খেলাফত মজলিসের সিলেট বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুলাই ২২ ২০২৩, ১৭:৫১

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া এদেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই – ড. আহমদ আবদুল কাদের


খেলাফত মজলিসের মহাসচিব,বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে দলীয় সরকারের অধিনে নির্বাচনের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। যখন যারা ক্ষমতায় ছিল, এদেশের নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট করেছে। নিজেদের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে সম্ভব সব রকম চেষ্টা করেছে। অপরদিকে দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলো জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছে। সুতরাং সংবিধানের দোহাই দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবী উড়িয়ে দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। আপনারাই গায়ের জোরে সংবিধান পরিবর্তন করেছেন। তাই জাতির প্রয়োজনে আবারো সংবিধান সংশোধন করে নিরপেক্ষ সরকার অথবা জাতীয় সরকার কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকার যে নামেই হোক তা সংবিধানে প্রতিস্থাপন করতে হবে। বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া এদেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই।”

তিনি আজ বিকেলে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি সহ ৮ দফা দাবিতে সিলেট নগরীর রিজেস্টারী মাঠে অনুষ্ঠিত খেলাফত মজলিস সিলেট বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন।

ড. আহমদ আবদুল কাদের আরো বলেন, “নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ সরকারের প্রথম দায়িত্ব হবে, সকল পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনকে ঢেলে সাজানো এবং জনপ্রশাসনকে নিরপেক্ষ অবস্থানে নিয়ে আসতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ। এছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন সবার কাছে অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন বলে গণ্য হবে না।”

ড. আহমদ আবদুল কাদের আরো বলেন, “দেশকে সংঘাতের দিকে নিয়ে যাবেন না। মিছিলের মোকাবেলায় মিছিল দিয়ে দেশে শান্তি আনা যাবে না।”

তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, “দয়া করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনুন। নিরপেক্ষ সরকার গঠন না করে জোর করে পাতানো নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতায় আবারো আসতে চাইলে বিপর্যয় দেখা দেবে। আপনারা নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে জাতিকে মুক্তি দিন। ”

তিনি জুনিয়র চিকিৎসক ও বেসরকারি শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, “তাদের দাবী মেনে নেন। গায়ের জোরে চিকিৎসক-শিক্ষকদের দাবি অগ্রাহ্য করে তাদের রুটি-রুজিকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেবেন না। ”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের নায়েবে আমীর প্রিন্সিপাল হাফিজ মাওলানা মজদুদ্দিন আহমদ বলেন, “যে গণতন্ত্রের জন্য দেশ স্বাধীন হয়েছিল সেই গণতন্ত্র আজ কোথায়! গণতন্ত্রে ভোটের আগের রাতে ভোট বাক্স ভর্তির কোন কথা আছে? বিনা ভোটে ১৫৪ জন সংসদ সদস্য নির্বাচন কোন তন্ত্রে আছে?”

তিনি বলেন, “দেশের ১৮ কোটি মানুষের ইচ্ছা একবার পুরণের সুযোগ দিন। দেখবেন কার জনপ্রিয়তা কতটুকু? সূতরাং একবার নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে দেখুন। সেই ভোটে যদি আপনি পুন:নির্বাচিত হয়ে আসেন, আমাদের কোন আপত্তি থাকবে না।”

তিনি আরো বলেন, “আলেম-উলামাকে ডাণ্ডা বেড়ি দিয়ে যেভাবে অপদস্থ করছেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে যেভাবে হয়রানি করছেন-আপনি পার পেতে পারেন না। অবিলম্বে আলিমদেরকে মুক্তি দিন।”

সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ মুনতাসির আলী বলেন, “সিলেট বিভাগের ঘরে ঘরে খেলাফতের দূর্গ গড়ে তুলুন। জনগণের ন্যায্য দাবি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবীতে জনগণকে সংগঠিত করুন।” তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে খেলাফত মজলিসের ৮ দফা দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, রাজনৈতিক দলসমূহের সভা সমাবেশ করতে পুলিশের অনুমতির বিষয়টি আমাদের রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করার শামিল। সুতারাং সভা সমাবেশ করার অবাধ সুযোগ নিশ্চিত করুন।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুগ্ম মহাসচিব এবিএম সিরাজুল মামুন বলেন, “দেশের বর্তমান সংকটের প্রেক্ষিতে খেলাফত মজলিসের ৮ দফা এ জাতির মুক্তির দফা। আজ পণ্যমূল্য বাড়িয়ে মানুষের জীবনকে অসহনীয় করে তোলা হয়েছে। আমরা যে অধিকারের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম, সেই অধিকার হরণ করা হয়েছে।”

তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “গোটা জাতি আপনার অধীনে নির্বাচন মানবে না। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে জনগণের এই অনাস্থার জন্য আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি সমানভাবে দায়ী। তাই দলীয় সরকারের অধীনে এদেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়।

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, দলের নায়েবে আমীর প্রিন্সিপাল হাফিজ মাওলানা শায়খ মজদুদ্দিন আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব এবিএম সিরাজুল মামুন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলানা শামসুজ্জামান চৌধুরী, কেন্দ্রীয় যুব বিষয়ক সম্পাদক ও ইসলামী যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব এডভোকেট তাওহীদুল ইসলাম তুহিন, কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য হাফিজ মাওলানা নূরুজ্জামান, সৈয়দ মুহিবুর রহমান, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিলাল আহমদ চৌধুরী ও শ্রমিক মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ আবদুল করীম।

সিলেট জেলা সহ সভাপতি মাওলানা মুখলিছুর রহমান, মহানগর সহ সভাপতি কেএম মামুন, জেলা সেক্রেটারী মাওলানা দিলওয়ার হোসাইন ও মহানগর সেক্রেটারী হাফিজ মাওলানা জাবেদুল ইসলাম চৌধুরীর যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য অধ্যক্ষ আবদুল হান্নান, সিলেট জেলা সভাপতি মাওলানা নেহাল আহমদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও সুনামগঞ্জ জেলা সিনিয়র সহ সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন মোহন, সিলেট মহানগর সভাপতি মাওলানা তাজুল ইসলাম হাসান, হবিগঞ্জ জেলা সভাপতি মাওলানা হুসাইন নূরী চৌধুরী, সুনামগঞ্জ জেলা সহ সভাপতি মাওলানা ছদরুল আমীন, মৌলভী বাজার জেলা সহ সভাপতি মাওলানা ফখরুল ইসলাম, সৌদী আরব আবহা শাখার সভাপতি শায়খ মাওলানা আবদুল হান্নান, যুক্তরাজ্য শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এনামুল হাসান ছাবির, রিয়াদ মহানগর শাখার সভাপতি মাওলানা আবুল হোসাইন, কাতার শাখার সভাপতি মাওলানা আবদুল হাসিব চৌধুরী,সিলেট মহানগর সহ সভাপতি মাওলানা শাহ আশিকুর রহমান, মাওলানা কারী সিরাজুল ইসলাম, সিলেট জেলা সহ সভাপতি মাওলানা শামসুদ্দিন মুহাম্মদ ইলয়াস, বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা সৈয়দ আলী আসগর, মৌলভী বাজার জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শামসুল ইসলাম, সুনামগঞ্জ জেলা সেক্রেটারী মাওলানা আখতার হোসেন, রিয়াদ মহানগর সভাপতি মাওলানা আবুল হোসাইন, জেদ্দা মহানগর শাখার উপদেষ্টা মাওলানা হাবীবুর রহমান রাজাগঞ্জী, সেক্রেটারী মাওলানা শামসুজ্জামান গণী, সিলেট সদর হাটখোলা ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা কেএম রফিকুজ্জামান, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিস শাবিপ্রবি সভাপতি জাকারিয়া হুসাইন জাকির, সিলেট মহানগর সভাপতি লিটন আহমদ জুম্মান,সিলেট পূর্ব জেলা সভাপতি রুহুল আমীন, সিলেট পশ্চিম জেলা সভাপতি ইমদাদুল হক ইমরান,হবিগঞ্জ জেলা সভাপতি মুহাম্মদ শাহাব উদ্দিন, সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি শাহ কামাল সাজু, মৌলভী বাজার জেলা সভাপতি আমিনুল ইসলাম ও মৌলভীবাজার শহর সভাপতি আশরাফ উদ্দিন শাফি প্রমূখ।