সর্বশেষ গাইডলাইনের আলোকে কোভিড চিকিৎসা সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জুন ২৭ ২০২০, ২২:৫৬

ডাঃ সৈয়দ আরিফ


সাইন সিম্পটম কে টেষ্টের চেয়ে বেশী গুরুত্ব দিন, dry cough, saturation কমে যাওয়া বা শ্বাসকষ্ট থাকলে টেস্টের অপেক্ষা না করে ট্রিটমেন্টে চলে যান।

RT -PCR, সিম্পটম শুরুর দু তিন পর থেকে পাঁচ সাত দিন পর্যন্ত পজিটিভ হবার চান্স সবচেয়ে বেশী। এই উইন্ডো পিরিয়ডকে টেস্টের জন্যে বেছে নিন।

যাদের সিম্পটম শুরু হয়েছে বা আছে টেস্ট নেগেটিভ হলে খুশিতে আত্মহারা হবার দরকার নেই, রোগী সবচেয়ে খারাপ হয় ৭ – ১৪ দিনের মধ্যে,আমার খুব কাছের বেশ কিছু পেশেন্ট এই সময়েই খারাপ হয়েছে।

টেষ্টের এই আকালের দিনে HR CT scan of the chest (without contrast) একটি যুতসই পরীক্ষা। ওতে কিছু পাওয়া গেলে অথবা saturation ড্রপ করা শুরু করা মাত্র চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সাধারণত এক্ষেত্রে একটি ইঞ্জেকটেবল ড্রাগ নেয়া লাগতে পারে,যা ঘরে বসে ইনসুলিনের মত নাভির পাশে Sub cutaneously নিতে হয়। এক্ষেত্রে D-Dimer,Serum Ferritin, CRP সহ বেশ কিছু পরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে এবং সে অনুযায়ী ওষুধের ডোজ ও কতদিন নিতে হয় সে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়,এক্ষেত্রেও চিকিৎসক ভরসার পাত্র আপনার। আমি নিজে ৭ দিন নিয়েছি। পরে inflammatory markers দেখে বাড়ানো যেতে পারে।

যদি প্রয়োজন পড়ে। ওটা বন্ধ হবার পর কোন bleeding জনিত ঝামেলা না থাকলে একমাস ওরাল ড্রাগ চলবে,কি খাবেন,কি ডোজে কখন খাবেন সেটা চিকিৎসক বলে দেবেন।

অক্সিজেন দিতে দেরী করবেন না।কিন্তু কোথা দেবেন??বাড়িতে??হাই ফ্লো,লো ফ্লো ব্যাপারটা বুঝেন??কি ভাবছেন??গুগল করবেন??১৪ বছর মেডিকেলে পড়ে আমিই ওটা বুঝতে আমার বন্ধুদের কাছে জ্ঞান নেই।তা এতক্ষণে বুঝে গেছেন ওটা আপনার কম্মো নয়। তাই room air এ SpO2 92%কে একটি বিপদ চিহ্ন মানবেন এবং দ্রুত হাসপাতালে দৌড়াবে।স্যাচুরেশন টার্গেট হওয়া উচিত সর্বনিম্ন 95/96। Hypoxaemia পালমোনারি vesoconstriction করে, যা শেষ পর্যন্ত pulmonary thrombosis এর chance বাড়ায় এবং blood এর O2 পাবার ক্ষমতা আরো কমায়। বেশি O2 আবার বেশি free radical তৈরী করে, তাই SpO2 100% টার্গেট করার দরকার নাই।

স্টেরয়েড এখানে primarily bronchodilator হিসাবে নয় বরং হাইপার ইমিউন রেসপন্স কমানো ও lungs এর inflammation কমানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা।কি নেবেন সেটা চিকিৎসক নির্ধারণ করে দেবেন।স্টেরয়েডের ডোজের রকমফের আছে এবং চিকিৎসক এর পরামর্শ গ্রহন ব্যাতীত তা নিলে অন্য শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হবার সম্ভাবনা থাকে। ভাইরাল লোড কমার পর (৭/১০দিনে)স্টেরয়েড দেয়া সম্ভব হলে সেটা উত্তম, না দিয়ে পারা গেলে আরো ভালো।

প্লাজমা আর এন্টিভাইরাল সুপার স্পেশালিষ্টদের ড্রাগ। তাঁরাই দিবেন।

Prone position আর স্টিম ইনহ্যালাশান চমৎকার কাজ করে। সাথে অন্যান্য ব্রেদিং এক্সারসাইজ।যেমন বেলুন বা পলিথিন ফুলানো-সম্ভব হলে ১ মিনিট করে দিনে ৫-৬ বার।এটা ফুসফুসের ক্যাপাসিটি কিছুটা হলেও বাড়াবে।

সব সময় secondary bacterial infection মাথায় রাখবেন। procalcitonin, culture আর CBC দিয়ে খুঁজেন।

জ্বর সারতে ১৭/১৮ দিন আর কাশি, দুর্বলতা ১ মাস ভোগাতে পারে। জর থাকলে ডেঙ্গুর মৌসুম মাথায় রেখে প্লেটলেট কাউন্ট আর Dengue NS1 টেস্টটি করে নেবেন।

আল্লাহকে সব সময় সাথে রাখবেন।আল্লাহ ই মূল ভরসা।


লেখন: ডাঃ সৈয়দ আরিফ
অনুলিখন: ডাঃ মারজুক আর আরিফ