ইজতেমা মাঠ দখলে যে ৫টি কাজ করেছে সাদপন্থীরা

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

ডিসেম্বর ০২ ২০১৮, ১৩:০৩

আরিফ খান সা’দ:মুহাম্মদপুর ঢাকা উদ্যান থেকে বাসায় ফিরছি; কচুক্ষেত। বাই দ্য উবার। আল্লাহ আজকে একইসাথে দুটো অনুভূতি অন্তরে দান করেছেন; সুখের ও মনখারাপের। প্রথমটি ব্যক্তিগত ৷ দ্বিতীয়টি হলো, আমার শ্রদ্ধেয় মুরুব্বিরা উস্তাযগণ বন্ধুসারথী আহত, রক্তাক্ত, হাসপাতালে!

আজকে এতায়াতের অবুঝ ভাইদেরকে দিয়ে পাঁচটি কাজ করানো হয়েছে-
১। ভোর পাঁচটার সময় কেন্দ্র থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, এখনই একযোগে টঙ্গী ময়দান দখলের আমলে শরিক হতে হবে, দ্রুত ছোট ছোট জামাতে ফজর পড়ে মসজিদের জামাত দাঁড়ানোর পূর্বে বাস যোগে যাত্রা…

২। পাঁচ দিনের জোড়ের তাশকিল, অথচ বিছানাপত্র খাবারের আসবাব ছাড়া খালি হাতে রওনা…

৩। বাটা গেট ও বিদেশী গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে মুরুব্বিদের মাশওয়ারার কামরা দখলে নেয়া, ভেতরের মুরুব্বি ও অবস্থানরতদের শহীদ করে হলেও!

৪। পুরো ময়দানে পার্কিং করা যত গাড়ি আছে; কার, মাইক্রো, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল সব ভেঙে চূড়ে অকেজো করে ফেলা!

৫। যাকেই দেখতে মাদরাসার হুজুর, তালিবুলইলম, উলামায়ে কেরাম মনে হবে তাকেই সর্বশক্তি দিয়ে জখম করা, আর আঘাত করতে হবে মাথায়।

ইতিপূর্বে দেখা যে, শিবিরের ছেলেরা আক্রমণ করলে পায়ে আঘাত করেছে, ছাত্রলীগ বিভিন্ন জায়গায় মারামারিতে পিঠে আঘাত করেছে, আর আজকের তাবলিগের ভাইয়েরা মাথায় আঘাত করেছে!
পুরো দিন সরাসরি ময়দানে ফোনে খবর রাখছিলাম। অনলাইনে আপলোড দেয়া ভিডিও-ও দেখেছি।

পরিচিত আহতদের সংখ্যা অসংখ্য! কুড়িল আল-হেরা টাওয়ারের মালিক খ্যাতিমান ডাক্তার শিহাবুদ্দিন আঙ্কেল মারাত্মক জখম। তিনি টঙ্গী ময়দানের যিম্মাদার। আলেমদের শ্রদ্ধা করতেন। তিনি নিজেও কুর’আন হিফজ করেছেন এবং দরসে নেযামির কিতাবাদি পড়েছেন। আরবিতে বয়ান করতে পারেন, মাওলানা আব্দুল মালেক সাহেবের একজন আহলে খায়ের ব্যক্তিত্ব। তার সাথে অনেক তাবলিগি সফর করেছি।
আমাদের এলাকার মাওলানা সালাহউদ্দিন আঙ্কেল। তিনি মারাত্মক জখম মাথায়। হাসপাতালে এখন। দেওবন্দে ও নিযামুদ্দিনে পড়েছেন। সাদ সাহেবের দোস্ত ছিলেন। পারিবারিক আসা-যাওয়াও ছিলো।
ঢালকানগরের এক ছাত্রভাই তার চোখে দশটা সেলাই দেয়া হয়েছে।
ফিরিস্তি অনেক লম্বা…

আজকের আক্রমণের উদ্দেশ্য কী ছিলো? সামনে যেনো তাবলিগের জোড় ও ইজতেমা না হয় সে জন্য জান-মাল কুরবান করা।

এসব কেনো বললাম? ছোটবেলা থেকেই তাবলিগি পরিবারে বেড়ে ওঠা। বাবা দাদা চাচা প্রভৃতি তাবলিগের শীর্ষে কাজ করছেন অনেক বছর হলো। একাধিক নিকটাত্মীয় কাকরাইলের বনেদী মুকিম। কাকরাইলের মিম্বার, টঙ্গী মসজিদের মিম্বার, বিভিন্ন জেলা মারকাযের মিম্বার এমনকি আরবদের মিম্বারেও আল্লাহ গোনাহগারকে একাধিকবার বসিয়েছেন। বিভিন্ন জেলায় ওয়াজাহাতি জোড় উপলক্ষেও সফর হয়েছে।
ভেতরের বাইরের অনেক নাড়িনক্ষত্রই চোখের দর্পণে হাযির হয় তাই সব মিলিয়ে উপরের তথ্যগুলো সন্নিবেশিত হলো।

তবুও বলি আমার পর্যবেক্ষণ নির্ভুল দাবী করি না। আল্লাহ আমাদেরকে হেফাজত করুন, অবুঝদের হেদায়াত নসিব করুন, আমাদের সবাইকে খালেস আল্লাহর রাস্তায় কবুল করুন; আমীন!