূর্ণ আলো ঝলমলে মার্কেটে পোশাকের দাম আকাশচুম্বী হওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষদের একমাত্র ভরসা এই ফুটপাত।
নামীদামী শপিংমলে কেনাকাটার ইচ্ছা থাকলেও সামর্থ্য না থাকায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ফুটপাতের দোকানে ছুটছেন নগরীর অনেক মানুষ। নিজেদের আদরের ছেলেমেয়ে বা প্রিয়জনকে ঈদের পোশাকসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য পণ্য কিনে দেন এই ফুটপাত থেকে।

ফুটপাতের দোকানগুলোতে মুলত ছেলেদের পাঞ্জাবি,শার্ট, টি-শার্ট, প্যান্ট, বেল্ট, লুঙ্গি, টুপি, সুগন্ধি থেকে শুরু করে মেয়েদের শাড়ি, ঘড়ি, থ্রি-পিস, টু-পিস, সিঙ্গেল
কামিজ, রেডিমেড কামিজ, টপস, টাইটস, গজ কাপড়, বিভিন্ন ধরনের অর্নামেন্টস, কসমেটিকস, বাচ্চাদের পাঞ্জাবি, থ্রি- পিস, ফ্রক, স্কার্ট, প্যান্ট, গেঞ্জি, বড়-ছোট সবার জুতা, স্যান্ডেল, চশমাসহ প্রায় সব কিছুই পাওয়া যাচ্ছে ।

ফুটপাতে মান ভেদে একটি পাঞ্জাবী পাওয়া যাচ্ছে ২৫০ থেকে ৮-৯শ টাকায়। শার্ট ২শ থেকে ৭-৮শ টাকা, প্যান্ট ৩শ টাকা থেকে শুরু করে হাজার-১২শ টাকা, টি শার্ট ২শ টাকা থেকে ৩-৪শ টাকায় বিক্রিী হচ্ছে বলে জানালেন কয়েকজন ক্রেতা বিক্রেতা। বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরনের নিমা-শার্ট-ফতোয়া প্যান্ট ইত্যাদিও বেশ ভালোই বিক্রি হচ্ছে। দাম ১৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা। জিন্দাবাজার সোনালি ব্যাংকের সামনে বসে গত ১-৫ বছর থেকে শার্ট-প্যান্ট বিক্রি করছেন হাবিব মিয়া,তিনি জানান, ‘ভালাও বেচরাম ভাই আরো কয়েকদিন আর ভালা ব্যাবসা অইব।। ক্রেতা মাহাবুব হোসেন জানান, আমরা নিন্ম আয়ের মানুষ। বড় দোকান গুলো থেকে আমার পক্ষে প্যান্ট কেনা সম্ভব নয়। এজন্য

ছেলেকে এখানে নিয়ে এসেছি প্যান্ট কিনতে। ছেলের পছন্দমতো ২৫০ টাকা দিয়ে জিন্স প্যান্ট কিনে দিলাম।

ফুটপাতের দোকানদার শাকিল হোসেন জানান, আমরা নিজেরাই ব্যবসা করি। কোন কর্মচারী রাখার দরকার হয়না। আমরা স্বল্প লাভে অন্য দোকানের তুলনায়
কম দামে পোশাক বিক্রি করতে পারি। রমজানের শুরু থেকেই বিক্রি বেশ ভালো হচ্ছে। তবে বেচা বিক্রি আরো বাড়বে। দোকানদার আলাউদ্দিন জানান, শুধু নিন্ম আয়ের নয় মধ্যবিত্তরাও আসেন” আমাদের দোকানে। দাম একটু কম পাওয়া ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দে নিতে পারেন।

তিনি আরো জানান, বড় বড় দোকানে পোশাকের দাম অনেক বেশি থাকে। কর্মচারী, আলোর ব্যবস্থা, দোকান ভাড়া সবদিক দিয়ে তাদের অনেক দাম রাখতে
হয়। ফলে নিন্ম আয়ের লোকজনের পক্ষে কেনা সম্ভব হয়না।