চিকিৎসার নামে প্রতারণা করছে শরীয়তপুরের রূপসী বাংলা হসপিটাল

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

নভেম্বর ১৬ ২০২০, ০৯:৩৭

ইয়ামিন কাদের নিলয়, শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি:

শরীয়তপুরে ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠেছে। আর এই ব্যবসাকে আরও জমজমাট করতে ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরণের প্রচার প্রচারণা অব্যাহত রেখেছেন। একদিকে তাদের এই প্রচার প্রচারণার কারণে জনগন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। অপরদিকে তারা প্রচার করতে গিয়ে ডাক্তারদের নামে ভুল তথ্য দিয়ে জনগনের সাথে প্রতারণা করছেন।

জনগনের সাথে এই প্রতারণার বিষয়টি নিয়ে শরীয়তপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত রূপসী বাংলা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেড়িয়ে এসেছে অন্য রকম এক অনিয়মের চিত্র। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ বলছেন, এটা অনিয়ম নয়, এটা হচ্ছে ভয়ঙ্কর রকমের অপরাধ। যা কোন ক্রমেই ক্ষমার যোগ্য নয়।

অতিসম্প্রতি রানী বেগম নামে ৪০ বছরের এক মহিলা ডাঃ সাবরিনা খানের কাছে আসেন চিকিৎসা নেয়ার জন্য। ডাঃ সাবরিনা খান ঐ মহিলাকে ব্লাড গ্রুপিংসহ অনুসাঙ্গিক কিছু টেষ্ট করতে বলেন। তখন ঐ মহিলা অর্থাৎ রানী বেগম রূপসী বাংলা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তার ব্লাড গ্রুপিংটা করান। সেখানে বিপোর্ট আসে এবি পজেটিভ। রানী বেগম তার ব্লাড গ্রুপটি আর একটু কনফার্ম হওয়ার জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের পাশে অবস্থিত ফাতেমা মেডিকেল সেন্টারে যান। সেখানে পুণরায় তার ব্লাড গ্রুপিং করান। সেখানে রিপোর্ট আসে এ পজেটিভ।
রূপসী বাংলা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রিপোর্ট এবি পজেটিভ এবং ফাতেমা মেডিকেল সেন্টারের রিপোর্ট এ পজেটিভ হওয়ায় রানী বেগন দ্বিধা দ্বন্দে পড়ে যান। তিনি সেখানে আর অপেক্ষা না করে সোজা ঢাকা ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে চলে যান। সেখানে ব্লাড গ্রুপিং করান। সেখানে রিপোর্ট আসে এ পজেটিভ।

এ ব্যাপারে রানী বেগমের সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, রূপসী বাংলা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার আমার ভুল রিপোর্ট দিয়েছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে যদি ডাক্তার আমার অপারেশন করতেন তাহলে আমি মারা যেতাম। আমি রেজিস্ট্রেশন বিহীন হাসপাতালের চটকদার প্রচারে মুগ্ধ হয়ে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমার ভুল রিপোর্ট দিয়েছে। আমার দাবী এ সকল রেজিস্ট্রেশন বিহীন নাম সর্বস্ব হাসপাতাল বন্ধ করে দেয়া হোক।

এ ব্যাপারে রূপসী বাংলা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান সেলিম ঢালীর সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, আমাদের ভুল হয়েছে। ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখলে ভাল হয়।

এ ব্যাপারে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ এ্যান্ড হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের সাবেক চিকিৎসক অধ্যাপক ডাঃ এস.এম নজরুল ইসলাম বলেন, এটা মারাত্মক ধরণের শাস্তি যোগ্য অপরাধ। এদেরকে আইনের আওতায় নেয়া উচিৎ।

এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডাঃ এস.এম আবদুল্লাহ আল মুরাদ বলেন, এটা অনিয়ম নয়, এটা হচ্ছে ভয়ঙ্কর রকমের অপরাধ। যা কোন ক্রমেই ক্ষমার যোগ্য নয়। এ সকল অপরাধের ব্যাপারে কোন ছাড় দেয়া হবে না।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, এটাও কি সম্ভব! একজন মানুষের ব্লাড গ্রুপ পরিবর্তন হয় কি করে ? অভিযোগ আসলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে