রাখাইনে নতুন যুদ্ধাপরাধ করছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী -অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

মে ৩১ ২০১৯, ১০:৩৪

 

আবির আবরার:মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে জাতিগত গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে নতুন করে যুদ্ধাপরাধ করছে বলে অভিযোগ করেছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

সংস্থাটির নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী বৌদ্ধ গেরিলা বাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিগত নিধন চালাচ্ছে। সন্ত্রাস দমন অভিযানের নামে সেনাবাহিনী সেখানে বিচার বহির্ভূত হত্যা, নিপীড়ন এবং গণগ্রেপ্তার করছে।

বরাবরের মত মিয়ানমার সেনাবাহিনী ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, সন্ত্রাসী নিমূর্ল করতেই অভিযান চালানো হচ্ছে। কোনো যুদ্ধাপরাধ না করার ব্যাপারে আমরা সতর্ক রয়েছি।

এর আগে ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রাখাইনের রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ করেছিল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

সেনাবাহিনীর দমনপীড়ন থেকে বাঁচতে সেবার সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

রাখাইনে বৌদ্ধ বিদ্রোহী দল আরাকান আর্মি সীমান্তে কয়েকটি পোস্টে হামলা চালানোর পর মিয়ানমার সরকার সেনাবাহিনীকে তাদের গুঁড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সে লক্ষ্যে এ বছরের শুরু থেকে সেনাবহিনী আবারও রাখাইন রাজ্যে অভিযান শুরু করে। উল্লেখ্য যে, পশ্চিমের রাখাইন রাজ্যে যেসব আদিবাসী গোষ্ঠীর বাস তাদের মধ্যে বৌদ্ধ রাখাইনরা সর্ববৃহৎ।

বুধবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “বর্ণনাতীত হামলায় অনেক বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছে।”

“রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর গণহত্যা চালানোর কারণে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠার দুই বছরেরও কম সময়ের মধ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনী আবারও রাখাইন রাজ্যের জাতিগত গোষ্ঠীগুলোর উপর ভয়ঙ্কর নিপীড়ন শুরু করেছে।”

নির্যাতিত লোকজনদের সঙ্গে কথা বলে এবং সেনা অভিযানের ছবি ও ভিডিও এবং ভূউপগ্রহ থেকে পাওয়া ছবি বিশ্লেষণ করে অ্যামনেস্টি এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। প্রতিবেদনে সাতটি বেআইনি হামলার তথ্য দেওয়া হয়েছে বলে জানায় বিবিসি।

ওই হামলাগুলোতে অন্তত ১৪ বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ২৯ জনের বেশি আহত হয়েছেন। সেখানে নিপীড়ন, জোর করে ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য করা এবং গণহারে গ্রেপ্তারের বিষয়েও বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়েছে।

গত মাসে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ছয় নিরস্ত্র বন্দিকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তাদের দাবি ছিল, বন্দিরা সেনাসদস্যদের অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের হত্যা করা হয়।

রাখাইনে সর্বশেষ সংঘর্ষে ৩০ হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক গৃহহীন হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের।