আল্লামা ওবায়দুল হক এমপি’র আলো ঝলমলে জীবন

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জানুয়ারি ১৮ ২০২১, ০৬:৪১

ঐতিহাসিক আজকের তারিখটির কথা স্মরণ হলেই অশ্রুসিক্ত হয় চোখদ্বয়। দেশ জাতির ক্রান্তিকালের মহান অভিভাবক, জাতীর অন্যতম উজ্জল নক্ষত্র শাইখুল হাদীস আল্লামা ওবায়দুল হক এমপি সাহেব রহ. চিরবিদায়ের কথাই বলছিলাম। স্মৃতির মিনারে দাড়িয়ে থাকা এক মহীরুহ আল্লামা ওবায়দুল হকরহ. ২০০৮সালের ১৭ই জানুয়ারী শুক্রবার পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন রাফীকে আ’লার সান্যিধ্যে, না ফেরার দেশে।

আজ সেই ঐতিহাসিক তারিখটি স্মৃতিতে বারবার পীড়া দেয়…।

বাংলাদেশের আলেম সমাজের ও ইসলামপ্রীয় জনতার ও জাতীর অন্যতম এক রাহবার ছিলেন তিনি। বিশিষ্ট ইসলামি এ চিন্তাবিদ বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়্যাহ’র (বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড) সহসভাপতি ও আযাদ দ্বীনী এদারায়ে তা’লীম বাংলাদেশ এর সভাপতি এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের অভিভাবক পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গোলাপগঞ্জের ঢাকাউত্তর রানাপিং আরাবিয়া হুসাইনিয়া মাদরাসার ছরপরস্ত এবং শায়খুল হাদিস। প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ, শাইখুল হাদীস আল্লামা ওবায়দুল হক (রহ.) এমপি উজিরপুরী রহ:

হযরত এমপি সাহেব রহ ছিলেন এমনি একজন প্রখ্যাত মুহাদ্দিস, মুফাসসির, শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ ও পার্লামেন্টারিয়ান ব্যক্তি।যিনি ইলম, আমল, তাকওয়া ও এখলাস দিয়ে দেশে দেশে সর্বসাধারণকে সত্যের রাহনুমায়ি করেছেন, নববি শিক্ষাদীক্ষার আলোর ধারায় হৃদয় তাদের সিঞ্চিত করেছেন।

১৯৬০ সালে রানাপিং মাদরাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন এবং সেখানে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রায় ৪৫ বৎসর তাফসীর,ফিকহ, হাদীস এবং সীরাজীসহ অসংখ্য কিতাবাদীর দরস দেন।জীবন সায়াহ্নে সীরাজীর প্রত্যেকেটি মাসআলা কিতাব ছাড়াই দরস দিতেন শিক্ষাদানে তাঁর বিরামহীন গতি অন্য থেকে আলাদা অবস্থানে নিয়ে আসে। তিনি হয়ে ওঠেন সবার প্রিয় শিক্ষক। একজন আদর্শ শিক্ষকের প্রোজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে ওঠেন তিনি। দীর্ঘকাল যাবত শাইখুল হাদিসের পদে অধিষ্ঠিত থেকে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জনে সক্ষম হন।তারঁ অমায়িক ব্যবহার ও চারিত্রিক মাধুর্যতা শিক্ষকতা পেশাকে দিয়েছিল নতুন আবরণ। এক কথায় বলতে গেলে তিনি ছিলেন এক উদ্ভাসিত নূর। তিনার শিক্ষকতার জীবনের অম্লান স্মৃতি বহুকাল পর্যন্ত ধরে রাখবে ঐতিহ্যবাহী সিলেটের গোলাপগঞ্জের রানাপিং মাদরাসা।

রোনাজারী রোদন করতেন বিপুল।সেটা করতেন সাধারণত একান্তে।সম্মিলিত মুনাজাতেও অনেক সময় কান্নার ঢেউ জেগে উঠতো।একটি মায়াবী,মোহন ধরণ ছিলো উচ্চারণে ও ভাবধারায়। বিনয় ও আবেগ ছিলো, ছিলো তা’জিম ও আদব। যখন ছাত্র ছিলেন, তখনই হৃদয়গ্রাহী এই মুনাজাতকে নিজের সঙ্গী করে নেন।শেষ রাতের কান্না আর তাহাজ্জুদ নামাজ আর কোরআন তিলাওয়াত ছিলো তাঁর নিত্যকর্ম।দেখেছি বাড়ীতে ও শুনেছি মাদরাসায় তিনি বিভিন্ন জলসা শেষ করে ফিরতে অনেক সময় রাএ ২/৩ টা বাজত এবং তিনি আরাম না করে শেষরাতে তাহাজ্জুদে দন্ডায়মান আর ফজরের আজানের পর সুন্নত পড়ে জামাতের আগ পর্যন্ত তিলাওয়াতে মশগুল থাকতেন।অল্পভাষী
এ মুখলিছ বূযুর্গ আকাবীরে আসলাফের নমুনা ছিলেন।

আধ্যাতিক জগতের রাহবর,পীরে কামিল,শাইখুল হাদীস আল্লামা ওবায়দুল হক এমপি সাহেবের অনেক স্মৃতিময় প্রতি বৎসরের ইতিকাফের দিনগুলোর কথা, যিনি প্রায় প্রতি বৎসর এখানে ইতিকাফ করতেন।একাধারে তিনি ছিলেন হযরত শাহ্ জমির উদ্দীন রাহ্ জামে মসজিদের খতিব 1987-200৮ । হাজী আব্বাস জালালী Abbas Jalali সাহেব প্রায় বলেন যেই দিন থেকে মসজিদ শুরু হয় সেইদিন থেকে তিনি ছিলেন আমাদের একজন অভিভাবক,আমাদের পথ পদর্শক।আজ তিনি নেই কিন্তু হুজুরের প্রতিদিনের তারাবীহের পড়ে দরদমাখা ওয়াজ নসিহত ও শেষ রাএের যিকির-দোয়ার কথা আজ ও মনে পড়ে।
আরেকটি স্মরনীয় সময় মনে পড়ে তিনি এমপি থাকাবস্তায় আমাদের মসজিদে খতীব থাকায় সেই সময় তিনি মোবাইল ব্যবহার করতেন না এবং সেই সময়ে মোবাইলের ব্যবহার তেমন ছিলো না (1995 সাল) বিধায় মাঝে মাঝে সংসদে অধিবেশনর কারণে শুক্রবার জুমার নামাজের সময় আসতে পারবেন না বলে টেলিফোন ( t & t) ফোনে হাজী সাহেব কে জানাতেন।কখনো কাজির বাজার মাদ্রাসায় ফোন করে জানাতেন।তিনি কখনো নিজের জন্য কিছু চিন্তা করতেন না লোকাল টেনে ঢাকা গিয়ে সংসদ অধিবেশনে যোগ দিতেন আবার ঢাকা থেকে ফিরে এসে রাএে মসজিদের ভাংগা-জড়া শীর্ণ হূজরায় একটা রুটি খেয়ে রাএিযাপন করতেন। অনেক সময় কাজির বাজার মাদ্রাসায় রাতে অবস্তান করতেন।
আরেকটি অবিস্মরনীয় ঘটনা যা বর্তমানে পাওয়া বড় দুস্কর তিনি হযরত শাহ জমির উদ্দীন রাহ্ চাঁদনীঘাট জামে মসজিদের খতিব থাকাকালীন সময়ে ১৯৯০ সালের শূরূতে 50 টাকা,পরবর্তিতে ১৯৯৬ সালের দিকে 100 টাকা,আর ২০০৬ সাল পর্যন্ত 200 টাকা গাড়ি ভাড়ার জন্য হাদিয়া হিসাবে হাজী সাহেব দিতেন তিনি কোন দিন বলেননি যে ও আব্বাস আমার তো কম হয়ে গেছে অথবা কারো কাছে শেকায়ত করেন নি।অনেক সময় তা নিতেন না,আবার অনেক সময় মসজিদে দান করে দিতেন। এতো মুখলিস ও আল্লাহওয়ালা,দুনিয়াবিমুখ মানুষ ছিলেন।

আশির দশকে হযরত হাফেজ্জী হুযূর রহ. তাওবার ডাক দিলে রাজনীতির ময়দানে নেমে এসেছিলেন। পরামর্শ ও শ্রম দিয়ে ভূমিকা রেখেছিলেন খেলাফত প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে। তাই একজন দূরদর্শী রাজনীতিবিদ হিসেবেও সুখ্যাতি রয়েছে তাঁর। প্রচারবিমুখ ও দুনিয়াবিমুখ আল্লামা ওবায়দুল হক রহ পরবর্তীতে শাইখুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক রহ. ও আল্লামা প্রিন্সিপাল হাবীবুর রহমান রহ: আল্লামা মুফতী ফজলুল হক আমিনী রহ. শাইখুল হাদীস আল্লামা আশরাফ আলী কুমিল্লা রহ, শাইখুল হাদীস আল্লামা নেজাম উদ্দীন রহ: অধ্যাপক আখতার ফারুক সাহেব রহ: অধ্যাপক আহমদ আব্দুল কাদের দাবা: শাইখুল হাদীস আল্লামা খলিলুর রহমান রাজনগরী রহ:, মুফাসসিরে কুরআন আল্লাম জুবায়ের আহমেদ আনসারী রহ: বিশিস্ট রাজনীতিবীদ আল্লামা আব্দুর রব ইউসুফী দাবা: এর সঙ্গেও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ইসলামী রাস্ট ও খেলাফত প্রতিষ্ঠার আন্দোলন অব্যাহত রেখেছিলেন।

দেশের শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরাম, ইসলামী চিন্তাবীদ ও বুদ্ধিজীবীদের সমন্বয়ে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস নামে নতুন রাজনৈতিক দল হিসাবে আত্নাপ্রকাশ করে । তখন তিনি শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক র: এর হাত ধরেই বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসে কাজ শুরু করেন।এক পর্যায়ে তিনি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর,ভারপ্রাপ্ত আমীর ও আমৃত্যু দলের অভিভাবক পরিষদের চেয়ারম্যানের গুরুদায়িত্ব পালন করেন। খেলাফত মজলিসের কেন্দ্র ঘোষিত সবকটি গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন সংগ্রামে আল্লামা ওবায়দুল হক প্রথমসারি থেকে শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ:এর সাথে নেতৃত্ব দিয়ে দেশ-জাতি ও ইসলামের সিপাহসালারের ভূমিকা পালন করেন।প্রতীক্ষায় থাকতেন তিনি শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ: ও প্রিন্সিপাল আল্লামা হাবীবুর রহমান রহ এর বলিষ্ঠ আহ্বানের।যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রামকে সফল করার সলা-পরামর্শ হিকমাত ও মেহনতের প্রচেস্টায় থাকতেন।

১৯৯১সালে গঠিত হল ইসলামী ঐক্যজোট,প্রিন্সিপাল আল্লামা হাবীবুর রহমানের (রহঃ) প্রচেষ্টায় শায়খুল হাদীস আল্লামা আজীজুল হক রহঃ এর নির্দেশে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মাধ্যমে ইসলামী ঐক্যজোটে সম্পৃক্ত হলেন। ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নিবাচনে ইসলামী দলের সমন্বয়ে গঠিত ইসলামী ঐক্যজোটের পক্ষ থেকে সিলেট-৫ জকিগঞ্জ – কানাইঘাট আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে বিজয়ী হন আল্লামা ওবায়দুল হক রহ.।সাধীনতার পর কওমী অঙ্গনের আর কোন আলেমই নিজ দল/জোটের প্রতীকে সংসদ সদস্য হতে পারেন নি, কেউ কেউ ধানের শীষ বা লাঙ্গল মার্কায় নির্বাচিত হয়েছেন,একমাত্র উজীরপুরী রহঃ এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে সর্বপ্রথম মাথায় পাগড়ী, হাতে লাঠি নিয়ে যিনি বক্তৃতা দিয়েছিলেন তিনি এমপি আল্লামা ওবায়দুল হক রহ.।তিনি সংসদ সদস্য থাকাকালীন সময়ে বয়সে তরুন হলেও বিশিস্ট লেখক মুহাদ্দীস মাও শাহ মমশাদ আহমদ দাবা: Shah Abu Nayef ছিলেন তাঁর প্রেস সচিব।উস্তাদে মুহতারাম প্রিন্সিপাল আল্লামা হাবীবুর রাহমান (রহঃ) তাকেঁ এ কাজে সম্পৃক্ত করে দেন। ইসলামী ঐক্যজোটের একমাত্র সংসদ সদস্য হিসাবে তিনি জাতীয় সংসদে আসন গ্রহণ করেন ।ঐ সময়ে গোটা বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ আলেম সমাজের তিনিই ছিলেন মূখ্য ভাষ্যকার ও একমাত্র প্রতিনিধি ।

সিলেট বিভাগ আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা ঐতিহাসিকভাবে স্মরণীয়। তিনিই বাংলাদেশ পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে সিলেট বিভাগের পক্ষে সর্বপ্রথম দাবী উত্তাপন করে বলেছিলেন মাননীয় স্পিকার, বজ্রকন্ঠে বললেন,আমি এককোঠি সিলেটবাসীর পক্ষ হতে দাড়িয়েছি,মাননীয় স্পিকার, আমাকে বসার কথা বলবেন না,স্পীকার সময় দিতে বাধ্য হলেন।সংসদে পয়েন্ট অফ অর্ডারে দাড়িয়ে বলেছিলেন সিলেট কে কেন বিভাগ করা হয় না অথচ বরিশাল কে বিভাগ করা হল।যেই সিলেটে গ্যাস , চা পাতা এবং কমলা লেবু উৎপন্ন হয়ে সারা দেশে আমদানি করা হয়। তাই জাতীয় সংসদে সর্বপ্রথম শাহজালালের পুণ্যভূমি সিলেট বিভাগের দাবী ও নোটিশ উপস্থাপন করে পার্লামেন্টে সিলেটি এমপিদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হন। তাই বলা যায়, সিলেটকে বিভাগ করার দাবির প্রথম উপস্থাপক তিনি।

জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে চলছে,দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্টিত হল,সে দিন তিনি ওলামায়ে দেওবন্দের এক সফল উত্তরসুরী হিসেবে সাহসী কন্ঠে বললেন,মানব রচিত যে সংবিধান বার বার সংশোধন করতে হয়,এর মাধ্যমে জাতির ভাগ্যের পরিবর্তন হবেনা,জাতির ভাগ্যের পরিবর্তন হতে পারে একমাত্র সে সংবিধানের মাধ্যমে যার শুরুতে বলা হয়েছে লা রাইবা ফিহি , কুরআন কারিম ই এমন সংবিধান যার কোন সংশোধন করতে হয়না, এই বলে বার সংসদে বক্তব্য রাখতেন। ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থার পক্ষে এমন তাৎপর্য পুর্ন বক্তব্য আর শুনা যায়নি।

এম পি সাব হুজুর রহ. প্রথমেই ট্রেনে ওযু ও নামাজের ব্যবস্থা না থাকার জন্য তৎকালীন (১৯৯১-৯৫) যোগাযোগমন্ত্রীকে জাতীয় সংসদে জবাবদিহী করতে এবং ট্রেনে ওযু ও নামাজের ব্যবস্থা করার জন্য ওয়াদা দিতে বাধ্য করেছিলেন। যার ফলে ট্রেনে এখন এ ব্যবস্থা আছে।

নাস্তিক-মুরতাদ ও তসলিমা বিরোধী আন্দোলন, ধর্মদ্রোহীদের বিচারে মৃত্যুদন্ড বিধান সম্বলিত ব্লাস্ফেমী আইন পাসের দাবী সংসদে উপস্থাপন করেন জাতীয় সংসদের প্রতিটি অধিবেশনে।কিন্তু দূ:খের বিষয় আজোবধি এদের বিরূদ্ধে কোন আইন হয় নি।যার দরূন মাঝে মাঝে ওদের আস্ফালন শূরূ হয়।এবং বাবরি মসজিদ ভাঙার প্রতিবাদে ভারতের অযোধ্যার অভিমূখি লংমার্চে শাইখের সাথে তিনি ছিলেন। এবং বাবরি মসজিদ ভাঙায় সংসদে তীব্র নিন্দা করে অবিলম্বে বববরী মসজিদ পুন:নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন।

কওমী সনদের স্বীকৃতির জন্য মক্তাঙ্গণে শাইখুল হাদিস আজিজুল হক র: এর সাথে অবস্থান করেন।শাইখুল হাদীসকে সামনে রেখে স্বীকৃতি আদায়ের উদ্দেশ্যে তাওহীদি জনতা দীর্ঘ ৫ দিন রাজপথে অবস্থান করে ত্যাগের যে অনুপম আদর্শ স্থাপন করেছিল তা সত্যিই অতুলনীয়। স্বীকৃতির আন্দোলনকে নতুনভাবে আন্দোলিত করেছিল এই অবস্থান কর্মসূচি।

সমাজ জীবনে তাঁর রয়েছে অনেক অবদান।শেওলা টু জকিগঞ্জ যে বিশাল রাস্তা গিয়েছে তা সম্পূর্ণ তিনার অবদান।জাতী তা স্বর্নাক্ষরে লেখা রাখবে এবং অএ এলাকার মানুষের অন্তরে লিপিবদ্ধ থাকবে। সেই রাস্তার পিছনে একটি ইতিহাস রয়েছে এবং যেই রাস্তার জন্য এমপি হওয়ার পূর্বে অত্র অঞ্চলের সব জায়গায় তিনিঐ রাস্তার কথা তিনি আলোচনা করতেন।চির স্বরণীয় জকিগন্জ কানাইঘাটের এম পি থাকাকালিন সময়ে শেওলা-জিরো পয়েন্ট থেকে বিরশ্রী হয়ে জকিগন্জ পর্যন্ত একটি রাস্তা করে দিয়ে ঐ এলাকার মানুষের যাতায়াতের সুবিধা করে দিয়ে গেছেন। সিলেট গাজী বুরহান উদ্দীন রোড ভায়া গাছবাড়ী রোড নির্মাণের জন্য সংসদে জোরালো বক্তব্য রাখেন।

কুশিয়ারা নদীর ভাঙনের জন্য সংসদে তিনি সংসদে বলতেন, বাংলাদেশের মানচিত্র পরিবতন হচ্ছে।তিনি সেই এমপি যিনি সংসদে দাড়িয়ে বক্তব্য রাখছিলেন যে,”নদীর এপার ভেঙ্গে ওপার গড়ে, এইতো নদীর খেলা”এই কথাটি তিনি বার বার বলতেন এবং বলতেন বাংলার মানচিত্র কে অক্ষুন্ন রাখতে হবে এবং নদীভাংঙ্গনের কবল থেকে যাতে স্কুল কলেজ মাদ্রাসা মসজিদ,মানুষেরঘরবাড়ি,জমিজমাসহ বাংলার মাঠিকে সংরক্ষন করার জন্য বারবার সরকারের কাছে দাবী জানিয়ে ছিলেন। কারণ এখানে ভাঙ্গছে বাংলা, ভরছে ভারত। বদলে যাচ্ছে দেশের মানচিত্র।বর্তমান এমপি হাফিজ মজুমদার সাহেব ২০০৮ সালে হযরত কে অসুস্থ অবস্তায় দেখতে এসে বলেছিলেন আজকে যে আপনারা নদীভাঙ্গন রোধে ব্লক বা পাথর দেওয়া হচ্ছে তা সম্পূর্নই হযরতের অবদান।তিনার আমলে সংসদ থেকে বিল পাশ হয়েছে আর এরপর থেকে আস্তে আস্তে প্রত্যেক জায়গাতে ব্লক বা পাথর দিয়ে বাধঁ হচ্ছে।ধন্যবাদ পাওয়ার অধিকার তিনি রাখেন।

আল্লামা এমপি সাহেব রহ. সৃত্মিচারন লেখে শেষ করা যাবে না, আল্লামা এমপি সাহেব রহ : বড় হওয়া,গড়ে ওঠা সবই খলিফায়ে মাদানী আল্লামা আব্দুল গফ্ফার শাইখে মামরখানী রহ : ও আল্লামা আনওয়ার শাহ্ কাম্মিরী রাহ.সু-যোগ্য ইলমে ওহীর উত্তরসুরী,শায়খুল হাদীস আল্লামা রিয়াছত আলী চৌঘরী হুজুর (রহ.) এর প্রতিচ্ছবি এবং খলীফায়ে থানভী রহ: শাইখুল হাদীস আল্লামা আব্দুল ওয়াহ্হাব পীরজী হূজুর ঢাকার রহ: এর স্নেহধন্য ছায়ায় ছোঁয়ায়। জীবনের প্রতি মুহূর্তে নিজের সকল কাজে তিনি এই মুরব্বিদ্বয়কে সামনে রাখতেন, স্মরণও করতেন, নীতি ও আদর্শ এর কোন অভাব তাঁর মধ্যে ছিলো না।বিদআত সামাজিক কুসংস্কার ও কুপ্রংথা উচ্ছেদে তারঁ যথেষ্ট অবদান। জীবনের প্রতিটি ক্ষেএে তিনি সুন্নাহর অনুসরনে অত্যন্ত নিষ্ঠাবান ছিলেন এতটুকই বলবো, আমরা এক জন আদর্শবান আলেমকে হাড়িয়েছি।
যা পূরণ হবার নয়।।

এ কীর্তিমান মহান সাধক পুরুষ যদিও আজ আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের অন্তরে তাঁর নাম অঙ্কিত হয়ে আছে ও থাকবে যুগযুগ ধরে। মহান আল্লাহ পাক তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউসের সুউচ্চ আসনে সমাসীন করুন এবং হযরতের ফয়েজের দ্বারা আমাদেরকে প্রাচুর্যময় করুন। আমীন।