নারায়নগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা ও ক্লাস বাতিল করে স্কুলের মাঠ ও শ্রেণী কক্ষে ভুরিভোজের আয়োজন করার অভিযোগ উঠেছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই স্কুলের অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের আসন্ন কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়া এ ভুরিভোজের আয়োজন করেছেন বলে অনুষ্ঠানে আসা একাধিক নেতাকর্মীর মুখে শোনা গেছে।

তবে তার স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, তার মরহুম মা-বাবাসহ আওয়ামী লীগের মরহুম নেতাদের জন্য দোয়ার মাহফিলের এ আয়োজন করা হয়েছে।

শনিবারের পরীক্ষা বাতিল করে ১২ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়। একইভাবে ইয়াছিন মিয়ার সহযোগীরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রাখতে মৌখিকভাবে নির্দেশ দেয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের। ইয়াছিন মিয়ার মৌখিক নির্দেশ পেয়ে ভীত সন্ত্রস্ত শিক্ষকরা স্কুলের পাঠদান বন্ধ রাখেন।

এ দিকে ওই ক্যাম্পাসে গড়ে উঠা পশ্চিমপাড়া কেজি স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা সকাল ৯টা থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে দুপুর ১২টায় শেষ হয়।

পরীক্ষার্থীরা জানায়, তাদের পরীক্ষা চলাকালীন স্কুলের মাঠে অনুষ্ঠানের রান্নার কাজ চলায় বাবুর্চি ও নেতা-কর্মীদের চিৎকার চেঁচামেচিতে তারা সুন্দরভাবে পরীক্ষা দিতে পারেনি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তিনটির স্কুল মাঠ একটি। সেই মাঠেই প্রায় ৩ হাজার নেতা-কর্মীর খাওয়ার রান্না করা হয়েছিল। এতে পুরো হট্টগোলের কারণে কেজি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা সুন্দরভাবে পরীক্ষা দিতে না পারায় অভিভাবকদের মাঝে দেখা দিয়েছে চাপা ক্ষোভ।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, কিছুদিন পর সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ওই সম্মেলনে তার পদ যেন ঠিক থাকে তাই নেতা-কর্মীদের খাওয়ানোর জন্য তিনি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

তবে তিনি কৌশলে দাওয়াতপত্রে উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগের মরহুম নেতা-কর্মী এবং তার মরহুম পিতা-মাতার দোয়া মাহফিলের জন্য এ আয়োজন করেছেন। এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া জানান, আজ শনিবার কোনো পরীক্ষা ছিল না। অভিভাবকদের অভিযোগ মিথ্যা।

মিজমিজি পশ্চিমপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান জানান, শিশু শ্রেণি থেকে ৪র্থ শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অন্যান্য শ্রেণির শনিবারের পরীক্ষাগুলো আগামী ১২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।