সব ধর্মের মানুষের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হচ্ছে সুলতান মসজিদ

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

নভেম্বর ২৯ ২০১৯, ১২:৩৩

মসজিদে সুলতান বা সুলতান মসজিদ। ২০০ বছরে দীর্ঘ ঐতিহ্যকে ধারণকে সব ধর্মের লোকদের অন্তরে আপন নিবাস হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ১৮১৯ সালে সিঙ্গাপুর বিট্রিশদের আয়ত্বে চলে যায়। সে সময় সিঙ্গপুরের শাসন পরিচালনা করছিলেন টেমেংগং আব্দুল রহমান ও সুলতান হুসেন শাহ। সুলতান হুসেন শাহ-ই ১৮২৪ সালে তার বাড়ির পাশে সুলতান মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন।

প্রায় ২০০ বছরের পুরনো এ মসজিদটি সব ধর্মের আশ্রয়হীন লোকদের নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। এটি সিঙ্গাপুরের রোচার জেলার কমপংগ্লাম অঞ্চলের মাসকট স্ট্রিট ও উত্তর ব্রিজ রোডে অবস্থিত।

১৮২৪ সালে সুলতান হুসেন শাহ তার বাড়ির পাশে এ মসজিদ নির্মাণ শুরু করলেও ৮ মার্চ ১৯৭৫ সালে অত্যাধুনি ও সুন্দর অবকাঠামোতে পরিণত হয় এটি। সুলতান হুসেন শাহ-এর নামানুসারে এর নামকরণ করা হয় সুলতান মসজিদ। এ মসজিদটি সিঙ্গাপুরের জাতীয় প্রতীক/স্তম্ভ হিসেবেও মনোনীত।

এ মসজিদটির অভ্যন্তরে একটি অংশ রয়েছে যেখানে গৃহহীন মানুষ আশ্রয় গ্রহণ করবে। তবে আগে থেকেই তাদেরকে নাম নিবন্ধন করতে হবে। মসজিদের পক্ষ থেকে তাদেরকে বিনামূল্যে পানি সরবরাহ করা হবে।

গৃহহীনদের মসজিদে আশ্রয় নেয়ার অন্যতম শর্ত হলো- গৃহহীন এসব মানুষ মসজিদে থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান করতে হবে। নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তারা মসজিদের আশ্রয়ে থাকার অংশে অবস্থান করবে।

তবে গৃহহীন আশ্রয়গ্রহণকারীরা মসজিদের মূল ভবনের গেট দিয়ে বরাদ্দকৃত স্থানে প্রবেশ করতে পারবে না। ইবাদতকারীদের যেন নামাজে ব্যঘাত না ঘটে সে জন্য আশ্রয় অংশের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

মসজিদ কর্তৃপক্ষ ও বিশেষজ্ঞদের ধারণা, গৃহহীন মানুষ মসজিদে বিশ্রাম কিংবা আশ্রয় নেয়ার ফলে তাদের চলাফেরায় নৈতিক পরিবর্তন আসবে। পাশাপাশি তারা যদি অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকে তবে তাদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা হ্রাস পাবে।

তবে মসজিদটিতে শুধু গৃহহীন পুরুষদেরই সার্বিক সহায়তা দেবে কর্তৃপক্ষ। মসজিদের আশ্রয় প্রকল্পের স্থান সীমিত হওয়ায় প্রত্যেক গৃহহীন নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পাওয়া পর্যন্ত নির্ধারিত কিছুদিন এখানে থাকতে পারবেন।

আশ্রয়হীন ব্যক্তিরা মসজিদে অবস্থান করে রাষ্ট্রীয় সমাজ ও পরিবার উন্নয়ন মন্ত্রণালয় (এমএসএফ) ও অন্যান্য সামাজিক পরিষেবা প্রদানকারীদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে তারা নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণের সুযোগ পাবে।

মালয়েশিয়ানভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ওয়ার্ল্ড অব বাজ’-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনের কাছে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সুলতান মসজিদের সমাজ উন্নয়ন কর্মকর্তা আইজুদ্দিন জানান, ‘সম্প্রতি সিঙ্গপুরে মানুষের গৃহহীন হওয়ার বিষয়টি নতুনভাবে দেখা দিয়েছে। গৃহহীনদের নিরাপদ আশ্রয় পাওয়ার আগ পর্যন্ত মসজিদের একটি নির্ধারিত স্থানে থাকার ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ। তারা গৃহহীনদের স্থায়ী বসবাসের স্থান খুঁজে দেয়ার ব্যবস্থাও অব্যাহত রাখবেন।‘