রবিবার হেফাজতের কাউন্সিল: যোগ্য নেতার হাতে যাবে নেতৃত্ব, আশা তৃণমূলের

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

নভেম্বর ১১ ২০২০, ২২:৩১

হাবীব আনওয়ার: দেশের সর্ববৃহৎ অরাজনৈতিক দ্বীনি সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে আগামী রবিবার। হেফাজতের সদর দপ্তর হিসেবে পরিচিতি দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসায় হেফাজতের এ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।

১৫ নভেম্বর রবিবার সকাল ১০ টায় হাটহাজারী মাদরাসার শিক্ষা ভবনের ৩য় তলায় মিশকাত এর ক্লাস রুমে বহুল প্রত্যাশিত এই কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কাউন্সিলে সভাপতিত্ব করবেন সাবেক নায়েবে আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। সারাদেশের থেকে প্রায় সাড়ে ৩’শ কেন্দ্রীয় শীর্ষ মুরুব্বিগণ অংশ নিবেন। এবং তাঁরাই ঠিক করবেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সদ্য প্রয়াত আমির শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী’র স্থলভিষিক্ত হবেন।

ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় সম্মেলনকে ঘিরে হেফাজত নেতাদের মধ্যে তোড়জোড় শুরু হওয়ার পাশাপাশি কর্মীসমর্থকদের মাঝে বিরাজ করছে উদ্দীপনা। পাশাপাশি হতাশা ও সংশয়ও রয়েছে অনেকের মনে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছু এক হেফাজত কর্মী বলেন, আল্লামা আহমদ শফী হুজুরের পরে তাঁর মত সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে হেফাজতকে এগিয়ে নেওয়া অনেকটা অসম্ভব হবে।

তবে এমন সন্দেহ উড়িয়ে দিয়ে হেফাজতে ইসলাম হাটহাজারী উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জী বলেন, রবিবারের কাউন্সিলের পরে হেফাজত আবার নবোদ্যম যাত্রা শুরু করবে। নাস্তিক-মুরতাদ ও ইসলাম বিদ্বেষীদের আতংক হয়ে হেফাজত আবার সামনে আসবে। হেফাজতের আমির কে হচ্ছেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে মাওলানা ফয়জী বলেন, হেফাজতের আমির কে হচ্ছেন, এটা কাউন্সিল ঠিক করবেন। এখানে কারো চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। কাউন্সিল যাকে যোগ্য মনে করবেন, তিনিই আমির হবেন। এবং আমরা তাকে মেনে কাজ করবো।

হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা আমির ও দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার সাবেক মহাপরিচালক শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফি চলতি বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তারপর থেকে হেফাজতের আমিরের পদটি শূণ্য রয়েছে। মূলত এরপর থেকেই হেফাজত প্রতিষ্ঠার ১০ বছরের মাথায় এসে নতুন আমির নির্বাচন করতে হচ্ছে।

কাউন্সিল থেকে আমির নির্বাচন হলেও, ইতোমধ্যে বর্তমান মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী আমির ও ঢাকা মহানগর হেফাজত নেতা আল্লামা নূর হুসাইন কাসেমী মহাসচিব হচ্ছেন বলেও গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তবে এই তালিকায় আল্লামা শেখ আহমদ, নানুপুরের পীর আল্লামা সালাউদ্দিন নানুপুরী, আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী’র নাম সামনে আসছে। নায়েবে আমির হিসেবে চরমোনাই পীর সৈয়দ মুফতী রেজাউল করিম ও সৈয়দ মুফতী ফয়জুল করীমের নামও শোনা যাচ্ছে। তবে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান করে কে হচ্ছে হেফাজতের আমির-মহাসচিব জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী রবিবার পর্যন্ত।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ১৯ জানুয়ারি গঠিত হয়েছিল চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক কওমি আক্বীদাপন্থি অরাজনৈতিক ইসলামী সংগঠন হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ। ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষানীতির বিরোধিতার মধ্য দিয়ে হেফাজতের আত্মপ্রকাশ হলেও সংগঠনটি দেশজুড়ে আলোচনায় আসে ২০১৩ সালে ১৩ দফা দাবিতে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসে ২০১৪ সালে ৫ মে শাপলা চত্বর অবরোধের মাধ্যমে। হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার প্রয়াত প্রধান পরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফিকে আমির ও মাদ্রাসার তৎকালীন সিনিয়র মুহাদ্দিস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে মহাসচিব করে হেফাজতের ২২৯ সদস্যের মজলিশে শুরা কমিটি গঠন করা হয়েছিল।