একটি বাল্য প্রেম ও বাল্য বিয়ের গল্প

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

ফেব্রুয়ারি ০১ ২০২১, ১৪:৩২

সাইমুম সাদী

টি এস সি তে বসে চা খাচ্ছিলাম আয়েশ করে। দোকানদার বললো, গরুর দুধের চা। কিন্তু মুখে দিয়ে গরুর দুধের স্বাদ পাওয়া গেল না।

দুটো অল্প বয়েসী ছেলেমেয়ে এসে একটি লিফলেট ধরিয়ে দিল হাতে। ওখানে শিরোনামে লেখা, বাল্য বিয়েকে নিরুৎসাহিত করুন।

খেয়াল নেই, লিফলেটটি কখন যেন দুমড়ে মুচড়ে ফেলে দিয়েছি।

কিছুক্ষণ পর ওই দুইজন এসে কিছুটা রুক্ষস্বরে বললো, আংকেল কাজটা ঠিক করেন নাই। কাগজটা মুচড়ে ফেলে দিলেন।

আমি বললাম, রিয়েলি সরি। কাজটা ঠিক হয় নাই।

আমি তাদেরকে চা খাওয়ার অফার করতেই রাজি হল। চা খেলাম, গল্প করলাম। জানলাম ওরা দুজন ফ্রেন্ড। গার্ল ফ্রেন্ড বয় ফ্রেন্ড।

বললাম, এই ভালবাসাহীনতার যুগে তোমাদের ভালবাসা অমর হোক। কিন্তু…

কিন্তু বাল্য বিয়ে নিরুৎসাহিত করার যে মিশন নিয়ে নেমেছ তার আগে বাল্য প্রেম নিষিদ্ধ করার আন্দোলনে নামা উচিত ছিল।

কেনো, একটু আগেই তো বললেন, ভালবাসা অমর হোক?

বিয়ের আগে যে ভালবাসা তার পরিণতি হচ্ছে ওই কাগজটার মত যা আমি দুমড়ে মুচড়ে একটু আগে ফেলে দিয়েছি। আমি ইশারা করলাম ওই লিফলেটের দিকে। ইউজ করার পর মেয়েদেরকে সাধারণত এভাবেই ফেলে দেয়া হয়। আনুশকার ঘটনাটা তো সাম্প্রতিক সময়ের। বয়ফ্রেন্ড কিভাবে…

মেয়েটির মুখে চিন্তার রেখা ফুটে উঠলো। ছেলেটি বললো, প্রিয়াংকা চলো যাই।

মেয়েটি দাঁড়িয়ে রইল। আমি বললাম, একটা গান ভাল করে আবার শুনবে। গানটি হলো, বালিকা তোমার প্রেমের পদ্ম দিও না এমন জনকে, যে ফুলে ফুলে বসে মধু পান করে অবশেষে ভাঙ্গে মনকে…

মেয়েটি তার হাতের লিফলেটগুলো ছেলেটির হাতে দিয়ে বললো, জরুরি কাজ আছে, আমি যাই। ও চলে গেল।

ছেলেটি আমার দিকে তাকিয়ে রইল, রাগি রাগি চোখে।