কুলাউড়ার ঝুঁকিপূর্ণ দুটি রেলসেতুর উপর দিয়ে দৈনিক চলছে ২২টি ট্রেন

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুলাই ০৭ ২০১৯, ১৯:৩৩

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া ও লংলা রেল স্টেশনের মধ্যবর্তী স্থানে ফানাই নদী এবং রাউৎগাঁও ছড়ার ওপর অবস্থিত দুটি সেতুর অবস্থা বেশ নাজুক।

সেতুগুলোর নিচের গার্ডারের সঙ্গে কাঠের স্লিপার আটকানো থাকে। আর স্লিপারের ওপর বসানো থাকে রেল লাইন, যা আটকানো হয় ক্লিপ দিয়ে। পাশাপাশি দুটি রেলসেতুর অধিকাংশ কাঠের স্লিপার পচে নষ্ট হয়ে গেছে। সেখানে স্লিপার ও গার্ডার আটকানোর জন্য ব্যবহৃত বেশীর ভাগ নাটবল্টুও নেই। যে কয়টি আছে তা-ও নড়েবড়ে। হাত দিয়ে টানলেই খুলে যায়। কিছু কিছু জায়গায় রেললাইন আটকানোর ক্লিপও নেই। এই অবস্থার মধ্যেও ওই দুটি সেতু দিয়ে প্রতিদিন সিলেট, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও আখাউড়ায় ২২ টি ট্রেন আসা-যাওয়া করে।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাউৎগাঁও সেতুর দৈর্ঘ্য ১৫ ফুট। এতে কাঠের স্লিপার আছে মাত্র ৯টি। এরমধ্যে ৫ টি নষ্ট। প্রতিটি স্লিপারের দুই পাশে রেললাইনের সাথে ৮টি ক্লিপ থাকার কথা। কিন্তু কোনটিতে ৪টি অথবা কোনটিতে একেবারেই নেই। একটি আরেকটির সাথে যাতে যুক্ত হতে না পারে সেজন্য সেগুলোর ওপর কাঠের ফালি বসিয়ে পেরেক ঠুকে দেওয়া হয়েছে। ট্রেন যাতায়াতের সময় সেতুটি কেঁপে ওঠে।

রাউৎগাঁও সেতু থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে ২১৭ নম্বর ফানাই সেতু। এর দৈর্ঘ্য ৪৫ ফুট। সেতুটিতে ৫৮ টি কাঠের স্লিপারের ২৮টিই ক্ষয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। প্রায় অর্ধেক গার্ডার-সিল্পারের সংযোগস্থলে নাটবল্টু নেই। ৫৮টি স্লিপারে দুটি করে ১১৬টি ক্লিপ থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ৬০টি। এছাড়াও সেতুটিতে স্লিপারের জায়গা বাঁশের ফালি দিয়ে বসানো আছে।

রাউৎগাঁও গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষার্থী মাসহুদ আলম জানান, ‘ব্রিজটা (রাউৎগাঁও সেতু) ছোট। কিন্তু রিস্ক (ঝুঁকি) বড়। পর্যাপ্ত সুরক্ষা না থাকায় যেকোন সময় স্লিপার বা রেললাইন ডিসপ্লেস (সরে গিয়ে) হয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’

স্থানীয় ভাটুত্ব গ্রামের বাসিন্দা এলিম মিয়া ও নর্তন গ্রামের খন্দকার লুৎফুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি বেহাল। কিন্তু সংস্কার হচ্ছে না।’

সেতু দেখাশোনার দায়িত্ব রেলওয়ে পুরকৌশল বিভাগের। এব্যাপারে কুলাউড়া রেলস্টেশনের কাছে উর্দ্ধতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) মো. জুলহাসের কার্যালয়ে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি।

পুরকৌশল বিভাগের কি-ম্যানদের দলনেতা (রেলাইন দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি) সেবুল আলী জানান, ২১৬ ও ২১৭ নম্বর সেতুতে কিছু স্লিপার নষ্ট আছে। দু-চার বছর পরপর স্লিপার বদলানো হয়। নতুন স্লিপারের জন্য নোট দেওয়া হয়েছে। আর নাটবল্টু প্রতিদিনই চেক করা হয়। এরপরও সমস্যা থাকলে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।