ছাতক সড়কে বাঁশ ফেলে ১০ঘন্টা অবরোধের পর কতৃপক্ষের আশ্বাসে অবরোধ স্থগিত

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

এপ্রিল ০৯ ২০১৯, ০৬:৫৭

 

ছাতক শহরে ভাঙ্গা রাস্তা ও ড্রেনে সংস্কারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। ৮ এপ্রিল সোমবার সকাল ৮টা থেকে স্থানীয় এলাকাবাসী অনির্দিষ্টকালের জন্য কোর্ট রোড এলাকায় বাঁশ ফেলে সড়ক অবরোধ করেন।

অবরোধের ফলে কোর্ট রোড হয়ে সুনামগঞ্জ জেলা সদরসহ দোয়ারাবাজার উপজেলায় যাতায়াতকারি বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে উপজেলার প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারি, ছাতক সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে আসা সাধারণ মানুষ, বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ সাধারন মানুষ।

এছাড়া অবরোধের কারণে সড়কের দু’পাশের্^ আটকা পড়ে লাফার্জ সিমেন্ট কোম্পানী, আকিজ ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন কোম্পানীর মালামাল বহনকারি শতাধিক ট্রাক ও লড়ি। ছোট-বড় খানা-খন্দে ভরপুর সড়কটি সংস্কারের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌরসভার মেয়র বরাবরে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে পৃথক দুটি লিখিত আবেদন করা হয়েছিল।

আবেদনের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময়ে সড়ক ও ড্রেন সংস্কারের আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত কোন প্রকার কার্যকরি প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেন নি কর্তৃপক্ষ। এতে স্থানীয় বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী বাধ্য হয়েই কোর্ট রোড এলাকায় সড়ক অবরোধের ডাক দেন। এসময় এলাকাবাসীর সাথে সাবেক পৌর কমিশনার রজনু আহমেদ, ৬নং ওয়ার্ডের বর্তমান পৌর কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন সুমেন, মহিলা কাউন্সিল তাসলিমা জান্নাত কাকলী, ছাতক দলীল লেখক সমিতির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন তালুকদার, সাবেক সাধারন সম্পাদক ছাদেক আহমদসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা একাত্ততা ঘোষনা করেন।

অবরোধ ও বিক্ষোভে কোর্ট রোড এলাকার বিশিষ্ট মুরব্বি ও ব্যবসায়ি নুরু মিয়া তালুকদার, মখছুদুল হক মাস্টার, আবদুল আউয়াল, আলা উদ্দিন, বাবুল মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হান্নান, সুলেমান মিয়া, ফররুখ আহমদ, নুরুল ইসলাম, তারেক আহমদ, আবদুর রহিম, আবদুল খালিক, নজির মিয়া, বাকি বিল্লাহ, মুরাদ আহমদ, রঞ্জন কুমার দাশ, রেদুয়ান আহমদ, ফখরুল আলম, সুমন মিয়া, আইয়ুব আলী, আবদুস চোবহান, নুরুল হক, জাকারিয়া মিয়া, ফুল মিয়া, আবদুস শহিদ, মামুন মিয়া, বাধশা মিয়া, আবদুল হেকিম, লাল মিয়া, মনির মিয়া, জাহাঙ্গির মিয়া, আলমগীর হোসেন, সোহেল মিয়া, তুহিন মিয়া, সাকিব আহমদ, মমশর আলী, তেরাব আলী, মুশাহেদ আলী, আকল মিয়া, সোহাগ মিয়াসহ কোর্ট রোড এলাকায় বসবাসরত নারী-পুরুষ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
অবরোধ ও বিক্ষোভকারিরা জানান, গ্রেজেটে প্রথম শ্রেনীতে উন্নিত ছাতক পৌরসভা এলাকার লোকজন নিয়মিতই সকল ট্যাক্স পরিশোধ করছে।

এ সড়কে লাফার্জ-হোলসিম কোম্পানী, আকিজ ফ্যাক্টরি, শাহ সিমেন্ট কোম্পানীর সিমেন্টভর্তি ভারি যারবাহন চলাচল করার কারনে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ প্রতিদিনই গাড়ি থেকে হাজার হাজার টাকা টোল আদায় করছেন। কিন্তু সড়ক মেরামতের ব্যাপারে কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করায় অবরোধকারি নেতৃবৃন্দরা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, কোর্ট রাস্তা ও ড্রেনেজ মেরামতসহ বিভিন্ন দাবিতে গেল ৩০ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং একই দাবিতে ২৯ জানুয়ারি পৌর মেয়র বরাবরে স্থানীয় নুরু মিয়া তালুকদারসহ এলাকাবাসী স্বাক্ষরিত পৃথক দু’টি লিখিত আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আবেদনের দুই মাসের অধিক সময় অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত কার্যকরি কোন প্রদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না কর্তৃপক্ষ। তারা আরো বলেন, ৩/৪ বছর পূর্বে এ সড়কটির সংস্কার কাজ করা হলে কিছুদিন যেতে না যেতেই লাফার্জ সিমেন্ট কোম্পানী, আকিজ ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন ফ্যাক্টরির অধিক মালবোঝাই ট্রাক-লড়িসহ ভারি যানবাহন চলাচলের কারণে রাস্তাটির ঢালাই ভেঙ্গে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তায় ঢালাই কাজে ব্যবহৃত রড বের হয়ে যাওয়ায় প্রতি নিয়তই ছোট বড় দূর্ঘটনা ঘটছে। ভাঙ্গা এ রাস্তায় ভারি যানবাহন চলাচলের কারণে কম্পনসহ বিভিন্ন বাসা-বাড়ির দেয়াল ফাঁটল সৃষ্টি হয়েছে। শুস্ক মৌসমে ধূলাবালি এবং বর্ষা মৌসুমে ময়লা আবর্জনাকৃত কাঁদায়, রাস্তায় চলাচলকারি ছাতক সরকারি কলেজ, ট্রেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, উপজেলায় বিভিন্ন কাজে আসা সাধারন মানুষসহ স্থানীয় বাসিন্ধাদের প্রতিনিয়ত চরম দূভোর্গ পোহাতে হচ্ছে। এতে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষজন।

এদিকে সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত টানা ১০ঘন্টা অবরোধ করার পর পৌর মেয়র আবুল কালাম চৌধুিরর পক্ষে পৌর সভার প্যানেল মেয়র, ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তাপস চৌধুরি এবং প্রশাসনের পক্ষে ছাতক থানার ওসি আতিকুর রহমানের হস্তক্ষেপে সন্ধায় অবরোধ স্থগিত করে নেন অবরোধকারি এলাকাবাসী।

অবরোধকারি নেতা নুরু মিয়া তালুকদার, মাষ্টার মখছুদুল হক ও বাবুল মিয়া জানান, সন্ধা ৫টা ৫০ মিনিটে প্রশাসনের পক্ষে ছাতক থানার ওসি আতিকুর রহমান ও মেয়র আবুল কালাম চৌধুিরর পক্ষে পৌর সভার প্যানেল মেয়র তাপস চৌধুরি সন্ধায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সৃষ্ট সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিলে তাৎকনিক অবরোধ স্থগিত করা হয়।