সিলেট নগরীতে ঢুকলেই ধরা পড়বে অপরাধী

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুন ২৫ ২০১৯, ১১:৫৫

সিলেট শহরকে স্মার্ট শহরে রূপান্তর করা হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)। শুক্রবার ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

প্রথমবারের মতো সিলেটে বসানো হচ্ছে ইন্টারনেট প্রটোকল (আইপি) ক্যামেরা। চার কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১১০টি আইপি ক্যামেরা কাজ বর্তমানে চলমান। অত্যাধুনিক এসব ক্যামেরার সার্ভারে জমা থাকবে অপরাধীর ছবি। নগরীর কোথাও সেই অপরাধীর ছবি ডিটেক্ট (শনাক্ত) করতে পারলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে সিগন্যাল দেবে আইপি ক্যামেরা। এক্ষেত্রে অপরাধীদের ধরা সহজ হবে পুলিশের জন্য।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) এবং সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) সমন্বিত উদ্যোগে নগরীতে আইপি ক্যামেরা বসানোর কাজ চলছে। মূলত ‘ডিজিটাল সিলেট’ প্রকল্পের আওতায় বসানো হচ্ছে এসব ক্যামেরা। এই প্রকল্পে ক্যামেরা, ফাইবার ক্যাবল, সফটওয়্যারসহ প্রয়োজনীয় সব প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে চীনা প্রতিষ্ঠান ‘হুয়াওয়ে’। সিলেটে হুয়াওয়ের পার্টনার হিসেবে কাজ করছে গ্লোবাল ট্রেড করপোরেশন।

এসএমপির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিলেট নগরীর জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, চৌহাট্টা, কোর্ট পয়েন্ট, ক্বিনব্রিজের মুখ, টিলাগড়, কদমতলি, হুমায়ুন রশীদ চত্বর, মুক্তিযোদ্ধা চত্বর, সুবিদবাজার, আম্বরখানা, নয়াসড়ক, কুমারপাড়া, শাহজালাল (রহ.) মাজার এলাকা, শাহপরান (রহ.) মাজার এলাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ সব পয়েন্টে আইপি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করতে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে সিলেট নগরীর কোতোয়ালি মডেল থানায়। ক্যামেরা বসানোর কাজ পুরো শেষ না হলেও গত বৃহস্পতিবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এই নিয়ন্ত্রণ কক্ষের উদ্বোধন করেন।

জানা গেছে, যেসব আইপি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে, এগুলোর একটি শক্তিশালী সার্ভার রয়েছে। এই সার্ভারে এসএমপির তালিকাভুক্ত অপরাধীদের ছবি ও তথ্য থাকবে। নগরীর কোথাও আইপি ক্যামেরায় ওই অপরাধীদের কারও চলাফেলা ধরা পড়লে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে সিগন্যাল বেজে ওঠবে। তখন পুলিশ ওই অপরাধীকে গ্রেফতারে পদক্ষেপ নিতে পারবে। এক্ষেত্রে আইপি ক্যামেরা ‘ফেস রিকগনিশন’ ফিচার ব্যবহার করবে। এছাড়া পুলিশ যে কোনো অপরাধীর ছবি দিয়ে আইপি ক্যামেরার সার্ভারে অনুসন্ধান (সার্চ) করতে পারবে। ওই অপরাধী যদি আইপি ক্যামেরার আওতাভুক্ত কোনো এলাকায় চলাফেরা করে থাকেন, তবে সার্ভার তা শনাক্ত করে জানিয়ে দেবে।

আইপি ক্যামেরার ‘অটো নাম্বার প্লেট রিকগনিশন’ ফিচারের মাধ্যমে যে কোনো যানবাহনের গতিবিধিও পর্যবেক্ষণ করতে পারবে পুলিশ। এক্ষেত্রে অপরাধে জড়িত কোনো যানবাহনের নাম্বার দিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে নগরীতে সেটির অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব হবে। এ প্রসঙ্গে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জেদান আল মুসা বলেন, সিলেটে এই প্রথমবারের মতো আইপি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। আইপি ক্যামেরা দিনরাত সবসময় কাজ করতে সক্ষম। অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, অপরাধীদের আনাগোনা চিহ্নিতকরণ এবং যানজট নিয়ন্ত্রণে এসব ক্যামেরা সাহায্য করবে। ১১০টি আইপি ক্যামেরার মাধ্যমে প্রায় পুরো নগরীই পর্যবেক্ষণে আনা সম্ভব। হুয়াওয়ের পার্টনার গ্লোবাল ট্রেড করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মছনুল করিম চৌধুরী বলেন, আইপি ক্যামেরা বসাতে ফাইবার ক্যাবল স্থাপনের কাজ শেষ। এখন চলছে ক্যামেরা বসানোর কাজ। ফাইবার ক্যাবলের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে আইপি ক্যামেরাগুলো পর্যবেক্ষণ করা হবে।