যে মুফতি সাহেব মসজিদে দিয়ে গেলেন প্রায় পৌনে এক কোটি টাকা!

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জুন ০৬ ২০২০, ২৩:৫১

মুজিবুর রহমান রনি: ভাবুন তো, একজন মানুষ ৪১ বছর ইমামতির দায়িত্ব পালন করেছেন অথচ বিনিময়ে একটা টাকাও নেন নি। এই সময়ে এসে এটা কিভাবে সম্ভব? হ্যাঁ এটাকেই সম্ভব করেছিলেন মুফতি আবু ইউসুফ (রহঃ)।

আসলে এই বিষয়টা আমিও জানতাম না, গতকাল মসজিদ সেক্রেটারীর কাছে শুনে পুরো বিস্মিত হলাম।

এমন একজন ইমাম রাখতে মাসে কমপক্ষে ১৫ হাজার টাকা করে লাগতো, যেহেতু মুয়াজ্জিনের বেতন ১০ হাজার টাকা।
সে হিসেবে এতো বছরে হুজুরের কাছে আমরা ঋণী ৭৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। অবাক হলেন? হওয়াই কথা।

হুজুর অসুস্থ হওয়ার আগের জুম’য়ায় হুজুরকে হাদিয়া দেওয়ার কথা উঠেছিল, হুজুর সরাসরি বলে দেন যে, মসজিদ উন্নয়নের জন্য গ্রামবাসী যে টাকা দেয় সেই টাকা থেকে আমি একটি টাকাও নিতে পারবো না।

এটা আমার মায়ের আদেশ, এটা বলেই হুজুর কেঁদে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, যদি আপনারা গ্রামবাসীরা নিজে থেকে আমাকে কিছু দিতে চান,তাহলে নিজেরাই হাদিয়া স্বরূপ কিছু টাকা উঠিয়ে দিলে এটা আমার দ্বারা নেয়া সম্ভব। অন্যথায় নয়।

হয়তো গ্রামবাসীরা হুজুরকে সম্মানিত করতে এ কাজটাই করতেন। কিন্তু উনাকে একটিও টাকা হাদিয়া দেয়ার আগেই উনি আমাদের ছেড়ে মহান রবের ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেলেন। সৃষ্টি করে গেলেন নতুন একটা আত্মত্যাগী ইতিহাস। জিতে গেলেন শ্রদ্ধেয় হুজুর। হেরে গেলাম আমরা।

তিনি ইমামতি করতেন ভারেল্লা গ্রান্ড মসজিদ, বুড়িচং, কুমিল্লায়। ভারেল্লা শাহ ইসরাইল কামিল মাদ্রাসার (বুড়িচং, কুমিল্লা) আরবি প্রভাষক ছিলেন। এছাড়াও প্রতি বছরে অন্তত ৪০-৫০ টি, ওয়াজ মাহফিলে বয়ান করতেন।

গত ২ জুন মাওলার ডাকে সাড়া দিয়ে পরপারে পাড়ি জমান তিনি। আল্লাহ তাঁর কবরকে জান্নাতের বাগান বানিয়ে দিন। আমীন।