আমরা মরে গেলেও কোন আপোষ করবো না: গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশে বক্তারা

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

আগস্ট ১১ ২০২২, ২০:৩৫

‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ নামে নবগঠিত ৭ দলীয় জোটের সমাবেশে সরকার পতন আন্দোলনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেছেন, এই সরকারের পতন পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আমরা মরে গেলেও কোন আপোষ করবো না। বক্তারা বলেছেন, বর্তমান সরকার এই দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করে দেশকে রক্ষা করতে হলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে হবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চের প্রথম বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি আ স ম আবদুর রব। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণ সংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, গণঅধিকার পরিষদের রাশেদ খান প্রমুখ।

বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে বারোটায় সমাবেশ শুরু হলে বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা এতে যোগ দেন। সমাবেশ শেষে নবগঠিত এই জোটের নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে শুরু হয়ে পুরানা পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি আ স ম রব বলেন, আমাদের আজকের এই লড়াইয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই সরকার বলেছে, মরে গেলেও ক্ষমতা ছাড়বে না। আর আমরাও মরে গেলেও কোন আপোষ করবো না। আমাদের সাত দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে হবে না। দেশের সকল রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে। রাস্তায় গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, পৃথিবীর কোথাও জ্বালানি তেলের দাম এমন বেড়েছে এমন উদাহরণ নেই। সারাদেশে হাহাকার চলছে। তাই এই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে হবে। আমরা কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নই। দেশে সরকার নেই। দেশে আছে সার্কাস।

সরকার সিন্ডিকেটের হাতে বন্দী। সিন্ডিকেট যেদিকে সুইচ দেয় সরকার সেভাবেই কাজ করে।

গণতন্ত্র মঞ্চের কোন নেতার অতীতে আপোষ করার কোন ইতিহাস নেই উল্লেখ করে আ স ম আবদুর রব বলেন, আমাদের লড়াই গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই, আমাদের এই লড়াইয়ে জিততে হবে। এই সরকারকে যেতে হবে। আজকে দেশ শ্রীলঙ্কা হওয়ার পথে। এই সরকারের লোকদের বলবো আপনারা কিভাবে দেশ ছেড়ে পালাবেন সেই চিন্তা করুন।

সভাপতির বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এখন যারা ক্ষমতায় আছে তারা চোর, ডাকাত, লুটেরা। আমরা দেশকে, দেশের মানুষকে বাঁচানোর জন্য সরকারকে হটাতে চাই। আমরা শুধু সরকারের পদত্যাগই চাই না। আমরা চাই এই দেশের গঠনমূলক পরিবর্তন।

তিনি বলেন, সরকারের যেকোন মন্ত্রী ভোটে দাঁড়াবে আর আমাদের গণতন্ত্র মঞ্চের একজনকে সিলেক্ট করবো। তাহলে দেখা যাবে কি হয়? আওয়ামী লীগ দেশের একটি প্রবীণ দল। কিন্তু দেশের জনগণ এখন তাদের ঘৃণা করে। তাই দেশের জনগণ আর তাদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, গণতন্ত্র মঞ্চ নিয়ে সরকারের ভয় শুরু হয়েছে। আমাদের ভয় পাওয়ার কারণ হচ্ছে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা সাধারণ মানুষের পক্ষে কথা বলবে। আমরা শুরু থেকেই বলছি, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। আর না হয় কঠিন থেকে কঠিনতর আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে হটানো হবে।

গণ সংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আজকে একটা জরুরি অবস্থার মধ্যে আমরা বিক্ষোভ করছি। সরকার মধ্য রাতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে। এতে করে দেশের সাধারণ মানুষের অবস্থা নাকাল। আজকে আমাদের জোট গঠনের পরই জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে রাস্তায় নামতে হয়েছে। এটা আমাদের প্রথম কর্মসূচি। এই সরকারকে বিদায় করা না পর্যন্ত আমরা মাঠে আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেন, আজকে মানুষের মনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। সরকার চাপাবাজি করে বলছে, দেশ খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ। সরকার বুঝতে পারছে, তারা বিদায় নিলে তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাই তারা মানুষের উপর নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছে। এই সরকারকে আর সুযোগ দেয়া যাবে না। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে হবে। আমাদের লক্ষ্য এক এই ফ্যাসিবাদ সরকারকে সরিয়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা।