ইসলাম গ্রহণকারী একমাত্র বাংলাদেশি ক্রিকেটার ক্রিকেটার মাহমুদুল হাসান (বিকাশ রঞ্জন)

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

নভেম্বর ১৯ ২০১৯, ১৪:৪৬

ক্রিকেট ক্যারিয়ারটা খুব বেশি দীর্ঘায়িত হয়নি। মাত্র পাঁচ বছরের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে খেলেছেন ১৯টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ ও ২০টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ। তবে এরই মধ্যে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে বিকাশ রঞ্জন দাস বা বর্তমানে মাহমুদুল হাসানের নাম।

ভাবছেন একজন মানুষের দুইটি নাম হয় কী করে? ঘটনা হলো, তিনি যখন হয়েছিলেন দেশের ক্রিকেটের ইতিহাসের অংশ তখন ছিলেন বিকাশ রঞ্জন দাস। পরে ধর্মান্তরিত হয়ে নিজের নাম বদলে রেখেছেন মাহমুদুল হাসান। বাংলাদেশের ক্রিকেটের নিয়মিত খোঁজখবর রাখা কারও জন্য তার নামটি নতুন কিছু নয়।

কেননা ২০০০ সালের ১০ নভেম্বর ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রথম টেস্টের একাদশে ছিলেন বিকাশ রঞ্জন দাস। মাত্র ১৮ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের স্বাদ পেলেও, পরে আর খেলা হয়নি একটিও ম্যাচ। অর্থাৎ দেশের ইতিহাসের প্রথম টেস্ট ম্যাচটিই হয়েছে বিকাশ রঞ্জন বা মাহমুদুল হাসানের ক্যারিয়ারের প্রথম ও শেষ ম্যাচ।

সেই ম্যাচে আহামরি কিছু করতে পারেননি বিকাশ রঞ্জন। দুই ইনিংস মিলে করেছিলেন ২ রান আর নিজের দায়িত্ব তথা বল হাতে শিকার করেছিলেন ভারতীয় ওপেনার সাদাগোপান রমেশের উইকেট। যার ফলে আর জাতীয় দলে ডাক মেলেনি তার। এরপর কয়েক বছর ঘরোয়াতে খেলে মাত্র ২২ বছরেই থামিয়ে দেন ক্রিকেট ক্যারিয়ার।

jagonews

ধর্ম বদলে বিকাশ রঞ্জন দাস থেকে হয়ে যান মাহমুদুল হাসান এবং ক্রিকেটার পরিচয় দূরে ঠেলে হয়ে ওঠেন পুরোদস্তুত ব্যাঙ্কার। তবে পুরোপুরি ক্রিকেটটা ছাড়তে পারেননি মাহমুদুল। এখনও নিয়মিতই খেলে থাকেন ব্যাংকের কর্পোরেট ক্রিকেট লিগগুলোতে। আর এবার সুযোগ মিলবে পুরোপুরি জাতীয় দলের সঙ্গে যোগ দেয়ার।

তবে অতি অবশ্যই ক্রিকেটার হিসেবে নয়। বরং ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির আমন্ত্রণে অতিথি হিসেবে ইডেন গার্ডেনসে বাংলাদেশ-ভারতের ঐতিহাসিক দিবারাত্রির টেস্টে উপস্থিত থাকবেন তিনি। ২০০০ সালে বাংলাদেশের সেই প্রথম টেস্টের দলে থাকা সবাইকেই আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সৌরভ গাঙ্গুলি।

সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে আগামী ২১ তারিখ ভারতের বিমানে উঠছেন মাহমুদুল হাসান। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। জানিয়েছেন, ‘আমি ২১ তারিখ ভারতের বিমানে উঠছি। ২২ তারিখ ইডেন গার্ডেনসে দেখা হবে দাদার সঙ্গে। ১৯ বছর আগে সৌরভের বিরুদ্ধে শেষবার খেলেছি। তার পরে আর দেখা হয়নি ওর সঙ্গে। এবার আবার দেখা হবে। দাদা দারুণ একটা উদ্যোগ নিয়েছে। আমাদের কথা যে ভুলে যাননি, তাতেই প্রমাণিত সৌরভ অনেক বড় মাপের মানুষ।’

এসময় তিনি ফিরে যান ১৯ বছর আগে সেই ম্যাচে। বলেন, ‘সেই মধুর স্মৃতি কী করে ভুলব বলুন তো! শান্ত (হাসিবুল হোসেন) ভাই প্রথম ওভার করেছিল। আর এক প্রান্ত থেকে আমি শুরু করেছিলাম। প্রথম বলটা করেছিলাম সদাগোপান রমেশকে।’

পরে এই রমেশকে বোল্ড করে টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের একমাত্র উইকেট নেন বিকাশ রঞ্জন। সে উইকেটের কথা মনে করে তিনি বলেন, ‘একটু জোরের উপরেই বলটা রেখেছিলাম। বাড়তি বাউন্সে বল রমেশের ব্যাটে লেগে স্টাম্পে লাগে। একটু পরেই আম্পায়ার স্টিভ বাকনার এগিয়ে এসে আমার হাতে বেলটা তুলে দিয়ে বলেন, এটা যত্ন করে রেখে দিও। এটা তোমার প্রথম টেস্ট উইকেটের স্মৃতি। বেলটা হাতে নিয়ে দেখলাম ভেঙে গিয়েছে।’