মানববন্ধন প্রত্যাহার করুন, ১লা ডিসেম্বর আর দেখতে চাই না

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুলাই ১৬ ২০২০, ২২:০৬

সৈয়দ শামছুল হুদা>

কওমি মাদ্রাসার অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে রাজপথে নামার পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। যে বা যারা আগামীকালের মানববন্ধনের ডাক দিয়েছেন তাদের প্রতি করজোড়ে মিনতি জানাচ্ছি, রাতের মধ্যেই ঘোষণা দিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি প্রত্যাহার করুন। এর সাথে কারা আছেন আমি জানি না, যে বা যারাই থাকুন এটাকে কেন্দ্র করে মাঠে এক ধরনের অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা হবে। যারা ফেসবুকে মানববন্ধনের ডাক দিয়েছেন তাদের অনেকেই হয়তো সামনে আসবেন না। কিন্তু আপনাদের কথায় যারা সাড়া দিবে তারা মাঝখানে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

কওমিদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নিতে চেষ্টা করবে। আপনারা যদি এখনই মাঠে নামেন এটাকে কেউ কেউ লুফে নিবে। দাবি আদায়তো হবেই না বরং বিশৃঙ্খলা হবে, আমরা এই বিশৃঙ্খলা দেখতে চাই না। বুদ্ধিবৃত্তিক পদ্ধতিতে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে থাকুন। লেখালেখি চলতে থাকুক। আলোচনা হতে থাকুক। কিন্তু এখনোই মাঠে নয়। আর যদি এখনই মাঠে নামেন তাহলে যা হবে, আমরা যেটা দেখেছি টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে, নিরীহ আলেমদের ওপরে একটি পক্ষ যেভাবে হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, এমনিভাবে কওমীদের মধ্যে স্থায়ী বিভাজন সৃষ্টি করতে দুটি পক্ষকেই পিছন থেকে সহযোগিতা করা হবে এবং এক পক্ষ আরেক পক্ষের উপর হায়েনার মত হামলে পড়ে সংবাদ শিরোনাম করা হবে।

মানববন্ধন এর পক্ষে যারা আছেন তাদের প্রতি আমি বিশেষভাবে অনুরোধ করব, আপনারা এ পথ থেকে ফিরে আসুন এবং প্রত্যেক জেলায় জেলায় যে সকল বড় কওমী মাদ্রাসা আছে সেখানে দায়িত্বশীলদের সাথে ছোট ছোট গ্রুপ করে এসব বিষয়ে দাবি-দাওয়া পেশ করুন, সারাদেশের যারা বোর্ড সদস্য রয়েছে তাদের কাছে দাবি-দাওয়া পেশ করুন, সংঘাতের সকল প্রকার পথ থেকে দূরে থাকুন।

আপনারা যদি এখনই এই ঘোষণা না দেন, তাহলে আপনাদের পক্ষ হয়ে কিছু মানুষ রাস্তায় নামবে এবং এটাকে কেন্দ্র করে সারা দেশের কওমী আলেমদের মধ্যে স্থায়ী বিভাজন তৈরি করে দেবে। যা আমাদের মোটেও উদ্দেশ্য নয়। আমাদের আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডকে সকল প্রকার অন্যায়, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি ও অদক্ষতার হাত থেকে মুক্ত করা। এর জন্য ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যেতে হবে, দাবি-দাওয়া পেশ করতে হবে, লেখালেখি করতে হবে, আলোচনা করতে হবে। কিন্তু মাঠে ময়দানে বিক্ষোভ মানববন্ধন করা ঠিক হবে না।

বাংলাদেশের কওমি অঙ্গনে এখনো অসংখ্য ভালো মানুষ হয়েছে, আমরা ঢালাওভাবে বড়দের সমালোচনা না করি, একটি শান্ত পরিবেশকে উত্তপ্ত না করি। এখনই এই আন্দোলনকে মাঠে গড়ানোর উদ্দেশ্যই হবে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ হারানো, কওমী জগৎটাকে অন্যের হাতে তুলে দেওয়া। আমরা সকলেই সতর্ক থাকি। সাবধান থাকি। আগামীকাল কেউ এ বিষয়ে মাঠে নামার চেষ্টা না করি। কেউ যদি এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করে তাদেরকে এড়িয়ে চলি।

বাংলাদেশ ইন্টেলেকচুয়াল মুভমেন্ট (বিআইএম) এর পক্ষ থেকে তরুণ আলেমদেরকে সতর্ক থাকার এবং বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। সকল প্রকার সংঘাত, নিয়ন্ত্রনহীন আবেগ এবং উৎশৃংখলাকে এড়িয়ে চলার আহ্বান জানাচ্ছি।

জেনারেল সেক্রেটারি, বাংলাদেশ ইন্টেলেকচুয়াল মুভমেন্ট বিআইএম