কোনো পক্ষই টঙ্গী মাঠে অবস্থান করতে পারবে না -দু’গ্রুপের বৈঠকে সিদ্বান্ত

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

ডিসেম্বর ০১ ২০১৮, ১২:৩১

তাবলীগ জামাতের দু’গ্রুপের মুরুব্বীদের সাথে বৈঠক করেছেন গাজীপুর সিটি মেয়র অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম। তিনি ঘটনাস্থলে এসে মুন্নু শাহী জামে মসজিদে বৈঠক করেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কোনো পক্ষই ময়দানে অবস্থান করতে পারবে না।

টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে শনিবার সকালে দু’গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরমাওলানা সা’দ আহমাদ কান্ধলভী ও মাওলানা যোবায়ের আহমেদপন্থীদের নিয়ে বৈঠকে বসেন গাজীপুর সিটি মেয়র অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম।

এছাড়া শনিবারের মধ্যেই ময়দান খালি করে দেবেন। পরে মাওলানা সা’দপন্থী মুরব্বি মাওলানা আশরাফ আলী ও মাওলানা যোবায়ের আহমেদপন্থী মুরব্বি মুফতি নূরুল ইসলাম ময়দানে গিয়ে মাইকে সবাইকে ময়দান ছাড়ার নির্দেশ প্রদান করলে মুসল্লিরা শান্ত হয় এবং ময়দান ত্যাগ করেন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ওয়াইএম বেলালুর রহমান, জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা মাজহারুল ইসলাম প্রমুখ।

মুসল্লিরা জানান, গত ৩০ নভেম্বর শুক্রবার থেকে ইজতেমা উপলক্ষে মাঠ তৈরির জন্য ওয়াজাহাতি জমহুর উলামাদের গ্রুপ অবস্থান করছিলেন। শনিবার ভোরে মাওলানা সাদপন্থী গ্রুপ মাঠ দখল করতে আসলে দু’পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ হয়।

শনিবার সকালে মাওলানা সা’দপন্থীরা ইজতেমা ময়দানে গেলে ময়দানের প্রতিটি গেটে তালাবদ্ধ দেখতে পেয়ে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। একপর্যায়ে সা’দপন্থীরা ময়দানের গেট ভেঙে ঢোকার চেষ্টা করলে উভয়পক্ষের মুসল্লিদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। একপর্যায়ে তারা গেট ভেঙে ময়দানে প্রবেশ করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

সংঘর্ষে মুন্সিগঞ্জের মিরকীপাড়া গ্রামের ইসমাইল মণ্ডল (৭০) নামে এক মুসল্লির মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এছাড়া উভয়পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও লাঠিসোঁটা দিয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে রিয়াজুল ইসলাম (৩৫), রিফাত হোসেন (১৯), মতিউর রহমান (৪৩), ওমর ফারুক (৩৪), রাজু আহমেদ(৪৪), ইমান আলী (৩৭), জালাল খাঁ (৪৩), মো. সাইফুল ইসলাম (৪০), মাওলানা তাওহিদুল ইসলাম (৫৫), হাফেজ আবু বক্কর (৩৫), মো. গোলাম কিবরিয়া (৪২), মো. জুয়েল (১৮), হাজী মো. রেজাউল করিম (৪৫), আশ্রাফুল ইসলাম ((১৮), মতিউর রহমান (৪৫), মাহমুদ হোসেন (৩৪), শামীম আহমেদ (৩২), মনিরুল ইসলাম (২৩), মানিক হোসেন (৩৩), মো. দাউদ হোসেন (৪০), তাহের আলী (৩৭), আবু নাঈম(২৩), নজরুল ইসলাম (৪৪), আবুল কালাম আজাদ (৪৫), মো. কামরুজ্জামান (৪৩), জহিরুল ইসলাম(৩৪), কামাল খাঁ (৪৫), মাহবুবু হোসেন (২৫), রোস্তম আলী (৪৪), রাশেদ মিয়া (২৭), আবদুর রব (৩৩), আব্দুল হামিদ (৩৬), মাহফুজুর রহমান (৫৩), মুরাদ হোসেন (৪৬), শহিদুল ইসলাম (৪৫), রিফাত হোসেন (২০), রাশেদুল ইসলাম (২৫), হযরত আলীসহ (৩৭) অন্তত ৫০০ মুসল্লি আহত হয়ে টঙ্গী সরকারি হাসপাতাল ও আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ ঘটনায় ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি স্থানীয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উভয়পাশ, উত্তরা-হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, টঙ্গী-কামারপাড়া রোডে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।