সিলেট জেলা বিএনপি’র আহবায়ক অপসারণের দাবী ১০ উপজেলা ও পৌর বিএনপি নেতৃবৃন্দের

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

মার্চ ০৪ ২০২০, ০০:৫৫

একুশে জার্নালে ডেস্ক: দলের মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন, সাংগঠনিক গতিশীলতা ও অর্থবহ কাউন্সিল করার জন্য দেশনায়ক তারেক রহমানের হস্তক্ষেপ কামনা এবং
অদক্ষ ও অযোগ্য, গ্রুপিংয়ে সংশ্লিষ্ট সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের অপসারণের দাবী জানিয়েছেন সিলেটের সকল উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতৃবৃন্দ।

মঙ্গলবার (৩ মার্চ) সিলেটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এ দাবি তুলেন। উপজেলা ও পৌর বিএনপি নেতৃবৃন্দের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির সভাপতি নজমূল হোসেন পুতুল।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি উল্লেখ করেন, দেশ ও জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে যখন দেশনেত্রী বাংলাদেশের ৩ বারের প্রধানমন্ত্রী দেশের জনগণের ভালবাসায় সিক্ত দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার প্রতিহিংসার শিকার হয়ে কারাগারে দিনযাপন করছেন, ঠিক তখন জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের উচিত ছিল- সকল গ্রুপিং ও মতের উর্ধ্বে উঠে শক্তিশালী একটি সংগঠন গড়ে তুলে আগামী দিনে নেত্রীর মুক্তির আন্দোলন ত্বরান্বিত করা। কিন্তু বর্তমান সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার আহবায়ক হিসেবে মনোনীত হওয়ার পর থেকে তার কার্যকলাপ সংগঠনের তৃণমূল পর্যায়ে বিভিন্ন ধরণের বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। তিনি আহবায়ক হওয়ার পরপরই প্রথম সভায়ই বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে সিলেট এনে উপজেলা নির্ধারনকল্পে গোপন ভোটাভুটির পরিবর্তে প্রকাশ্যে ভোটাভুটির ব্যবস্থা করায় গ্রুপিং তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত পৌছে দিয়েছেন। তারপর তিনি ব্যর্থ হয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে উপজেলা ও পৌর আহবায়ক নির্ধারণ করেন। কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত তখন তিনি মেনে নিতে বাধ্য হন।

সংবাদ সম্মেলনে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সিলেটে যখন জেলা বিএনপির আহবায়কের সাথে সাংগঠনিক কাজে দেখা করতে আসতেন উপজেলা নেতারা তখনই জেলা আহবায়ক হয় জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদের অফিসে বসে সাংগঠনিক কাজকর্ম সম্পাদন করছেন। সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি বেশীর ভাগ সদস্যই আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা আহবায়ক এইসব গ্র“পিং কার্যক্রম পর্যবেক্ষন করে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে অবহিত করলে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে এবং কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের চাপের মুখে তিনি শিবগঞ্জে একটি অফিস করলেও মাত্র ৩-৪টি সভা ছাড়া আর কখনও অফিসে বসেন নাই।

সিলেট জেলা বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের ধারণা, জেলা আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, সাবেক সাধারণ সম্পাদকের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। যাতে করে তারা আগামী কাউন্সিলে দলের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়েও তাদেরকে নেতৃত্বে পূর্ণবহাল করতে পারেন।

তিনি আরো বলেন, উপজেলা ও পৌর আহবায়ক নির্ধারণের পর সিদ্ধান্ত হয় যে, পরবর্তী ২১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটি গঠিত হওয়ার সময় প্রতিটি উপজেলা ও পৌর আহবায়ক এবং স্ব স্ব ইউনিটের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং স্ব স্ব উপজেলার জেলা সদস্যদের সমন্বয়ে একটি খসড়া কমিটি গঠন করা হবে। পরে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির পূর্ণাঙ্গ সভায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে ঐ খসড়া কমিটি পর্যালোচনা করে যদি কোন সংশোধন-সংযোজন প্রয়োজন হয় তা গ্রহণ করে সেটা সর্বসম্মতিভাবে অনুমোদিত হবে। সেই মোতাবেক তিনি বিভিন্ন ইউনিটের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে ডেকে এনে তাদের কাছ থেকে কমিটি রেখে দিয়ে পরে তিনি পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে জেলা বিএনপির সভায় তা উপস্থাপন করবেন বলে তাদেরকে বিদায় করে দেন। তারপর প্রায় মাসখানেক তিনি উপজেলা নেতৃবৃন্দের সাথে কোন যোগাযোগ করেন নাই এবং জেলা বিএনপির আহŸায়ক কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে শীঘ্রই জেলা বিএনপির সভায় কমিটি উপস্থাপন করা হবে বলে আশ্বস্থ করে সময়ক্ষেপন করতে থাকেন। আর এসবের অগোচরে তিনি জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি-সাবেক সাধারণ সম্পাদককের মাধ্যমে তাদের গ্র“পের লোক দিয়ে গোপনে ২০ সদস্যের মধ্যে ১৭-১৮জন সদস্য অর্ন্তভুক্ত করে কমিটি ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, দলের অনেক ত্যাগী ও পরিক্ষিত নেতৃবৃন্দের বাদ দিয়ে তাদের অনুগত কমিটি গঠন করা হয়। যাদের অনেকে এখনও ছাত্রদল-যুবদলের সাথে যুক্ত, যাদের আন্দোলন সংগ্রামে কোন ভূমিকা নেই, এমনকি অনেকে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে ফুল দিয়ে তাদের সভা সমাবেশে যোগদান করেছেন, এমনকি শিবির থেকে আগত কিছু কর্মীকেও এইসব কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। এভাবে নিজের ইচ্ছে মতো কমিটি বানিয়ে গত ২৯ ফেব্র“য়ারি হঠাৎ করে কাউকে না জানিয়ে জেলা আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার উপজেলা ও পৌর আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করেন। জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের লোকদের দিয়ে কট্টর গ্র“পিংয়ের মাধ্যমে কমিটি ঘোষণা করার একমাত্র কারণ হলো- প্রতিটি উপজেলায় তাদের মনোনীত সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলে আগামী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ পূণরায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হতে পারেন।

তিনি আরো বলেন, কমিটি গঠনের পরপরই গত ১ মার্চ উপজেলা ও পৌর আহবায়ক কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন জেলা বিএনপির ৯ সদস্য।

তিনি অদক্ষ ও অযোগ্য, নগ্ন গ্র“পিংয়ে সংশ্লিষ্ট সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের অপসারণের মাধ্যমে দলের মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে দেশনেত্রীর মুক্তি আন্দোলন এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য সাংগঠনিক গতিশীলতা ও অর্থবহ কাউন্সিল গঠন করার জন্য দেশনায়ক তারেক রহমান, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং কেন্দ্রীয় বিএনপির সিলেট বিভাগীয় টিমের নেতৃবৃন্দের কাছে উদাত্ত আহবান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জকিগঞ্জ পৌর বিএনপির আহবায়ক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ, জকিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুশ শহীদ মাসুক, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট কাওছার রশীদ বাহার, বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম. মুজিবুর রহমান, বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিক আহমদ, গোয়াইনঘাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি ওসমান গণি, গোলাপগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি মশিকুর রহমান মহি, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, জকিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক এডভোকেট মোস্তাক আহমদ, নজমূল আহমদ চেয়ারম্যান, কানাইঘাট পৌর বিএনপির আহবায়ক আবিদুর রহমান কাউন্সিলর, কানাইঘাট পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল হক কাউন্সিলর, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান ডিপজল, কানাইঘাট উপজেলার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাজী জসিম উদ্দিন, বালাগঞ্জ উপজেলার দেওয়ানবাজার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নাজমূল আলম, বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি আব্দুল কুদ্দুছ, বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি মকবুল মিয়া মেম্বার, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, নাজমূল আলম নজম চেয়ারম্যান, মকবুল হোসেন, মো. আব্দুল বারী, তোফায়েল আহমদ সুহেল, এম. আজাদ পনির, মির্জা আব্দুল বাসিত, শেখ জামাল আহমদ মাসুক মেম্বার, জকিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক তোফায়েল আহমদ চৌধুরী, গোয়াইনঘাট ডৌবাড়ি চেয়ারম্যান আরিফ ইকবাল নেহাল, বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এম. সাইফুর রহমান, মো. সারওয়ার হোসেন, সহ-সভাপতি মো সাইফ উদ্দিন, আলী হাসান, সহ সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান, সহ সাধারণ সম্পাদক খসরুজ্জামান, প্রচার সম্পাদক কামাল হোসেন, গোলাপগঞ্জ পৌর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দুলাল আহমদ, প্রচার সম্পাদক জামান আহমদ, জকিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান আহমদ, গোলাপগঞ্জ পৌর প্রচার সম্পাদক জামাল আহমদ, মোজাব্বির হোসেন, সাহেদ আহমদ, ছানোয়ার হোসেন ইমানী, রাজু আহমদ চৌধুরী, হেলাল আহমদ, জামাল আহমদ খলকু, হিফজুর রহমান, হাজী মো. আব্দুল বারী, আজম আলী, হেলাল আহমদ লাল, আব্দুশ শহীদ চুনু, আব্দুল আহাদ, সামসুর ইসলাম, হাজী রফিক মিয়া, হারুন মিয়া, মির্জা বাছিত, বাবলু মিয়া, মামুনুর রশিদ সোহেল, আলেকুজ্জামান আলেক, আলী হাসান, সামসুল ইসলাম লেইছ, আব্দুল মতিন, হিফজুর রহমান, গোলাম কিবরিয়া, এম. লিয়াকত আলী, কাওছার রশিদ বাহার, হেলাল আহমদ, সুরুজ আলী মেম্বার, বাবরু মিয়া, হাজী মো. রফিক মিয়া, মো. হারুন মিয়া মেম্বার, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।