ঈদুল ফিতর বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা দিলেও আমরা আজও পরিপুর্ণ শিক্ষা অর্জন করতে পারিনি – প্রফেসর মাওলানা আব্দুল কাদির সালেহ

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জুন ২২ ২০১৮, ১৫:৩১

একুশে জার্নাল লন্ডন: খেলাফত মজলিসের যুগ্মমহাসচিব ও ইউরোপ শাখার পরিচালক প্রফেসর মাওলানা আব্দুল কাদির সালেহ বলেছেন, যারা রামাদ্বানের পুরো মাস সিয়াম সাধনা করেছে তাদের জন্যই ঈদ। তাদের জন্যই আনন্দ। একজন ঈমানদার ঈদের আনন্দ লাভ করতে পারে কুরবানী, আত্মসমর্পণ ও সেক্রিফাইসের মাধ্যমে। তিনি বলেন, যারা রোজা রাখলো না, তারাবীহ নামাজ পড়লো না, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারলো না, তাদের জন্য ঈদের আনন্দ নেই।

গত ১৮ জুন, সোমবার বিকাল ৭:৩০টায় লন্ডন মহানগর খেলাফত মজলিস আয়োজিত স্থানীয় আলহুদা একাডেমী মিলনায়তনে এক ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন। শাখা সভাপতি হাফিজ মাওলানা এনামুল হকের সভাপতিত্বে ও শাখা সেক্রেটারি মাওলানা আনিসুর রাহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে মাওলানা আব্দুল কাদির সালেহ আরো বলেন, ধনী-গরিব, আমির-ফকির, সাদা-কালো, উঁচু-নিচু সব মানুষ মিলে একই আনন্দ অনুভবে এক মহা ঐক্য ও সংহতির মিলন মোহনায় এসে দাঁড়াবার এক অনন্য ব্যবস্থা এই পবিত্র ঈদুল ফিতর হলেও আমাদের দেশে বাস্তবে তা নেই। ঈদুল ফিতর বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা দিলেও আমরা আজও পরিপুর্ণ শিক্ষা অর্জন করতে পারিনি। ঈদে ধনী, গরীব, জাত, বর্ণ নেই কোন ভেদাভেদ এ কথা সবাই মুখে স্বীকার করলেও বাস্তবে আমরা প্রমাণ করতে পারছি না। এসব রাষ্ট্র ও আমাদের ব্যার্থতা। রাষ্ট্র ও আমরা এর দায় এড়াতে পারি না।

বিবেচনাবোধ মানুষের কোথায় প্রশ্ন করে মাওলানা আব্দুল কাদির সালেহ বলেন, আমাদের সমাজে ঘোষণা দিয়ে রামাদ্বানের ইফতার ও সাহরী বন্টন করা হয় এবং সেই ইফতার ও সেহরী গ্রহণ করতে গিয়ে মানুষ মারা যায়। যাকাত ফিতরা গ্রহণ করতে  গিয়ে মানুষ মারা যায়। যারা এসব করে তারা কিন্তু মানুষকে সহযোগিতা করার ইচ্ছা থাকে না। মানুষের পাশে তাদের দুঃখ লাঘবের ইচ্ছা থাকে না। ইচ্ছা থাকে তার নিজের বড়ত্ব, নিজের যে অবস্থান তা প্রকাশ করা। যার ফলে আনন্দ তখন বেদনায় রূপান্তরিত হয়। তিনি বলেন, এসব সমাজ থেকে উৎখাত করতে হবে। আর এ উৎখাত একমাত্র কুরআনের সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই সম্ভব।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, যুক্তরাজ্য খেলাফত মজলিসের সভাপতি মাওলানা সাদিকুর রহমান। তিনি বলেন, ইসলাম বৈষম্য সমর্থন করে না। তা সত্ত্বেও, আমাদের দেশে দিন দিন ধনী-গরিবের বৈষম্য বেড়ে চলেছে। এ বৈষম্য যেকোন সর্বজনীন উৎসবের আনন্দকে ক্ষুণ্ন করে। যদিও ইসলামী সমাজ ব্যবস্থার অনুপস্থিতির কারণে আমাদের দেশে বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে ওঠেনি, তারপরও রামাদ্বান মাস যে সহমর্মিতা ও সহযোগিতার বার্তা দিয়ে গেছে তাকে অবলম্বন করে রাষ্ট্রের অভিভাবক ও সমাজের সচ্ছল ব্যক্তিদেরকে একটি বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তোলার শপথ নিতে হবে।

ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্য খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শাহ মিজানুল হক ।বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক ক্বারী আহমদ হাসান, যুক্তরাজ্য খেলাফত মজলিসের নির্বাহী হাফিজ মাওলানা সাদিকুর রহমান ও অফিস সম্পাদক মারুফ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি আব্দুল করিম ওবায়েদ । ঈদের অনুভূতি পেশ করেন – মাওলানা আব্দুল মালিক,হাফিজ আশরাফ আহমদ, মাওলানা জাবির আহমদ, মাওলানা নুফায়েস আহমদ বরকতপুরী, আব্দুল গফুর, মাওলানা রুম্মান আহমদ, মাওলানা দিলওয়ার হোসাইন, মাওলানা মু’তাসিম বিল্লাহ, মাওলানা আবুল কাশেম, ফজলুর রহমান, মাওলানা রশিদ আহমদ, কামরুল ইসলাম, মাওলানা আমিরুল ইসলাম, কারী কামাল হোসাইন, মাওলানা আব্দুল হান্নান, হাফিজ এমদাদুর রহমান প্রমূখ।