শীতের তীব্রতায় বিপাকে কুড়িগ্রামের দরিদ্র মানুষজন

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জানুয়ারি ১১ ২০২১, ১২:৫২

রোকন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: হিমালয়ের নিকটবর্ত্তী উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে বাড়ছে শীতের তীব্রতা । এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শীত, ঠান্ডা হিমেল হাওয়া  আর কুয়াশায় মানুষজন দুর্ভোগে পড়েছে।  বিপাকে পড়েছেন দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষজন।

আজ সোমবার (১১ জানুয়ারি) রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা সুবল চন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, কয়েকদিন থেকে তাপমাত্রা বেড়ে ১৩.৭° সেলসিয়াসে উঠলেও আজ কিছুটা কমেছে। আজ সকাল ৬টায় কুড়িগ্রামে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩.৩° সেলসিয়াস।

কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল থেকে সূর্যের দেখা মিলছে না।সেই সাথে বইছে ঠান্ডা হিমেল হাওয়া। এই ঠান্ডা বাতাসে বিপাকে পড়েছে চরাঞ্চলবাসীসহ খেটে খাওয়া মানুষজন।অর্থাভাবে শীতবস্ত্র সংগ্রহ করতে না পেরে শিশু, নারী ও বয়স্ক মানুষরা চরম কষ্টে পড়েছেন।

সবমিলিয়ে জেলায় মোটামুটি চার শতাধিক চর আছে। এতে বসবাসকারী হতদরিদ্র পরিবারগুলো শীতে কষ্ট পাচ্ছে । নদ-নদী এলাকায় তাদের বসত হওয়ায় শীতে তীব্রতার অনুভূতি অনেকটা বেশি। শীতের কারণে বয়স্ক ও শিশুদের কষ্ট বেড়েছে।চরগুলোর ধু-ধু বালুচর, চারপাশে গাছগাছালিও নেই। নদী ভাঙনের কারণে ভাঙা ঘরবাড়িতে হু হু করে হিমেল বাতাস ঢোকে। কোনো রকমে কাঁথা-কাপড় মুড়িয়ে শীত পার করতে হচ্ছে তাদের । নারী, শিশু এবং বৃদ্ধরা একটু উষ্ণতা পেতে রোদের খোঁজে বের হন। রোদের দেখা না পেলে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করেন। শীত জনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা।

জেলার উলিপুর উপজেলার তিস্তা নদী তীরবর্তী মানুষজনদের শীতের কষ্ট নিয়ে ধারণা দিচ্ছিলেন উপজেলার তিস্তা টি-বাঁধ এলাকার স্হানীয় বাসিন্দা গুনাইগাছ সমাজকল্যাণ পরিষদের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মুহাম্মদ লিটন । তিনি জানালেন,”আমাদের বসবাস তিস্তা নদী তীরবর্ত্তী এলাকায়।প্রতিদিনের ন্যায় এই এলাকায় বিকেলের পর থেকেই শীতের তীব্রতা বাড়তে থাকে। ঘন কুয়াশায় ঢাকা পরে চারদিক। ঝিরঝির করে কুয়াশার ফোটা পড়ে। ভোরে পর বেলা বাড়ার সাথে সাথে তা কমছে।আর নদী তীরবর্ত্তী এই এলাকায় হিমেল হাওয়া বয়ে যায়। এই শীতের তীব্রতায় লোকজন বিপাকে পরেছে।সূর্যের মুখ দেখা গেলেও তাপের তীব্রতা তেমন নেই। যার ফলে শ্রমজীবী মানুষেরা কাজ করতে পারছে না। দিন আনে দিন খায় এমন মানুষ গুলোই বিপর্যস্ত হয়ে পরেছেন।এসব মানুষ দরিদ্র হওয়ায় শীতের পোশাক কেনার সামর্থ্য তাদের অনেকেরই নেই।”

গেলো বছর কুড়িগ্রাম জেলা দেড় মাস স্থায়ী ৫ দফা বন্যায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।কৃষকদের ব্যাপক ফসলহানি হয়েছে। নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তিস্তা,ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র তীরবর্ত্তী মানুষজন।

যার ফলে, গত কয়েকদিন ধরে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত।

সরকারি, বেসরকারি এবং ব্যক্তিগতভাবে চরাঞ্চলের শীতার্ত মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।যদিও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্র পর্যাপ্ত পরিমাণে বিতরণের দাবি শীতার্তদের।