মাওলানা আব্দুল বাতিন বিজুর মাধ্যমে মানসিক রুগিকে দশ বছর পর খুঁজে পেল পরিবার

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

সেপ্টেম্বর ৩০ ২০১৯, ১৪:২৮

পশ্চিম পৈলনপুর ইউপি’র ডিজিটাল উদ্যোক্তা গাজি আবদুল বাতিন বিজু’র ফেসবুক স্টেটাস

একুশে জার্নাল ডেস্ক: “বিগত ৩/৪ মাসে আগে সিলেট জেলার ওসমানীনর উপজেলার ০৩ নং পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়নের বড় হাজীপুর বাজারে ষাটোর্ধ এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির আগমন ঘটে। প্রাথমিক অবস্থায় অনেকে তাকে গোয়েন্দা সংস্থার লোক মনে করে তার কাছে ঘেষার চেষ্টা করেনি। আবার যারা তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছে, তাদেরকে সে তেমন কোন পাত্তা দেয়নি। দিন যত যেতে লাগলো, গ্রামের মানুষের মায়া তার প্রতি ততো বাড়তে শুরু করল। অনেকেই বাড়ি থেকে তার জন্য টিফিনে করে খাবার এনে খাওয়াতো, তার কাপড়-চোপড় ধুয়ে দিত। তবে কেউ টাকা দিলে তা সে গ্রহণ করতো না।

যাই হোক, গত ২৩ সেপ্টেম্বর হঠাৎ আমার মনে আসলো যে, দেখি এই লোকটির কোন আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ বের করতে পারি কিনা!
যেই ভাবা সেই কাজ। রাত ০৯:০০ ঘটিকার সময় বাজারে গিয়ে তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করলাম এবং অনেক চেষ্টার পর তার কাছ থেকে কিছু তথ্য আদায় করলাম। উল্লেখ্য যে, তার কাছ থেকে অন্যান্য ব্যক্তিরা আগ থেকেই কিছু তথ্য সংগ্রহ করে রেখেছিলেন, যা আমার তালাশের জন্য পর্যাপ্ত ছিল না, (তারপরও তারা যতটুকু তথ্য নিয়ে রেখেছিলেন, আলহামদুলিল্লাহ)।

বাড়িতে এসে ল্যাপটপ অন করে ইউনিয়ন অফিসের ওয়েব সাইটে লগইন করে লোকটির দেওয়া অগোছালো তথ্য অনুসারে এবং বাকিটুকু অনুমান করে রাজশাহী বিভাগের বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার ওয়েব সাইটে ঢুকে একে একে ১০ টি ইউনিয়নের সব তথ্য দেখে প্রথমেই ০১ নং নিমগাছী ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টার উদ্যোক্তা এ, কে, এম, মাকছুদুল হাসান ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করলাম, এবং উনাকে বিষয়টি অবগত করলাম। উনি আমাকে ০৩ নং চিকাশী ইউনিয়নের উদ্যোক্তার সাথে যোগাযোগ করতে বল্লেন। আমি ০৩ নং চিকাশী ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টার উদ্যোক্তা নূরনবী ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করলাম। উনি আমাকে এ ব্যাপারে যথেষ্ট সাহায্য করলেন। জানা গেল লোকটির নাম মিন্টু প্রামাণিক ওরফে জাহিদুল। মানসিক ভারসাম্যহীন জাহিদুল প্রায় দশ বছর আগে হারিয়ে যান। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও কোন সন্ধান না পাওয়াতে তাঁর পরিবার একরকম হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন। যাই হোক, নূরনবী ভাইয়ের ঐকান্ন্তিক প্রচেষ্টায় পরের দিন লোকটির গ্রামের বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনের সাথে যোগাযোগ করে তাদেরকে ইউনিয়ন অফিসে আনিয়ে আমার সাথে আলাপ করানো হলো। আমার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে তাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহেবের যোগাযোগ করিয়ে দিলেন। সেই রাতেই তার ছোট ভাই, জেঠাতো ভাই, দুলাভাই এবং ছেলে সিলেটের উদেশ্যে রওয়ানা দিয়ে পরদিন সকাল বেলা আমাদের গ্রামে এসে উপস্থিত হলেন।
নাস্তা পর্ব সেরে ইউনিয়ন অফিসের ফর্মালিটিজ গুলো পূরন করে জাহিদুল কে নিয়ে আবার দেশের পথে রওয়ানা হলেন।

আমি গর্বিত এবং আল্লাহ পাকের শোকর আদায় করছি এই কারণে যে, আজ আমি ইউনিয়ন অফিসের একজন উদ্যোক্তা হওয়ার সুবাদে দশ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া এক মানসিক রুগিকে তার আত্মীয়-স্বজনের হাতে তুলে দিতে পেরেছি। সেই সাথে ধন্যবাদ জানাচ্ছি বগুড়ার ধুনট উপজেলার ০১নং নিমগাছী ইউনিয়নের উদ্যোক্তা জনাব এ, কে, এম, মাকছুদুল হাসান ভাইকে। বিশেষ করে ধন্যবাদ জানাই ০৩ নং চিকাশী ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টার উদ্যোক্তা জনাব নুরনবী ভাইকে, তার সাহায্যেই আমি জাহিদুলের আত্মীয়-স্বজনের সাথে যোগাযোগ করতে পেরেছিলাম। সেই সাথে ধন্যবাদ জানাই আমার গ্রামের সেই সমস্ত ভাই ও বন্ধুদের, যারা আমাকে এ ব্যাপারে সাহায্য করেছেন।
……………………………………… ………………
গাজী মোঃ আব্দুল বাতিন
উদ্যোক্তা: ০৩ নং পশ্চিম পৈলনপুর ইউ/পি
ওসমানীনগর, সিলেট।
০১৭১৭৫৬৭১৪২”