হিউম্যান মিল্ক ব্যাংক ইসলামি নীতি বহির্ভূত: মাওলানা নিজামপুরী

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

ডিসেম্বর ২৯ ২০১৯, ২০:৪১

হাবীব আনওয়ার: সম্প্রতি রাজধানী ঢাকার মাতুয়াইলে অবস্থিত শিশু মাতৃস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট (আইসিএমএইচ) ‘হিউম্যান মিল্ক ব্যাংক’ নামে নতুন একটি প্রজেক্ট চালু করেছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে যেসকল মায়েরা সেচ্ছায় দুধ দান করতে চায় তাদের থেকে দুধ সংগ্রহ করে অসহায় নবজাতককে পান করানো।
বাহ্যিকভাবে বিষয়টি মানবিক হলেও এর পিছনে ইসলামি নীতি আদর্শের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে। অনতিবিলম্ব সেবার অন্তরালে ইসলাম বিরোধী এই কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।

গতকাল চট্টগ্রাম সাতকানিয়া মাদার্শা ইসলাম প্রচার সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত ১৫ তম তাফসীরুল কুরআন মাহফিলে হাটহাজারী মাদরাসার মুহাদ্দিস ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী এসব কথা বলেন।

মাওলানা নিজামপুরী বলেন, নবজাতক শিশু অন্য মায়ের দুধ পান করবে, বিষয়টি ইসলামে অনুমতি আছে। আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ সা. হযরত হালিমা সা’দিয়ার দুগ্ধ পান করে বড় হয়েছিলেন। তখনকার আরব সমাজে এই রীতির প্রচলন ছিল। বর্তমান সময়েও ইসলামে এই ব্যবস্থার অনুমোদন আছে। বিশেষ ব্যবস্থাপনায় কোন নবজাতককে অন্য মাহিলারা দুধ পান কারাতে কোন সমস্যা নেই। বরং নবজাতককে সুস্থ রাখতে ইসলাম এই প্রথাকে অনুমোদন দিয়েছেন। তবে এই ক্ষেত্রে ইসলামের নির্দেশনা আগে ভালো করে বুঝে নিতে হবে। ইসলামি শরিয়াতের অন্যতম বিধান হচ্ছে ‘হিফযুন নসল’ অর্থাৎ বংশীয় সম্পর্কের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। কিন্তু মিল্ক ব্যাংকের মাধ্যমে এই ধারা ধ্বংস হয়ে যাবে। যার ফলে অজানা-অচেনা অনেক দুধ ভাই-বোনের মধ্যে হারাম বিয়ে অনুষ্ঠিত হবে।

মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী আরো বলেন, পবিত্র কুরআনে সুরা নিসার ২৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা ইরশাদ করেন, ‘(বিয়ের জন্য) তোমাদের ওপর হারাম করা হয়েছে তোমাদের মা, তোমাদের মেয়ে, তোমাদের বোন, তোমাদের ফুফু, তোমাদের খালা, ভাইয়ের মেয়ে, বোনের মেয়ে এবং (আরো হারাম করা হয়েছে) সেই সব মা, যারা তোমাদের বুকের দুধ পান করিয়েছেন, তোমাদের দুধবোন, তোমাদের স্ত্রীদের মা, তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যাদের সঙ্গে তোমরা একান্তে মিলিত হয়েছ তাদের আগের ঔরসজাত মেয়েরা, যারা তোমাদের অভিভাবকত্বে রয়েছে, আর যদি তোমরা তাদের সঙ্গে একান্ত মিলিত না হয়ে থাকো, তবে তোমাদের ওপর কোনো পাপ নেই এবং (তোমাদের জন্য বৈধ নয়) তোমাদের ঔরসজাত পুত্রের স্ত্রীগণ। দুইবোনকে একত্র করাও (তোমাদের ওপর হারাম করা হয়েছে)। অথচ, মিল্ক ব্যাংকের মাধ্যমে এই আয়তের আদেশ মানা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি না। এছাড়াও মুসলিম বিশ্বের কোথাও এ ধরনের পদ্ধতি চালু আছে বলে অন্তত আমার জানা নেই।

মাওলানা নিজামপুরী বলেন, হিউম্যান মিল্ক ব্যাংকের কার্যক্রম ইসলামি দেশগুলোর সর্বোচ্চ সংস্থা ওআইসির ফিক্হ বোর্ডের সামমে উপস্থাপন করলে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আলেমগণ তা হারাম ঘোষণা করেছেন। অতএব ৯০% মুসলমানদের এই দেশে কোন ভাবেই একটি হারাম কর্মকাণ্ড চলতে পারে না। আমি বর্তমান সরকারের প্রতি হিউম্যান মিল্ক ব্যাংকের কার্যক্রম অনতিবিলম্বে বন্ধের উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।