ছাত্রলীগ নেতার খুনের নেপথ্যে পরকীয়া!

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

ডিসেম্বর ০৮ ২০১৮, ০২:১৫

পরকীয়ার দ্বন্দ্বের জেরে বনানীতে ছাত্রলীগ নেতা তানজিল হোসেন রাকিব নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন বলে ধারণা পুলিশের। খুনের সঙ্গে জড়িত একজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে। তবে পরিবারের দাবি, স্থানীয় সজিব অনেক দিন ধরেই রাকিবকে হুমকি দিয়ে আসছিল। গত রমজানে বনানী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিল রাকিব। সজিব ও জসিমসহ কয়েকজন এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে মনে করছেন পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় নিহতের বাবা আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে সজিব এবং জসিমসহ অজ্ঞাত ৫-৬ জনের নামে মামলা করেন।

বনানী থানার ওসি (অপারেশন) সায়হান ওলিউল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, হত্যার পেছনে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কোনো তথ্য এখনও মেলেনি। পূর্বশত্র“তার জেরে রাকিব খুন হয়ে থাকতে পারে। সম্ভাব্য তিন কারণ সামনে রেখে মামলার তদন্ত চলছে।

বৃহস্পতিবার রাতে বনানীর কল্যাণ মাঠ থেকে ব্যাডমিন্টন খেলা শেষে বাসায় ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে খুন হন রাকিব। এ সময় আহত হন নুর ইসলাম নামের একজন। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে বনানীর টিঅ্যান্ডটি কলোনির বড় মসজিদে জানাজা শেষে রাকিবের লাশ দাফনের জন্য গ্রামের বাড়ি বরিশালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে প্রেমঘটিত কারণে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। অত্যন্ত নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে রাকিবকে। ইতোমধ্যে সন্দেহভাজন একজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবেশী সজিবের স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল রাকিবের। এ নিয়ে সজিবের সঙ্গে রাকিবের দ্বন্দ্ব ছিল। সজিব বিষয়টি জানতে পেরে তার স্ত্রীকে তালাক দেন। স্ত্রীর সঙ্গে রাকিবের পরকীয়া মেনে নিতে না পেরেই পরিকল্পিতভাবে তাকে খুন করেছে সজিব।

ভাইকে হারিয়ে শুক্রবার দুপুরে টিঅ্যান্ডটি কলোনিতে রাকিবদের টিনশেড বাসায় আহাজারি করছিলেন বোন দোলন। তিনি বলেন, সজিব ও জসিমসহ কয়েকজন আমার ভাইকে হত্যা করেছে। সজিবকে গ্রেফতার করা হলে পুরো ঘটনা জানা যাবে।

বনানী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আখতারুজ্জামান বলেন, রাকিব বনানী ১৯ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি। আগেও সে এই ওয়ার্ডের সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করেছে। সে খুব ভালো ছেলে। আমার জানা মতে তার কোনো রাজনৈতিক শত্র“ ছিল না। তবে কী কারণে কারা তাকে হত্যা করেছে, তা বুঝতে পারছি না।

নিহতের সহপাঠীরা বলেন, শুক্রবার ছিল রাকিবের ২৭তম জন্মদিন। সব বন্ধুরা মিলে ওর জন্মদিন পালন করব ভেবেছিলাম। কিন্তু জন্মদিনের ঠিক আগের দিন নৃশংসভাবে তাকে হত্যা করা হল। রাকিব তেজগাঁও কলেজ থেকে বিবিএ পাস করেছে। এমবিএ করার জন্য তিতুমীর কলেজে আবেদন করেছিল। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রাকিবের বাবা আলতাফ হোসেন টিঅ্যান্ডটির লাইনম্যান ছিলেন। তাদের গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলায়।