মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে আপত্তি কেন?

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

এপ্রিল ১৩ ২০১৯, ২০:০৮

 

বর্ষবরণের একটি অনুষ্ঠান হিসেবে ইদানিং শুরু হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। এটা বর্ষরণের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অনুষ্ঠান। মঙ্গল শোভাযাত্রা প্রথম শুরু হয়েছে ১৯৮৯ সালে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে। মঙ্গল শোভাযাত্রায় থাকে বিশাল আকারের রাজ-রানীর পুতুল ও পেঁচাসহ নানা ধরনের পশু-পাখির মূর্তি। এসব মূর্তীকে সাথে নিয়ে বাদ্যের তালে তালে এগিয়ে যায় শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রায় যারা অংশগ্রহণ করে তাদের অনেকেই পরে নানা ধরণের মুখোশ।

মঙ্গল শোভাযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়াও নানা পেশার ও বয়সের লোক যোগ দিয়ে থাকেন। পয়লা বৈশাখে কেবল ঢাকায় নয়,মফস্বলের কোনো কোনো শহরেও এ শোভাযাত্রা চালু হয়েছে এবং ক্রমে তা চারদিকে বিস্তার লাভ করছে। বলা হয়, সারা বছর সবাই যাতে নিরাপদে খাকে সেটাই হচ্ছে এ শোভাযাত্রার উদ্দেশ্য, কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, নিরাপত্তা দেওয়ার মালিক কে? যদি এ শোভাযাত্রার মাধ্যমে নিরাপত্তা চাওয়া হয় তবে কার কাছে এ কামনা প্রার্থনা? মুসলমানের তো আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে এ প্রার্থনা করার অবকাশ নেই, আর যারা ধর্মে বিশ্বাস করে না বা বস্তুবাদী, নাস্তিক,তাদের তো এমন কেউ নেই যার কাছে তারা প্রার্থনা করতে পারে।

মঙ্গল শোভাযত্রা নিয়ে যারা বেশি মাতামাতি করেন তারা অসাম্প্রদায়িক হিসেবেই নিজেদের পরিচয় দেন। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, এ শোভাযাত্রার মূল অনুষঙ্গ ঢোলের বাদ্য- যা দেবী দূর্গাকে আহবান করাসহ অন্যান্য মুর্তিপুজার মূল বাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়- তা একটি বিশেষ সম্প্রদায় হিন্দুদের পুজার উপাদান।

এখানে প্রশ্ন হচ্ছে (১) মহান আল্লাহ তা’য়ালা ছাড়া কারো কাছে কল্যাণ প্রার্থনা করা, (২) হিন্দুদের দেবদেবীর পূজার অনুকরণে বাদ্য বাজানো, (৩) নানা ধরণের মূর্তি ও মুখোশ বহন করা, (৪) দলে দলে যুবক-যুবতী মিলে পথে-ঘাটে নৃত্য করা, এসব কি এ দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠির সংস্কৃতি? কিংবা এ-ই কি অর্থ অসাম্প্রদায়িকতার? এ অপসংস্কৃতি প্রতিরোধ করা কী আমাদের দায়িত্ব নয়???

কাজী শহিদুল্লাহ ওয়াহিদ
সাংবাদিক লেখক ও সাহিত্যিক।