জুড়ী নদীতে পলো দিয়ে মাছ ধরা উৎসব 

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

ডিসেম্বর ০৫ ২০২০, ২০:৫২

জহিরুল ইসলাম সরকার, জুড়ী প্রতিনিধি (মৌলভীবাজার):  আহবমান বাংলার অন্যতম উৎসব হচ্ছে পলো দিয়ে মাছ ধরা। শীতের শুরুতেই শুরু হয় এই উৎসব। অন্যান্য অঞ্চলের মত মৌলভীবাজারের জুড়ী নদীকে কেন্দ্র করে শত বছরেরও বেশি সময় ধরে পালিত হয়ে আসছে মাছ ধরা উৎসব ‘পলো বাওয়া’।

শনিবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে জুড়ী নদীর কন্টিনালা অংশে পলো দিয়ে মাছ ধরা শুরু হয়। বিকেল পর্যন্ত চলে এ পলো বাওয়া উৎসব।

বেলাগাঁও কন্টিনালা যুব ও সমাজ কল্যাণ পরিষদের আয়োজনে পলো বাওয়া উৎসব উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল-ইমরান রুহুল ইসলাম। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাসুম রেজা, জুড়ী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিতাংশু শেখর দাস, জায়ফরনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের দারা, আওয়ামীলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী ইলিয়াছুর রহমান ময়না, বেলাগাঁও যুব ও সমাজ কল্যাণ পরিষদের সহ-সভাপতি জমির আলী প্রমুখ।

এ সময় জুড়ী উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ উৎসবে মেতে উঠেন। জুড়ী নদীতে বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে দল বেঁধে মাছ ধরার দৃশ্য যেন দেখার মতো। দলবদ্ধভাবে মাছ শিকারের এ দৃশ্য দেখতে নদীর দুই তীরে ভিড় জমায় উৎসুক মানুষজন। উৎসবে অংশ নেয়াদের হাততালি, জোরে জোরে চিৎকার করে উৎসাহ দেন তীরে অবস্থানরত লোকজন। নদীতে বড়দের পাশাপাশি ছোট ছেলেমেয়েদেরও দেখা যায়। মাথা ও কোমরে গামছা বেঁধে অনেকটা আনন্দ নিয়েই মাছ ধরতে দেখা যায় তাদের।

সৌখিন মাছ শিকারি স্বপন আহমদ বলেন, বছরের এই দিনের জন্য অধীর আগ্রহে থাকি। সবাই মিলে একসঙ্গে মাছ ধরার আনন্দটাই আলাদা। দিন দিন পরিবেশ ও আবহাওয়ার কারণে নদী-নালা, খাল-বিল, হাওরের তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি হ্রাস এবং অধিকাংশ জলাশয় ইজারা দেয়ায় পলো বাওয়া উৎসব এখন অনেকটাই ভাটা পড়েছে। এছাড়া অভাব অনটন ক্রমশ গ্রাস করে ফেলছে চিরাচরিত এই গ্রামীণ উৎসবের অতীত ঐতিহ্যকে। এরপরও বছরের এই দিনে সবাই মিলে অতীতের ন্যায় মাছ ধরার উৎসব পালন করছি।