শবে বরাতের ফজিলত সংক্রান্ত সহিহ হাদিস

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

এপ্রিল ০৯ ২০২০, ১৪:২৮

আমিন মুনশি : বছরের কোনো কোনো মাস, দিন ও রাত্রিকে বিভিন্ন ইবাদতের জন্য আল্লাহ তায়ালা বিশেষভাবে বরকতময় ও বৈশিষ্টমণ্ডিত করে দিয়েছেন৷ বরকতময় এ সময়গুলোতে সামান্য মেহনত ও প্রচেষ্টার ফলে বিশাল প্রতিদানের অধিকারী হওয়া যায়, যা অন্য সময় অধিক মেহনত করেও অর্জন করা সম্ভব নয়৷ সেই সময়গুলোর মধ্যে ‘শবে বরাত’ অন্যতম৷

কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, বর্তমানে মহান এ রাতটি বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির শিকার৷ কিছু মানুষ এ রাতটির ফজিলতকে অস্বীকার করে বলছে ‘শবে-বরাতের ফজিলত কোনো নির্ভরযোগ্য হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়৷’ অপর দিকে কিছু লোক এ রাত উদযাপনে এমন কিছু মনগড়া পদ্ধতি ও কর্মসূচি পালন করছে যা শরিয়তসম্মত নয়৷

শবে-বরাত দু’টি শব্দের সমষ্টি৷ ‘শব’ শব্দটি ফার্সী, অর্থ- রাত, রজনী৷ ‘বরাত’ শব্দটিকে যদি ফার্সী ধরা হয় অর্থ হবে- সৌভাগ্য৷ শব্দ দু’টির একত্র অর্থ হবে- সৌভাগ্যের রাত বা ভাগ্য রজনী৷ আর যদি ‘বরাত’ শব্দটি আরবী ‘বারাআত’ শব্দের অপভ্রংশ ধরা হয়, তাহলে অর্থ হবে- পরিত্রাণ বা মুক্তি৷ অতএব শব্দ দু’টিকে আরবিতে অনুবাদ করা হলে অর্থ হবে- ‘লাইলাতুল বারাআহ’ যেমন ইমাম বাইহাকী (রহ.) তাঁর ‘আদ-দাওয়াতুল কাবীর’ গ্রন্থে একটি শিরোনাম দিয়েছেন এভাবে- ‘বাবুল ক্বাওলী ওয়াদ-দোয়া লাইলাতাল বারাআহ’ তবে হাদিসের ভাষায় বলা হয়েছে- ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ অর্থাৎ শাবানের মধ্যরাত্রি বা অর্ধ শাবানের রাত৷

শবে-বরাতের ফজিলত সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য হাদিস : হযরত মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালা অর্ধ শাবানের রাতে (শবে বরাতে) তাঁর সৃষ্টির প্রতি মনোযোগী হন এবং মুশরিক ও বিদ্ধেষ পোষণকারী ব্যক্তি ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন৷ (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং ৫৬৬৫, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১৩৯০, মুসান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ, হাদিস নং ৩০৪৭৯, শুয়াবুল ঈমান, হাদিস নং ৬২০৪)

হাদিসটির সনদ সম্পর্কে কিছু কথা : হাদিসের সনদ সহিহ৷ এ জন্যই ইমাম ইবনে হিব্বান হাদিসটিকে ‘কিতাবুস সহিহ’-এর মধ্যে বর্ণনা করেছেন৷ যদি শবে বরাতের ফজিলত সম্বন্ধে দ্বিতীয় কোনো হাদিস না থাকতো, তবে এই একটি হাদিসই এ রাতের ফজিলত সাব্যস্ত হওয়ার জন্য এবং এ রাতে মাগফেরাতের উপযোগী নেক আমলের গুরুত্ব প্রমাণিত হওয়ার জন্য যথেষ্ট হত৷ অথচ হাদিসের কিতাবসমূহে নির্ভরযোগ্য সনদে এ বিষয়ক আরও একাধিক হাদিস বর্ণিত হয়েছে৷

ইমাম মুনযিরী, ইবনে রযব, নুরুদ্দীন হাইসামী, কাসতালানী, যুরকানী এবং অন্যান্য হাদিস বিশারদগণ এই হাদিসকে আমলযোগ্য বলেছেন৷ (আরও দেখুন- কিতাবুস সুন্নাহ, ১/২২৪, আত তারগীব ওয়াত তারহীব, ২/২৪১, ৪/২৩৮, মাজমাউয যাওয়ায়েদ, ৮/৬৫, শরহুল মাওয়াহিবিল লাদুন্নিয়্যা, ১০/৫৬১)