গভীর রাতে নির্বাচন কর্মকর্তার বাড়ি থেকে আ.লীগ নেতা আটক

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুন ১৯ ২০২৩, ১২:০৬

রাজশাহীতে নির্বাচন কর্মকর্তার বাড়ি থেকে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমন। তিনি রাতের আঁধারে নির্বাচন কর্মকর্তার বাড়িতে প্রবেশ করেন। খবর পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লোকজন ওই বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। রবিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে পুলিশ ওই বাড়ি থেকে লিমনকে থানায় নিয়ে যায়।

লিমনের মামা রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুল হামিদ সরকার টেকন।

নগরীর সাগরপাড়া এলাকার ওই বাড়িতে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেন ভাড়া থাকেন। লিমনকে সেখান থেকে বের করে রাত ১২টার পর পুলিশ তল্লাশি শুরু করে। ঘেরাওকারীরা দাবি করেছেন, লিমন নির্বাচন কর্মকর্তার বাড়িতে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ঢুকেছেন। কিন্তু পুলিশ কর্তৃক টাকা উদ্ধারের কথা জানা যায়নি।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা মীর ইসতিয়াক আহমেদ লিমন তার মামা কাউন্সিলর প্রার্থীর আব্দুল হামিদ সরকার টেকনের পক্ষে অবস্থান নিতে নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেনকে ম্যানেজ করতে যান। লিমন টাকার ব্যাগ নিয়ে নির্বাচন কর্মকর্তার বাড়িতে ঢুকেছেন– এমন খবরে স্থানীয় লোকজন ওই নেতাকে সেখানে আটকে রাখেন।

পরে খবর পেয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও। এরপর সেখানে যান পুলিশ ও প্রশাসনের লোকজনও। খবর পেয়ে লিমনের বাবা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর ইকবালসহ পরিবারের সদস্য এবং তার সমর্থকরা সেখানে আসলে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি শুরু হলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাসিক দত্ত বলেন, ‘রাত সাড়ে ১০টার দিকে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমন এবং অপরিচিত আরেকজন একটি ব্যাগ নিয়ে নির্বাচন কর্মকর্তার বাড়িতে প্রবেশ করেন। এলাকাবাসী বুঝতে পেরে বাড়িটি ঘেরাও করলে অপরিচিত ওই ব্যক্তিটি ব্যাগ নিয়ে কৌশলে চলে যান। এরপর লিমন আটকা পড়েন।’

তবে টাকা লেনদেনের কথা অস্বীকার করেছেন নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেন। তিনি দাবি করেন, ‘লিমন নির্বাচনের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে এসেছিলেন। তার সঙ্গে কোনও টাকাপয়সার লেনদেন হয়নি।’ এত রাতে আওয়ামী লীগ নেতা লিমন কেন আপনার বাড়িতে? এমন প্রশ্নে করলে তিনি কোনও উত্তর দেননি।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনকে কয়েকবার ফোনে করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, ‘রাজশাহী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেনের বাড়ি থেকে আওয়ামী লীগ নেতা লিমনকে আটক করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। কেন তিনি ওই নির্বাচন কর্মকর্তার বাড়িতে গিয়েছিলেন তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত জানা যাবে।’