রাঙামাটিতে পার্বত্য অধিকার ফোরামের সন্ত্রাস বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

মার্চ ২৭ ২০১৯, ১৫:১৫

ইমাম হোসাইন কুতুবী: রাঙামাটির বাঘাইছড়ি ও বিলাইছড়িতে জেএসএস ইউপিডিফের সন্ত্রাসী হামলায় ৮ জন নিহত ও অসংখ্য আহত হওয়ার প্রতিবাদে বুধবার (২৭শে মার্চ) সকাল ১১টায় রাঙামাটি শহরের পৌরসভা প্রাঙ্গন হতে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘুরে বনরূপায় এসে শেষ হয়। মিছিল শেষে বনরূপায় অবস্থিত রাঙামাটি কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির হল রুমে জেলা ও কলেজ কমিটির কাউন্সিল উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

পার্বত্য অধিকার ফোরামের ছাত্র সংগঠন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি মোঃ নাজিম আল হাসানের সভাপত্বিতে ও কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাকি বিল্লাহ্ এর পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য অধিকার ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মোঃ জাহিদুল ইসলাম জাহিদ।

প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য অধিকার ফোরামের উপদেষ্টা ও লংগদু উপজেলা সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী এবিএস মামুন, পার্বত্য অধিকার ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিব, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মোঃ পারভেজ আহম্মেদ, যুগ্ন সম্পাদক মোঃ রবিউল, খাগড়াছড়ি জেলা শাখা যুগ্ম সম্পাদক মোঃ ইব্রাহিম। বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবছার, কলেজ শাখার সভাপতি মোঃ মুমিনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাকি বিল্লাহ্, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ নুরুল আলম সহ প্রমুখ।

বিক্ষোভ মিছিল শেষে আলোচনা সভায় বক্তরা বলেন, গত ১৮ তারিখে রাঙ্গামাটির জেলার বাঘাইছড়িতে ৮জন কে হত্যা এবং ২০জনকে আহত করার পরদিন বিলাইছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুরেশ কান্তি তংচংগ্যাকে গুলি করে হত্যা করে পাহাড়ে সন্ত্রাসের নির্মমতার আরেকটি ইতিহাস তৈরি করেছে জেএসএস ও ইউপিডিএফ। পাহাড়ে সকল সশস্ত্র কর্মকান্ডের ও অশান্তির মূল হোতা জেএসএস ইউপিডিএফ, জেএসএস ইউপিডিএফের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও চাঁদাবাজীর কারনে আস্থা ও বিশ্বাসের সংকট পাহাড়ে দিন দিন বাড়ছে। তাই জেএসএস ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধ করে সকল সন্ত্রাসীদের দমন করতে হবে পাহাড়ে শান্তি আনতে হলে। পার্বত্য চট্টগ্রামে আজ বাঙালী উপজাতি কারোই নিরাপত্তা নেই, সন্ত্রাসীদের কাছে সকলেই অসহায় সবাই জিম্মি। আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠন জেএসএস ইউপিডিফের কারনে পাহাড়ে নিরাপত্তা সংকট দিন দিন আরো প্রকট হচ্ছে।

বর্তমানে ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা থেকে সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি বাসন্তি চাকমা গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালী এবং সেনাবাহিনী সম্পর্কে যে মিথ্যা, বানোয়াট, কাল্পনিক এবং উগ্রসাম্প্রদায়িক বক্তব্য দিয়েছে তা রাষ্ট্রদ্রোহী’র সামিল, অসাংবিধানিক। তার বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে। বাসন্তী চাকমার উগ্রসাম্প্রদায়িক বক্তব্যে পাহাড়ে উপজাতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীকে উস্কে দিয়েছে। তার দ্বায়ে সংসদ থেকে তাকে অপসারণ করা হোক।

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি ও বিলাইছড়িতে ৮ জনের হত্যাকারী ও অসংখ্য মানুষকে আহত করায় জেএসএস ইউপিডিএফের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে চূড়ান্ত শাস্তি এবং ক্ষতিগ্রস্থ সকল পরিবারকে পর্যাপ্ত পরিমানে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানান নেতৃবৃন্দগণ।

এসময় হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা, পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে সাড়াশি অভিযান শুরু করা, পত্যাহার কৃত সেনাক্যাম্প পুনঃস্থাপন করার জোর দাবী জানানো হয় ।

আলোচনা সভা শেষে সংগঠনের কার্যক্রম ব্যাপক গতিশীল করার লক্ষ্যে পার্বত্য অধিকার ফোরামের ছাত্র সংগঠন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা ও কলেজ শাখার কমিটি ঘোষনা করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি জাহিদুর রহমান।

বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি মোঃ নাজিম আল হাসান, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবছার উদ্দিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ইসমাঈলকে দিয়ে ১১সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষনা করা হয়।
রাঙামাটি সরকারী কলেজ শাখা কমিটিতে মোঃ মুমিনুল ইসলামকে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাকি বিল্লাহ্, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ নুরুল আলম সহ নিয়মিত ছাত্রদেরকে দিয়ে ৪১সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ রাঙামাটি সরকারী কলেজ শাখার কমিটি ঘোষনা করা হয়।