ময়মনসিংহের ফুলপুরে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগি চিহ্নিত, এলাকা লকডাউন

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

এপ্রিল ১১ ২০২০, ০৫:০৬

ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের কাইছাপুর গ্রামে প্রথম একজন করোনা আক্রান্ত রোগী সনাক্তের ঘটনা ঘটেছে।

এই প্রথম ফুলপুরে করোনা রোগী হিসেবে চিহ্নিত হওয়া কাইচাপুর গ্রামের দিনমজুর আব্দুল কাদির (৫০) পিতা মধুর বাপ, তাকে ফুলপুর উপজেলা প্রশাসন ময়মনসিংহ জেলা সদরের এস,কে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে নিয়ে ভর্তি করিয়েছেন। সে ১২ দিন আগে নায়ায়নগন্জের ইটখলায় কর্মরত থাকা অবস্থায় অসুস্থতা অনুভব করলে বাড়িতে চলে আসে বলে জানায় এলাকাবাসী।

এলাকাবাসী সাথে কথা বলে আরো জানা যায় যে, গত কয়েকদিন যাবত দিনমজুর ঐ ব্যক্তি সর্দি, কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। শরীরে জন্ডিস হয়েছে মনে করে চিকিৎসা নিচ্ছিল।

গতকাল বৃহস্পতিবার তার সিরাম সংগ্রহ করে করোনা (কোভিড-১৯) পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরীক্ষাগারে প্রেরণ করা হয়। শুক্রবার তার করোনা (কোভিড-১৯) পরীক্ষা পজিটিভ ধরা পড়ে।

তার সিরাম সংগ্রহকারি বালিয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য সহকারী মোঃ আলমগির সহ অনেকের PPE না থাকার কারণে এখন তারাও ভয়ে আছেন। সবাই তাদেরকে এড়িয়ে চলছেন।

রূপসী ইউনিয়নের মোঃ আলমগির হোসেন যিনি ঐ এলাকার সিরাম সংগ্রহের দায়িত্ব ছিলেন বর্তমান অবস্থা জিজ্ঞেস করলে জানান, যদিও আমরা এখনো পিপিই পাইনি তারপরও মানুষের কল্যাণে দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে রিস্ক নিয়েই কাজ করে যাচ্ছিলাম। এখন নিজেই কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে বলে মনে করি।

এদিকে অসুস্থ অবস্থায় আব্দুল কাদির স্থানীয় বিলাসাটি বাজারে প্রতিদিন নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার করেছেন। এছাড়া তিনি বালিয়া, কাইছাপুরসহ আশপাশের বেশ ক’টি বাজারে গিয়েছেন।একটি সেলুনে চুল ছাঁটিয়েছেন। জন্ডিসের চিকিৎসা করাতে ফকিরের নিকট ঝাড়ফুঁক নিয়েছেন। মেডিসিন কিনতে বিভিন্ন ঔষধের দোকানে গিয়েছেন। তাই প্রশাসন বালিয়া ইউনিয়নকে লকডাউন করে দিয়েছে।

এ বিষয়ে ফুলপুর উপজেলা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ফুলপুর উপজেলাময় খবরটি ছড়িয়ে পড়ায় মানুষের মধ্যে ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।

ফুলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ইমারত হোসেন গাজী জানান, বালিয়া ইউনিয়নের কাইচাপুর গ্রামটিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ অন্যান্যরা মিলে লকডাউন করার ব্যবস্থা করেছেন।আমি নিজে পরিস্থিতির প্রতি সার্বক্ষণিক নজর রাখছি। এলাকার বাইরে থেকে আসা লোকদের হোম কোয়ারেন্টাইন মানতে সর্বদা কাজ করে যাচ্ছি।

ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলাম উপজেলার সর্বত্র সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেছেন। আর বালিয়া ইউনিয়নকে পুরোপুরি লকডাউন করে দিয়েছেন।

ফুলপুর, তারাকান্দা, কাইচাপুর বওলা সংলগ্ন এলাকায় বসবাসরত অধিবাসীদের সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে কেন্দুয়া, বালিয়া, সুতারপাড়া, হরিয়াগাই, উত্তরকান্দা এসব এলাকার মানুষজনের এখন ঘরে থাকার বিকল্প নাই বলে মনে করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ জনপ্রতিনিধিগণ।